কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

কোনদিকে যাচ্ছে বাংলাদেশের ক্রিকেট!

মানবজমিন প্রকাশিত: ০৯ ডিসেম্বর ২০২১, ০০:০০

দু’দিন বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ার পর কে ভেবেছিল ফল দেখবে মিরপুর টেস্ট! তিনশ’ রানে ইনিংস ঘোষণার পর কি বাবর আজম ভেবেছিলেন ফলোঅনটাও এড়াতে পারবে না বাংলাদেশ? ম্যাচে জয়ের কথাও কি ভেবেছিলেন পাকিস্তান অধিনায়ক? যেটাই হোক, ঘরের মাঠে বাংলাদেশ পারেনি সিরিজ বাঁচাতে; টি-টোয়েন্টিতেও, টেস্টেও। টানা ব্যর্থতার দায় কার- এ নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও এড়িয়ে গেছে সংশ্লিষ্ট সবাই। ২০০০ সালের গোড়ার দিকে বাংলাদেশের ক্রিকেটে আজকের রমরমা অবস্থা ছিল না। তখন বাংলাদেশ এমন একটা দল ছিল, যারা বড় দলকে মাঝেমধ্যে কাঁপিয়ে দেবে। মাঝে-মধ্যে ক্রিকেটপাগল জনতাকে জয়ের আনন্দে ভাসাবে এমন। ধীরে ধীরে প্রত্যাশাটা বাড়তে থাকে। সবাই চাইছিল দলে গোটা চার-পাঁচেক খেলোয়াড় থাকবেন, যারা ম্যাচ জেতাতে পারবেন। ২০০৭ সালে সেই স্বপ্নের ভিত গড়া হয়ে যায়। মাশরাফি বিন মুর্তজার নামটা ২০০১ সাল থেকে ছড়াতে শুরু করলেও ২০০৫ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত দুই বছরে একে একে বাংলাদেশ দলে নাম লেখান মুশফিকুর রহীম, সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। এরপর তো এই পাঁচে মিলেই হয়ে যান বাংলাদেশের ক্রিকেটের ‘পঞ্চপাণ্ডব’। ২০০৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে প্রথম একসঙ্গে জাতীয় দলের হয়ে মাঠে নামেন বাংলাদেশের ক্রিকেটের স্বর্ণসময়ের পাঁচ সারথী। সেই থেকে একে একে ১১১টি ম্যাচে তাঁরা মাঠে নামেন কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে। তিন সংস্করণ মিলিয়ে এই ১১১ ম্যাচের মধ্যে বাংলাদেশ জিতেছে ৫৪টিতে, ৫৩টিতে হেরেছে, ফলাফল হয়নি ৪ ম্যাচে। জয়ের সংখ্যাটা যদিও বেশি তবু কম মনে হয়, তাহলে আরও একটু পেছন ফিরে দেখা যাক। ওই পাঁচজন একসঙ্গে জাতীয় দলে খেলার আগে বাংলাদেশ দল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সব মিলিয়ে ২১৮টি ম্যাচ খেলে জয় পেয়েছিল মাত্র ৪০টিতে, হার ১৭১ ম্যাচে। ২০২০-এর মার্চে সিলেটে ওয়ানডে নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অলিখিত বিদায় হয়ে যায় মাশরাফির। পঞ্চপাণ্ডবের ইতিহাসেরও সেখানেই সমাপ্তি। ২০১৯ বিশ্বকাপে লর্ডসে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটাই হয়ে আছে মাশরাফি, মুশফিক, সাকিব, তামিম ও মাহমুদুল্লাহর একসঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশের শেষ ম্যাচ। সেই ম্যাচের পর এ পর্যন্ত ৬৫টি ম্যাচ খেলে বাংলাদেশের জয় ৩০টিতে, হেরেছে ৩৪টিতেই। অর্থাৎ, হারের সংখ্যা আবার বাড়তে শুরু করেছে। এই সময়ে শুধু যে মাশরাফিই দলে ছিলেন না তা নয়, বিভিন্ন কারণে বাকি চারজনকেও একসঙ্গে দলে পাওয়া গেছে কম ম্যাচেই। ২০১৯ বিশ্বকাপের পরও বাংলাদেশ ম্যাচ জিতেছে, ভালো খেলেছে। কিন্তু দল থেকে সেই সুর-তালটা যেন হারিয়ে যেতে থাকে। সঙ্গে যোগ হয়েছে সিনিয়র ক্রিকেটারদের মধ্যে মন-কষাকষি, ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে বিরোধ, কিছুই আর পুরোপুরি গোপন থাকেনি এরপর। জিম্বাবুয়ে সফরে টেস্ট ক্রিকেট থেকে মাহমুদুল্লাহর আকস্মিক অবসর, টি-টোয়েন্টির প্রতি তামিম ইকবালের অনীহা, বিশ্বকাপের দল নিয়ে বিতর্ক, এবারের টি- টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সমালোচনার জবাবে খেলোয়াড়দের পাল্টা ছোবল মারা সে সবেরই ধারাবাহিকতা। পঞ্চপাণ্ডব-অধ্যায় যেমন মাশরাফি-বিয়োগে শেষ হলো, তেমনি এটাও স্বাভাবিক যে, বাংলাদেশের ক্রিকেটে একদিন সাকিব-তামিম-মুশফিক-মাহমুদুল্লাহর অধ্যায়ও শেষ হবে। হয়তো আরও কিছুদিন তারা খেলবেন, তবে বাংলাদেশ দলে এই চতুষ্টয়কে আর একসঙ্গে পাওয়ার সম্ভাবনা কমই। ওয়ানডেতে হয়তো তাদের একসঙ্গে পাওয়া যাবে, তবে সেটিও অনেক যদি-কিন্তুর ওপর নির্ভরশীল। মাহমুদুল্লাহ টেস্ট ছেড়ে দিয়েছেন, তামিম-মুশফিক টি-টোয়েন্টি আর কতোদিন খেলবেন কে জানে? কিন্তু বিকল্প কি আছে? সাকিব, তামিম, মুশফিকরা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এসেই জানান দিয়েছিলেন তারা লম্বা রেসের ঘোড়া। সেই জেল্লাটাই যে নেই এখনকার ক্রিকেটারদের মধ্যে! একেবারে নতুনদের কথা বাদ দিন, চার-পাঁচ বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলে ফেলেছেন, সেই লিটন কুমার দাস, সৌম্য সরকাররাও এখনো পারেননি জাতীয় দলে জায়গা পাকা করতে। পাকিস্তানের বিপক্ষে শেষ টেস্টে সফরকারী দলের সাজিদ খান যখন মাত্র পনেরো ওভার বল করেই আট উইকেট নিচ্ছেন, একই পিচে বাংলাদেশের স্পিনাররা করেছেন ৫৮ ওভার; উইকেট মাত্র দু’টি! বাংলাদেশের পেসারদের যখন সুইং করাতে দেখা যায় কালেভদ্রে, সেখানে প্রথম থেকেই সুইং, রিভার্স সুইং, ইয়র্কারের পসরা সাজিয়েছেন শাহীন শাহ্‌ আফ্রিদি-হাসান আলী। যেই পিচে স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যাটিং করেছেন পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানরা, সেখানে দুই অঙ্কের রান তুলতেই হিমশিম খেয়েছে বাংলাদেশি ব্যাটিং লাইনআপ! বহু ঢাকঢোল পিটিয়ে এই টেস্টে অভিষেক হয় অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য মাহমুদুল হাসান জয়ের। দেশের মাটিতে অভিষেকটা রাঙাতে পারেননি এই ওপেনার। দুই ইনিংসেই আউট হয়েছেন দৃষ্টিকটুভাবে। যাকে লম্বা রেসের ঘোড়া বলা হচ্ছে সেই সাদমান ইসলামও আস্থার প্রতিদান দিতে পারছেন না। দল ব্যর্থ হলে তার প্রভাব পড়ে সে দেশের গোটা ক্রিকেট অবকাঠামোতে। কোচিং প্যানেল থেকে শুরু করে পরিবর্তন আসে ক্রিকেট বোর্ডেও। কিন্তু এর একেবারে উল্টো চিত্র বাংলাদেশে। দল খারাপ করলে দুই চারজন ক্রিকেটারকে পাল্টেই সমাধান খোঁজেন ক্রিকেট বোর্ডের কর্তাব্যক্তিরা। তাদের এই ত্বরিৎ সমাধানেও কোনো কাজ হচ্ছে না। বরং সঠিক পরিকল্পনা আর সুনির্দিষ্ট দিক-নির্দেশনার অভাবে অনিশ্চয়তার দিকেই ধাবিত হচ্ছে এদেশের ক্রিকেট।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত