১ দিনে ৩ হাজার কোটি টাকার মূলধন কমেছে পুঁজিবাজারে

দেশের শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের রক্তক্ষরণ চলছেই। অব্যাহত দরপতনে প্রতিনিয়ত বিনিয়োগ করা পুঁজি হারাচ্ছেন লাখ লাখ বিনিয়োগকারী। কোনো কিছুই শেয়ারবাজারকে পতনের হাত থেকে রক্ষা করতে পারছে না। দিনের পর দিন দরপতন হওয়ায় ধীরে ধীরে তলানিতে যাচ্ছে শেয়ারবাজার। এতে এক দিনেই প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার মূলধন হারিয়েছে দেশের প্রধানপুঁজিবাজার। আগের কার্যদিবসের ধারাবাহিকতায় সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস গতকালও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবক’টি মূল্য সূচকের পতন হয়েছে। এর মাধ্যমে টানা চার কার্যদিবস দরপতন হলো। এতে দেড় মাসের মধ্যে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক সর্বনিম্ন অবস্থানে চলে এসেছে।বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, সূচকের পাশাপাশি এদিন লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ১০০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২০৯টির। ৪৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমায় ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের কার্যদিবসের তুলনায় ৩৭ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৩৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। সূচকের বড় পতন হলেও এদিন ডিএসইতে লেনদেন কিছুটা বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪৪২ কোটি ৯০ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৩৩২ কোটি ৪০ লাখ টাকার। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ১১০ কোটি ৫০ লাখ টাকা।এদিকে, গতকাল ডিএসই’র বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৭৬ হাজার ৮৩৮ কোটি টাকায়। এর আগের দিন রোববার ছিল ৩ লাখ ৭৯ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা। অর্থাৎ ২ হাজার ৬১৪ কোটি টাকার বাজার মূলধন কমেছে। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৮৭ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৪১২ পয়েন্টে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১৪ কোটি ২৭ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ২৪৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ৬৩টির, কমেছে ১৫৩টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩১টির।এদিকে, দেশের শেয়ারবাজারে মন্দাভাব থাকায় আগস্টে ডিএসই থেকে সরকারের রাজস্ব আদায় আগের মাসের তুলনায় অর্ধেকের নিচে নেমেছে। জুলাই মাসের তুলনায় আগস্টে ডিএসই থেকে সরকারের রাজস্ব আদায় কমেছে ১১ কোটি ১৬ লাখ টাকা। ডিএসইর হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। জানা গেছে, আগস্টে ডিএসইর মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব আদায় হয়েছে ৮ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। জুলাইয়ে এর পরিমাণ ছিল ১৯ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। সুতারাং আগস্টে রাজস্ব কমেছে ১১ কোটি ১৬ লাখ টাকা। আগস্টে ডিএসইর সদস্য প্রতিষ্ঠান থেকে সরকারের রাজস্ব আয় হয়েছে ৭ কোটি ৪০ লাখ টাকা। জুলাইয়ে এর পরিমাণ ছিল ৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। সেই হিসাবে এ খাত থেকে আগস্টে রাজস্ব আদায় কমেছে ১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। অপরদিকে, উদ্যোক্তা-পরিচালক ও প্লেসমেন্ট শেয়ারধারীদের কাছ থেকে আগস্টে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৯৩ লাখ টাকা। জুলাইয়ে এ খাতে রাজস্বের পরিমাণ ছিল ১০ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। অর্থাৎ আগস্টে ডিএসইর উদ্যোক্তা-পরিচালক ও প্লেসমেন্ট শেয়ারধারীদের কাছ থেকে রাজস্ব আদায় কমেছে ৯ কোটি ৬২ লাখ টাকা।