কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অবৈধ গ্যাস সংযোগের গডফাদার

মানবজমিন প্রকাশিত: ২৬ মে ২০১৯, ০০:০০

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গ্যাসের সবচেয়ে বেশি অবৈধ সংযোগ হয়েছে সদরের সুহিলপুর ইউনিয়নে। অভিযোগ রয়েছে নিজের ইউনিয়ন হওয়ায় ইচ্ছেমতো সংযোগ দিয়েছেন ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও সদর উপজেলা যুবলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক মহসীন খন্দকার। সুহিলপুরের সবার মুখে গ্যাস সংযোগ প্রদানকারী হিসেবে রয়েছে তার নাম। এই ইউনিয়নে এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে অবৈধভাবে গ্যাস লাইন সম্প্রসারণ করে সংযোগ দেয়া হয়নি। আর ওই ইউনিয়নের সংযোগেই টাকার পাহাড় গড়েছেন মহসীন এমন কথাও রয়েছে মুখে মুখে। সুহিলপুরে হাজারের মতো অবৈধ সংযোগ রয়েছে। সুহিলপুর ছাড়াও পার্শ্ববর্তী বুধল ইউনিয়নেও অবৈধভাবে গ্যাস লাইন সম্প্রসারণ করে কয়েক শ’ সংযোগ দিয়েছেন মহসীন। সেখানে উঠোন বৈঠক করে অবৈধ সংযোগ দেয়া হয়। নাটাই উত্তর ইউনিয়নের নাটাই ও ভাটপাড়াতে কয়েক হাজার ফুট সম্প্রসারণ লাইন বসিয়ে সংযোগ দিয়েছেন মহসীন। সূত্র জানিয়েছে, অবৈধ সংযোগ প্রদানকারী অন্যরাও তাদের কাজে পার্টনার হিসেবে রাখে তাকে। থানা পুলিশসহ সবকিছু ম্যানেজ করার দায়িত্ব থাকে তার ওপর। মহসীন বাখরাবাদে কখনো ঠিকাদারি করেন নি। তার কোনো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানও নেই। তার বাড়ি লাগোয়া বাখরাবাদ অফিস। এটি তার বড় শক্তি। তার ওপর আছে সরকারি দলের অঙ্গ সংগঠনের পদ। আর এসব শক্তিতেই অবৈধ গ্যাস সংযোগে বেপরোয়া হয়ে উঠেন মহসীন। ২০১৩ সালে অন্যের লাইসেন্সে এই কারবারে নাম লেখান প্রথম। তখনই বৈধ সংযোগের নাম করে গোটা সুহিলপুরে জালের মতো অবৈধ লাইন সম্প্রসারণ করেন। অবৈধভাবে সম্প্রসারণ করা এসব লাইন থেকে শত শত গ্যাস সংযোগ দেয়া হয়। আর এই কাজে মামুন এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের প্যাড ব্যবহার করেন মহসীন। কর্মকর্তাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে অবৈধ গ্যাস গ্রাহকদের জন্য বিল বইও ভাগিয়ে নেয় সিরিয়াল ভঙ্গ করে। ৩ বছর আগে গ্যাসের সংযোগ বন্ধ হলেও বসে নেই মহসীন। নিয়মিত অবৈধ গ্যাস সংযোগ দিয়ে যাচ্ছেন এখনো। রমজানের আগের দিন থেকে বুধল ইউনিয়নের খাটিহাতায় অবৈধ গ্যাস সংযোগ দেয়া শুরু করেন। মহসীন ছাড়াও বাখরাবাদ কর্তৃপক্ষ অবৈধ গ্যাস সংযোগের হোতা হিসেবে চিহ্নিত করেছে বাশার আলী তালুকদার, তার মেয়ের জামাই জাকির ও ছেলে ফয়সল, শামীম, মঞ্জু, হাসান, এমরান আলমগীরসহ আরো কয়েকজনকে। জানা গেছে, ২০১৬ সালে সংযোগ বন্ধ হওয়ার আগে ও পরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস লাইন সম্প্রসারণ করা হয় অবৈধভাবে। তখনই গ্রামে গ্রামে গড়ে উঠে অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগের সিন্ডিকেট। শহরতলির রাজঘর, আমতলী ও ভাটপাড়া গ্রামে জামাল মেম্বার, নওয়াব, নাজমুল ও জয়নাল গ্যাস সংযোগ প্রদানে জড়িত বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। বুধল ইউনিয়নের মালিহাতা, কলামুড়ি, জড়জরিয়া, ছাতিয়াইন, বুধল ও জঙ্গলীসার গ্রামে লাইন বসিয়ে সংযোগ দিয়েছেন বাশার, তার মেয়ের জামাই জাকির ও ছেলে ফয়সাল। রামরাইল থেকে শ্রীরামপুর পর্যন্ত ২ কিলোমিটার সম্প্রসারণ লাইন বসানো হয় সম্প্রতি। এর সঙ্গে বাশার ছাড়াও আবদুস সাত্তার ও আবদুর রহিম নামে আরো দুজনের জড়িত থাকার তথ্য পেয়েছে বাখরাবাদের কর্মকর্তারা। রামরাইল ইউনিয়নের ভোলাচং এলাকায় অবৈধ সংযোগকারী হিসেবে সেলিম মাস্টারের নাম রয়েছে আলোচনায়। উলচাপাড়া, বিজেশ্বর, নাসিরপুর ও বিয়ালিশ্বরে অবৈধ সংযোগের হোতা রয়েছে আরো কয়েকজন। ৬০/৭০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা পর্যন্ত নেয়া হয় একেকটি সংযোগের জন্য। অবৈধ সংযোগে কোটি কোটি টাকা বাণিজ্য হয় তাদের। বাখরাবাদে এ পর্যন্ত ৫৪ হাজার ফুট অবৈধ গ্যাস লাইন চিহ্নিত করা হয়েছে। ৫ হাজারের মতো অবৈধ সংযোগ থাকার কথা বলছে তারা। যদিও বাস্তবে সেটি অনেক বেশি। কিন্তু এসবে জড়িতদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না বাখরাবাদ। অবৈধ সংযোগের সিন্ডিকেট কোম্পানির বিকল্প শক্তিতে পরিণত হয়েছে বলেও কোম্পানির কর্মকর্তারা জানান। এ বিষয়ে মহসীন খন্দকারের বক্তব্য জানতে চাইলে মহসীন তার পার্টনার গ্যাসের ঠিকাদার শামীমের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। বলেন, ৩ বছর ধরে গ্যাস বন্ধ। গ্যাস দেবো কি করে? সংযোগে লাখ লাখ টাকা কেউ দেয় না বলেও দাবি করেন মহসীন। পরে আদিল সিকান্দর বিজনেস সিন্ডিকেট নামের প্রতিষ্ঠানের মালিক শামীমের সঙ্গে যোগাযোগ করলে শামীম বলেন, সে ভুল বলেছে। সে কাজ করে হাবিব ভাইয়ের প্যাডে (মামুন এন্টারপ্রাইজ)। তবে মাস দুয়েক আগে সে আমাকে বলেছিল লাইনের সুযোগ হলে আমারে জানাইয়েন। তার সঙ্গে এটুকুই কথা হয়েছে। এখন গ্যাস সংযোগ হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে শামীম বলেন, ‘হুনতাছি কাজ অইতাছে। ওইতো রামরাইলের দিকে ৪ হাজার ফুট লাইন ফালাইছে।’

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও