কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

লাকসামে ব্যাঙের ছাতার মতো ক্লিনিক সর্বস্বান্ত রোগীরা

মানবজমিন প্রকাশিত: ২০ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

লাকসামে প্রায় ৭ লাখ লোকের বসবাস। এখানে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে বিভিন্ন ক্লিনিক, হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। স্বাস্থ্যসেবা নিতে এসে বেসরকারি ক্লিনিকে রোগীরা সর্বস্বান্ত হচ্ছেন। প্রতিটি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে রয়েছে নিজস্ব দালাল। সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তুলনায় বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা বেসরকারি ক্লিনিকে ৮ থেকে ১০ গুণ বেশি। ডেলিভারি রোগী এলে নরমাল ডেলিভারি করতে চান না ক্লিনিকের ডাক্তাররা। সিজার করলে রোগীপ্রতি ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা আয় হয়। লাকসামে বেসরকারি উদ্যোগে প্রায় ৪০টি ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক, হাসপাতাল ও ল্যাব রয়েছে। এসব ক্লিনিক ও হাসপাতালের মধ্যে ২১টির সরকারি লাইসেন্স রয়েছে। বাকিদের কোনো লাইসেন্স নেই। ওই সব হাসপাতালে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা এসব ক্লিনিকে রোগী দেখেন। যেকোনো রোগী ওই ডাক্তারদের দেখালে প্রয়োজন ছাড়াও বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে দেন। নির্দিষ্ট হাসপাতালের ল্যাব ছাড়া অন্য কোথাও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করলেও ওইসব রিপোর্ট দেখতে চান না ডাক্তাররা। এছাড়া রয়েছে ডাক্তারদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার ওপর কমিশনবাণিজ্য। বিভিন্ন হাটবাজারে গ্রাম্য ডাক্তারদের ভিজিট করার জন্য হাসপাতালের লোকজন তাদের কাছে যান এবং তাদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার ওপর ৩০ থেকে ৫০% কমিশন দেয়া হয়। গ্রাম্য ডাক্তাররা কমিশন পাওয়ার লোভে ওইসব ক্লিনিকে পাঠান। এছাড়াও ডেলিভারি কোনো রোগী গ্রাম্য ডাক্তাররা ক্লিনিকে পাঠালে ওইসব রোগীর নরমাল ডেলিভারি করতে চান না ক্লিনিকের ডাক্তাররা। সিজারপ্রতি ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। গত বেশকিছু দিন বিভিন্ন ক্লিনিকে সরজমিনে ভুক্তভোগী রোগীদের আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে আলাপ করলে এ তথ্য বেরিয়ে আসে। লাকসাম একটি ক্লিনিকের মালিক ডা. এনেসথেসিয়া ও তার স্ত্রী গাইনি বিশেষজ্ঞ। প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ জন রোগী সিজার করেন। সিজার করতে গিয়ে অনেক সময় পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করার কারণে অনেক প্রসূতির সন্তান মেরে ফেলেন। কোনোটির সংবাদ স্থানীয় সাংবাদিকরা জানলে তাদের সঙ্গে আঁতাত করা হয়। গর্ভবতী মহিলাদের সিজার করলে তাদের কমিশনবাণিজ্য অনেক গুণ বেশি। সন্তান-সম্ভবা মহিলাদের স্বাভাবিক ডেলিভারি করতে চান না ক্লিনিকের ডাক্তাররা। সিজার করলে একেকজন রোগীর ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা আদায় করেন। এতে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন রোগীরা। এছাড়াও বেসরকারি ক্লিনিকে নিম্নমানের রিএজেন্ট ব্যবহার করছে। অনেক সময় মেয়াদ উত্তীর্ণ রিএজেন্ট দিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার কারণে রক্ত, মলমূত্র পরীক্ষা রিপোর্ট সঠিকভাবে পাওয়া যায় না। গড়ে উঠা বিভিন্ন হাসপাতাল, ক্লিনিক-ল্যাবে রয়েছে এসব অব্যবস্থা। এসব ল্যাবের অধিকাংশেই ডিপ্লোমা টেকনিশিয়ান নেই। এসব ল্যাব থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর সঠিক রিপোর্ট পাওয়া যায় না। ল্যাবের টেকনিশিয়ান যেসব লোক রয়েছে তাদের কোনো ইফনিফরম ও মাক্স পরা থাকে না। ব্যবহার করে না হাতের গ্লাভস। সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এইডস পরীক্ষার জন্য কোনো ফি নেয়া হয় না। বেসরকারি ক্লিনিকের জন্য ১২৫০ টাকা নেয়া হয়। সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে টি.সি/ডি.সি.ই.এস.আর/এইচভি একত্রে ১৫০ টাকা, বেসরকারি ক্লিনিকে ৪৩২ টাকা। ভি.ডি.আর.এল টেস্ট সরকারি ৫০ টাকা, বেসরকারি ২১৫ টাকা, এমপি সরকারি ২০ টাকা, বেসরকারি ২১৫ টাকা, ইউরিন ফর আর.আই.এফ সরকারি ২০ টাকা, বেসরকারি ১০০ টাকা, ইউরিন প্রেগন্যান্সি টেস্ট সরকারি ৫০ টাকা, বেসরকারি ২৯০ টাকা, এ.এস.ও টিটার ওআরএ টেস্ট সরকারি ১৬০ টাকা, বেসরকারি ৬১০ টাকা, ক্রস মেথসিন সরকারি ১০০ টাকা, বেসরকারি ৭০০ টাকা। সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন রক্ত, মলমূত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষা ৮ থেকে ১০ গুণ বেশি। সরকারি হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা রোগীদের টেস্ট করার জন্য বিভিন্ন ক্লিনিকে পাঠায় কমিশনের কারণে। অনেক সময় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্ট ডাক্তারদের দেখাতে চাইলে তারা ওইসব রিপোর্ট দেখতে চান না। সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য যেসব রিএজেন্ট ব্যবহার করে সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ট্রেড ওয়ার্ড কোম্পানি জার্মানি, স্পেন। অপরদিকে বেসরকারি ক্লিনিকগুলো ভারত, চীন নিম্নমানের রিএজেন্ট ব্যবহার করে। এজন্য রিপোর্ট পাওয়া যায় না। এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নিশাত সুলতানার সঙ্গে আলাপ করলে তিনি জানান, যেসব ক্লিনিকের লাইসেন্স নেই তাদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে এবং বিভিন্ন টেস্টের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মূল্য তালিকা দেয়ার জন্য তিনি আলাপ করবেন।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও