কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রয়োজন বৃহত্তর ঐক্য

মানবজমিন প্রকাশিত: ২৬ মে ২০১৯, ০০:০০

দেশের জনগণের নিরাপত্তা ও মানবাধিকার সুরক্ষায় সরকার দায় এড়াচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। কোনো কোনো ক্ষেত্রে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা নাগরিকদের নিরাপত্তা প্রদানে ব্যর্থ হচ্ছে বলেও মনে করেন তারা। গতকাল রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘নাগরিক নিরাপত্তা জোট’ নামে একটি উদ্যোগের ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন কথা বলেন বক্তারা। ‘আইনের শাসন, নিরাপত্তা, জবাবদিহিতা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন’ নামের আয়োজনে বিশিষ্টজনেরা মানবাধিকার ও নিরাপত্তা ঘাটতির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। নাগরিক নিরাপত্তায় বৃহত্তর ঐক্য প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন তারা। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন মানবাধিকার কর্মী ড. হামিদা হোসেন, নিজেরা করি’র সমন্বয়কারী খুশী কবির, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক শীপা হাফিজা, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, নাগরিক কমিটির সদস্য এবিএম শামসুল হুদা, মানবাধিকারকর্মী জিয়া তারিক আলী, জাকির হোসেন ও শরীফ জামিলসহ নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। সম্মেলনে সাম্প্রতিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে এবিএম শামসুল হুদা মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন। দেশে গত চার মাসে খুন, ধর্ষণ ও গুমের ঘটনার পরিসংখ্যান টেনে নাগরিকদের নিরাপত্তার বিষয়ে শঙ্কার কথা জানান বক্তারা। এতে বলা হয়, সামপ্রতিক সময়ে দেশে প্রতিনিয়ত নানা অন্যায়-অবিচার, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম, নির্যাতন, মত প্রকাশ ও মুক্ত চিন্তার অধিকারের ওপর আঘাত, নারী ও শিশু নির্যাতন, হত্যা, ধর্ষণের মতো জঘন্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটছে। রাষ্ট্রে আইনের শাসন ও জবাবদিহিতার অভাব, ক্ষমতার অপব্যবহার, ন্যায়বিচার প্রাপ্তির ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা, বিচারের দীর্ঘসূত্রতা নাগরিকের মানবাধিকার লঙ্ঘনকে আরো বেশি সংকটাপন্ন করে তুলছে বলেও সম্মেলনে জানান বক্তারা। বিশিষ্ট ব্যক্তিরা তাদের বক্তব্যে বলেন, সুশাসন প্রতিষ্ঠায় রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো স্বাধীনভাবে কাজ করতে না দিলে এবং গণতন্ত্রকে সুসংহত করতে না পারলে কোন উন্নয়নই দীর্ঘস্থায়ী হয় না। এমন পরিস্থিতিতে সমাজে অন্যায়, অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলার পরিবেশ তৈরি হয়েছে। জনগণের ভেতরে নিরাপত্তাহীনতা ও একটি ভয়ের সংস্কৃতি সৃষ্টি করেছে, যা কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। তারা বলেন, টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জন বাংলাদেশ দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হলেও এমন পরিস্থিতি চলমান থাকলে বাংলাদেশ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে পিছিয়ে পড়বে। অবস্থার উন্নয়নে প্রাতিষ্ঠানিক দলীয়করণের বিষয়ে সরকারের দ্রুত পদক্ষেপ কামনা করেন বিশিষ্টজনরা। গত জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত চার মাসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ১১৮ জন নাগরিক নিহত হয়েছে বলে লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়। একই সময়ে অন্তত ৩৫৪ জন নারী ও ২৩৪ শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। গত চার মাসে খুন হয়েছে ১৪৪টি শিশু। এছাড়া, অন্তত ছয়জনের গুম হওয়ার অভিযোগ আছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের পরিস্থিতি মহামারি আকার ধারণ করেছে উল্লেখ করে নাগরিকের নিরাপত্তায় বৃহৎ ঐক্য গড়া প্রয়োজন বলে জানান বক্তারা। অনুষ্ঠানে খুশি কবির বলেন, অনেকগুলো সামাজিক আন্দোলনের সংগঠন মিলে এ জোট গঠন করা হয়েছে। বাকি সংগঠনগুলোকেও এ জোটে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। রাজনৈতিক দলের ভূমিকায় শূন্যতা তৈরি হওয়ায় নাগরিকদের নিজেদেরই এগিয়ে আসতে হবে বলেও মন্তব্য করেন। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, প্রধানমন্ত্রী অন্তর্ভূক্তিমূলক উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, কিন্তু তা হচ্ছে না। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কারণে মুক্তচিন্তা ও বাক?স্বাধীনতা ব্যাহত হচ্ছে। মানুষ উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারছে না। কোনো জবাবদিহি নেই। মানুষের নিরাপত্তা ও মানবাধিকার নিশ্চিতে দলীয়করণ বন্ধ করে সব প্রতিষ্ঠানকে ঢেলে সাজানোর সুপারিশ তুলে ধরেন ড. ইফতেখারুজ্জামান। নিজেরা করির সমন্বয়কারী খুশি কবির বলেন, সারা দেশে ভীতির সংস্কৃতি ছড়িয়ে পড়েছে। গণতন্ত্র নিশ্চিত করতে সবাই মিলে সম্মিলিতভাবে প্রতিবাদ করতে হবে। সবাই মিলে কর্মসূচি নিতে হবে। মানবাধিকার কর্মী হামিদা হোসেন বলেন, রাষ্ট্র ও জনগণের মধ্যে সম্পর্ক থাকা প্রয়োজন। কিন্তু বর্তমানে সেরকম পরিস্থিতি যাচ্ছে না। মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে সরকার কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন খুশি কবির। তিনি বলেন, বিভিন্ন সময় দেখা যাচ্ছে আদালতের নির্দেশনাও মানা হচ্ছে না। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনায় শাস্তি নিশ্চিত করে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, নাগরিকদের মত প্রকাশের অধিকার সুরক্ষা, আদিবাসী ও অনগ্রসর অধিকারের স্বীকৃতি, ধর্মীয় সংখ্যালঘুর নিরাপত্তা, বৈষম্যবিরোধী আইন অনুমোদন, দুদক ও নির্বাচন কমিশনসহ সব কমিশনকে শক্তিশালী করাসহ ১১টি নির্দিষ্ট সুপারিশ তুলে ধরে ‘নাগরিক নিরাপত্তা জোট’ নামে নতুন এই জোটের লিখিত বক্তব্যে পাঁচটি কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। দেশব্যাপী প্রতিবাদ ও মানববন্ধন, প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বরাবার স্মারকলিপি পেশ, বিভিন্ন সংগঠনের মধ্যে সমন্বয় ও যৌথভাবে প্রতিবাদ, গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণা এবং তরুণ জনগোষ্ঠীকে মানবাধিকার রক্ষায় ও জঙ্গিবাদ দমনে সম্পৃক্ত করতে নানা কর্মসূচি পালন করা হবে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও