কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

‘গান নিয়ে সুবীরের পাগলামি আমাকে অবাক করতো’

মানবজমিন প্রকাশিত: ০৯ মে ২০১৯, ০০:০০

সুবীর নন্দী যে কেবল বড় মাপের শিল্পী ছিল তাই নয়, অত্যন্ত ভালো মনের একজন মানুষ ছিল সে। এই জগতে এমন মানুষ এখন বিরল। তার কথাবার্তা, আচার আচরণ, মানুষকে আপন করে নেয়ার শক্তি যে কতটা ছিল সেটা যারা তার সঙ্গে মিশেছে তারাই শুধু বলতে পারবে। সরলতাই অন্যদের থেকে তাকে আলাদা করেছিল। সদ্যপ্রয়াত দেশবরেণ্য সংগীতশিল্পী সুবীর নন্দীকে নিয়ে কথাগুলো বলছিলেন আরেক বিশিষ্ট শিল্পী খুরশীদ আলম। বয়সে বড় হলেও তার দারুণ সখ্যতা ছিল সুবীর নন্দীর সঙ্গে। আর তাইতো প্রিয় মানুষের চলে যাওয়ার খবরটা কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না খুরশীদ আলম। তিনি বলেন, আমি এখনও বিশ্বাস করতে পারছি না সুবীর নেই। এত খারাপ লাগছে বলে বোঝাতে পারবো না। সুবীর নন্দী আমার থেকে প্রায় সাত বছরের ছোট। কিন্তু সে চলে গেলো আগেই। এভাবে যে এত তাড়াতাড়ি সে চলে যাবে সেটা বুঝতে পারিনি। সুবীর নন্দী যে কোন মাপের শিল্পী সেটা সবারই জানা। তার মতো শিল্পী শত বছরেও আসবে না। গান ছাড়া সে কিছুই বুঝতো না। এমননকি কিডনিতে সমস্যা নিয়েই সে গান করে যেতো অবিরত। অসুস্থ অবস্থায়ও গান গেয়ে সবাইকে মাতিয়ে রাখতে পছন্দ করতো। আজ একে একে সব স্মৃতি হৃদয়ে দোলা দিচ্ছে। একটি ঘটনার কথা খুব মনে পড়ছে এখন। কি সেটা? খুরশীদ আলম উত্তরে বলেন, সহজ সরল হওয়ার পাশাপাশি সুবীর নন্দী ছিল মজার একজন মানুষ। সব সময় আসর মাতিয়ে রাখতো সে। ১৯৯৮ সালের কথা। মাসটা আমার মনে নেই। আমরা একসঙ্গে গান গাওয়ার জন্য গিয়েছিলাম কাতারে। আমাদের যে হোটেলে থাকার ব্যবস্থা করা হয়, সেখানে আমার যা প্রয়োজন তার সবই ছিল। সুবীর আমাদের কিছুই ধরতে দেয়নি। ধরলেই নাকি বিল দিতে হবে! আমরাও সরল মনে ওর কথা বিশ্বাস করেছি। শেষ পর্যন্ত বিষয়টি বুঝতে পারিনি। কিন্তু যখন চলে আসার জন্য প্রস্তুত আমরা, তখন বুঝতে পারি। আসলে সুবীর আমাদের সঙ্গে ফান করেছে। দেশে ফিরে সেই বিষয় নিয়ে কত যে মজা করেছি আমরা। আবার একটা সময় সুবীর নন্দীর খুব পান খাওয়ার অভ্যাস ছিল। কিন্তু একদিন প্রখ্যাত সুরকার সত্য সাহা তার একটি ছবিতে গান গাওয়ার জন্য সুবীর নন্দীকে ডাকলেন। সত্য সাহার সামনে বসে সুবীর গান গাইছে। কিন্তু একটা শব্দের উচ্চারণ ও  কোনোভাবেই করতে পারছিল না। চেষ্টা করে গেলেও হচ্ছিল না। সত্য সাহা তাকে বললেন, সারা দিন পান মুখে দিয়ে রাখলে উচ্চারণ বের হবে নাকি? এরপর সুবীর যে পান খাওয়া ছাড়লো, আর কখনো দেখিনি তাকে তা খেতে। সুবীর নন্দীর স্মৃতির কথা বলতে গিয়ে খুরশীদ আলম বলেন, বিভিন্ন জায়গায় আমাদের দেখা হতো, আড্ডা হতো। প্রাণ খুলে আমরা গান নিয়ে কথা বলতাম। গান নিয়ে সুবীরের পাগলামি আমাকে অবাক করতো। আর গানের প্রতিটি ক্ষেত্রেই তার দখল ছিল। নজরুল সংগীতও সে অসাধারণ গাইতো। আর চলচ্চিত্রে তার গাওয়া গানগুলোতো কালজয়ী হয়ে রয়েছে। সে কিন্তু ক্যারিয়ারের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত গানেই মাঝেই ছিল। এটা সবার ক্ষেত্রে হয় না। সুবীরের চলে যাওয়ায় সংগীতাঙ্গনের যে ক্ষতি হলো সেটা পূরণ হবে না  কোনোদিন। আমি তার আত্মার শান্তি কামনা করি। এবার ভিন্ন প্রসঙ্গে আসি। আপনি কদিন আগে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছিলেন ? এখন কেমন আছেন? উত্তরে খুরশীদ আলম বলেন, আগের থেকে এখন  ভালো আছি। তবে বিশ্রামে আছি এখনো। কাজ কম করছি। কিন্তু সুবীরের চলে যাওয়ার কথা শুনে থাকতে পারিনি। ওর বাসায় ছুটে গেছি। গতকালও শহীদ মিনারে গিয়েছিলাম। গানে কবে নাগাদ ফিরছেন তাহলে? খুরশীদ আলম বলেন, খুব তাড়াতাড়ি ফিরতে চাই। কারণ আমিতো গানের মানুষ। গান ছাড়া থাকতে পারি না। দোয়া করবেন যেন পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ফিরতে পারি।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও