কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

রাব্বানীর ডাকসু জিএস পদে থাকা নিয়ে প্রশ্ন

মানবজমিন প্রকাশিত: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

চাঁদাবাজি, দুর্নীতিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে ব্যাপক সমালোচনার মুখে থাকা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী শেষ পর্যন্ত বিদায় নিতে বাধ্য হয়েছেন। ছাত্রলীগের শীর্ষ এই দু’টি পদ থেকে বিদায় নেয়ার পর এবার প্রশ্ন ওঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)-এর জিএস পদে গোলাম রব্বানীর দায়িত্ব পালন নিয়ে। এরই মধ্যে ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নূর জানিয়েছেন, দূর্নীতি, চাঁদাবাজিতে অভিযুক্ত হওয়া জিএস পদটি ধরে রাখা গোলাম রাব্বানীর উচিত নয়। তিনি বলেন ডাকসুর যখন গঠনতন্ত্র তৈরি হয়েছিলো হয়তো কেউ ভাবেননি একজন শিক্ষার্থী এরকম দুর্নীতি অনিয়ম করতে পারে। তবে ডাকসুর সভাপতি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি স্যার চাইলে তার একক ক্ষমতায় যে কাউকে অপসারণ করতে পারেন। যে জায়গায় ছাত্রদলীগের মতো বড় একটি সংগঠন থেকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে দল তাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেছে সেই জায়গায় তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি জায়গায় কোনো ভাবেই শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্ব করতে পারে না। এটা শিক্ষার্থীরা মেনে নিবে না এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্যান্য ছাত্রসংগঠনে যারা আছে তারাও মেনে নিবে না। এই ক্ষেত্রে জিএস পদ থেকে রাব্বানী অসম্মানিত হয়ে বিদায় নেয়ার আগে, সম্মান নিয়ে বিদায় নেয়া উচিৎ বলে আমি মনে করি। আমি ভিপি হিসেবে এই ডাকসুতে দুর্নীতিগ্রস্ত জিএস-এর সাথে আমার পক্ষে কাজ করা সম্ভব হবে না। তবে আমি আশা করি আমাদের সভাপতি দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেবেন। এদিকে ডাকসু’র জিএস পদ থেকে গোলাম রাব্বানী ও ঢাবির সিনেট সদস্য পদ থেকে রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনকে অপসারণের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন। এই দাবিতে গতকাল ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের নেতাকর্মীরা। সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জাহিদ সুজন বলেন, দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির দায়ে ইতিমধ্যে গোলাম রাব্বানী ও শোভনকে ছাত্রলীগ থেকে অপসারণ করেছে। এখন সময়ের দাবি তাদের আইনের আওতায় এনে বিচার করা। সেইসঙ্গে ঢাবিতে তাদের যত পদপদবী আছে এগুলো থেকে তাদের ২৪ ঘন্টার মধ্যে অপসারণ করতে হবে। চাঁদাবাজ ছাত্রনেতারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকতে পারে না বলে মন্তব্য করেন তিনি। এছাড়াও বামপন্থী নেতাকর্মীরা ঢাকসুর জিএসকে অপসারণের দাবিতে প্রতিবাদ মিছিল করেন ক্যাম্পাসে। ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী বলেন, জিএস এর বিরুদ্ধে যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয়, নৈতিক ভাবেই সে এখানে থাকতে পারে না। ডাকসুর মতো একটি সংগঠনে শিক্ষার্থীরা তাকে মেনে নেবে না। শুধু জিএস নয় এখানে আরো অনেক নেতা আছেন যারা ভর্তি জালিয়াতি করে ডাকসু নির্বাচন করেছে। সেই জায়গা থেকে বলতে পারি পুরো ডাকসুই এখন একটি বির্তকিত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।ডাকসুর সাবেক ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই নেতা যাদের কমিটি থেকে পদত্যাগ করতে বলেছেন নেত্রী। কিন্তু তারা তো তাদের দলে আছে। এমন দুর্নীতি বা চাঁদাবাজির বিষয়টি যদি তাদের বিরুদ্ধে চলেই আসে আমার কাছে মনে হয় তাদের বিরুদ্ধে ক্রিমিনাল কেইস হওয়া উচিৎ। আর ডাকসুর জিএস পদটি নৈতিকতার দিক থেকে দেখলে বর্তমান জিএস পদটি ধরে রাখতে পারে না। সেটা নৈতিকতার বিষয়।ডাকসুর গঠনতন্ত্র থেকে জানা যায়, ভিসি সংসদের সর্বোচ্চ স্বার্থে যেকোনো সময় যেকোনো কার্যনির্বাহীকে অথবা সদস্যকে অপসারণ করতে পারবেন। এছাড়া তিনি চাইলে নির্বাহী সংসদকেই বাতিল করতে পারবেন এবং নতুন নির্বাচন ঘোষণা করতে পারবেন অথবা সংসদ গতিশীল রাখার জন্য তিনি যা উপযুক্ত বলে মনে করেন তাই করতে পারবেন। এছাড়া ভিসি সিন্ডিকেটের অনুমোদনক্রমে যতকাল পর্যন্ত উপযুক্ত মনে করবেন সংসদকে স্থগিত করার কর্তৃত্ব রাখবেন । গঠনতন্ত্রের পাঁচ নম্বর অধ্যায়ে আছে, পদাধিকারবলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সংসদের প্রেসিডেন্ট হবেন। ছাত্র সংসদের উদ্যোগে যতগুলো সভা হবে (নির্বাহী কমিটির সভাসহ অন্যান্য) তিনি সেসব সভায় সভাপতিত্ব করবেন। এছাড়া তিনি নিয়ম-নীতি অনুসরণ করে সংসদ চলছে কি না সেটা দেখবেন, জরুরি অবস্থায়, অচল অবস্থায় অথবা গঠনতন্ত্র লঙ্ঘনে উপাচার্য সংসদের যথাযথ ভূমিকা বিবেচনা করে পদক্ষেপ নিতে পারবেন। এছাড়া উপাচার্য এসব নিয়মের ব্যাখা দিতে পারবেন এবং তার ব্যাখাই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে। এ বিষয়ে ডাকসুর সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, কোনো প্রতিষ্ঠান বা সংগঠন একেক রকম নিয়ম নীতি নিয়ে চলে। সব কিছু এক নিয়মে চলে না। আমি চাইলেই ডাকসুর জিএসকে তার পদ থেকে অপসারণ করতে পারি না। এই বিষয়ে যে স্বিদ্ধান্তই নেয়া হবে গঠনতন্ত্র এবং নিয়মনীতি অনুসরন করেই নেয়া হবে।তবে ছাত্রলীগের একাধিক নেতাকর্মীর সাথে কথা বলে জানা যায়, ছাত্রলীগের পদ থেকে যেহেতু অনিয়ম ও দুর্নীতির দায়ে তাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে জিএস পদটিও তার আর থাকবে না। কয়েকদিনের মধ্যেই রাব্বানী এই পদটি থেকে পদত্যাগ করতে পারেন বলে মনে করছেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও