কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

নজরদারির অভাবে প্রতারণা

মানবজমিন প্রকাশিত: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০

ই-কমার্স তথা এমএলএম ব্যবসার নামে প্রতারণার মাধ্যমে মানুষের কাছ থেকে যেসব টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে, তা ফিরে পাওয়া খুব কঠিন বলে মনে করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি মানবজমিনকে বলেন, বিশেষ করে ই-কমার্সে যারা টাকা বিনিয়োগ করেছে, যেমন ইভ্যালি; এদের তো সাপ্লাইয়ের সঙ্গে কোনো এগ্রিমেন্ট ছিল না। আবার অগ্রিম টাকা নিয়ে পণ্য দেয়ার কথা বলেছিল। কিন্তু এখন গ্রাহকদের পণ্য, টাকা কিছুই দিতে পারছে না। এভাবে অনেক টাকা অনেক জায়গায় চলে গেছে। তবে এতোগুলো টাকা ফিরে পাওয়াটা কঠিন। এর আগে যুবক, ডেসটিনিসহ যেসব প্রতিষ্ঠান ছিল তাদের মোটামুটি সম্পদ বলতে কিছু ছিল। কিন্তু ইভ্যালির যিনি এমডি, তারতো কিছুই নেই। ইনি পুরোপুরি অন্যের ওপর ডিপেন্ড করে এটা করেছেন। টাকা হয়তো বিদেশেও পাচার করতে পারেন। এটা দ্রুত সমাধান করা উচিত। এটা নিয়ে হেলাফেলা করা উচিত হবে না বলেও মনে করেন বিশিষ্ট এই অর্থনীতিবিদ। তিনি বলেন, আরেকটি ব্যাপার খুবই খারাপ হয়েছে, সেটি হলো ঘটনা ঘটার পর সবাই নড়েচড়ে বসেছে। এখন বলা হচ্ছে- রেগুলেটর বডি করবে। রেগুলেটর বডি করে কোনো লাভ হবে না। এই বিষয়টি ইনফরমেশন অ্যাক্টের মধ্যে পড়ে বা ডিজিটাল ইনফরমেশন অ্যাক্টের আন্ডারে পড়ে বা কমিউনিকেশন ল’য়ের আন্ডারে পড়ে। এখানে রেগুলেটর বডি করে কোনো লাভ হবে না। এখানে যেটা করতে পারে কোম্পানির যদি রেজিস্ট্রেশন থাকে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া। তবে আগেই কিছু গাইডলাইন দিয়ে দেয়া দরকার ছিল। যেমন সাপ্লাইয়্যারদের সঙ্গে তার যে কন্টাক্ট, সেটি আগে নিশ্চিত করতে হবে। কোম্পানির রেজিস্ট্রেশনের সময় এটা উল্লেখ থাকবে যে আমার সঙ্গে এই এই কোম্পানি আছে। তাদের যখন আমি অর্ডার করবো, টাকা যাবে তারা আমাকে পণ্য দেবে। কিন্তু এই যে ইভ্যালি, এর তো কিছুই নেই। হাওয়ার ওপরে সে এইসব করেছে। এরপর ইন্ডিয়াতে যেমন ই-কমার্সের জন্য ভ্যাট, ট্যাক্স রেজিস্ট্রেশন লাগে। রেজিস্ট্রেশন ছাড়া তারা ই-কমার্স করতে পারে না। কিন্তু ইভ্যালির কিছুই ছিল না।সাবেক গভর্নর আরও বলেন, সরকারি ইনস্টিটিউশনগুলোর নজরদারির অভাবে এরা খুব সহজে এই প্রতারণামূলক কাজ করতে পেরেছে। আমাদের রেগুলেটরির যারা আছে, তারা এটাকে নজরদারি করেনি। যেমন বাংলাদেশ ব্যাংক বছর খানেক আগে হাইয়েস্ট ট্রানজেকশন দেখেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকে তো ট্রানজেকশন রিপোর্ট আছে। এক কোটি টাকার কোম্পানি কেন কোটি কোটি টাকার লেনদেন করবে? কিছুদিন বন্ধ রাখলেও আবার সেটাকে চালু করে দিলো। তখনই কিন্তু ব্যাপারটি দেখার দরকার ছিল। তারপর প্রতিযোগিতা কমিশন কি করে? যখন ৬০ হাজার টাকার পণ্য ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করলো তখনই তো ব্যবস্থা নেয়ার দরকার ছিল। এই ইনস্টিটিউশনগুলো যেমন বাংলাদেশ ব্যাংক, প্রতিযোগিতা কমিশন, তারা যদি তখনই অ্যাকশন নিতো কিংবা এটাকে তারা সমন্বিতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে বন্ধ করে দিতো তখন লোকজন একটু বাঁচতো। আর লোকজনও খুব লাফালাফি করেছে। মানুষ কম দামের এবং অস্বাভাবিক অফারের দিকে ঝুঁকেছে, সেজন্য আমাদের মানুষের মধ্যে সচেতনতা দরকার। কেউ একজন কোনো কিছুর লোভ দেখালো আর তার দিকে সবাই হুমড়ি খেয়ে পড়তে হবে! কম দামে পাওয়ার আসায় একেকজন দুইটি তিনটি করে মোটরসাইকেল অর্ডার করেছে। এটা কোনো কথা হলো? এগুলো মানুষ ঠিক করেনি। কারণ সুযোগ পেলে যে কেউ প্রতারণা করতে চাইবে। কিন্তু আমি সচেতন হবো না?সালেহ উদ্দিন আহমেদ মনে করেন, যা হওয়ার হয়ে গেছে, এখন এটা দ্রুত সমাধান করতে হবে এবং ভবিষ্যতে যেন এমন আর না হয় সেই ব্যবস্থা নিতে হবে। সেজন্য নতুন আইনের দরকার নেই। আগের যে আইন আছে সেগুলোই যথেষ্ট। ডিজিটাল আইন আছে, তারপর এখানে বাংলাদেশ ব্যাংকও ব্যবস্থা নিতে পারে। যদিও এটা সরাসরি বাংলাদেশ ব্যাংকের আন্ডারে পড়ে না। তবে কে কীভাবে টাকা-পয়সা লেনদেন করেছে তারাতো সেটা জানে। সেই অনুযায়ী তারা লিগ্যাল অ্যাকশন নিতে পারে। বিশিষ্ট এই অর্থনীতি বিশ্লেষক মনে করেন, ইভ্যালিকে নিয়ে এখন দুইভাবে কাজ করা যায়। একটি হলো ক্রিমিনাল আরেকটি হলো সিভিল। ক্রিমিনাল হলো সে টাকা চুরি বা প্রতারণা করেছে সেই হিসেবে ব্যবস্থা নেয়া। আর সিভিল- এটা ইমিডিয়েটলি করা উচিত কোর্টের মাধ্যমে; যে কীভাবে টাকা পাবে। সরকারের এখানে আর অন্যকিছু করার সুযোগ নেই। কারণ সরকারতো এই টাকা দেবে না। গ্রাহক প্রতারিত হয়েছে যাদের মাধ্যমে তাদের আইনের আওতায় এনে ব্যবস্থা নিতে হবে এবং তাদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ যা আছে সেগুলো দিয়ে গ্রাহকদের টাকা দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। তবে এতগুলো টাকা পাওয়া কঠিন হবে। এর আগে যুবক এর কথা আমরা জানি। তারাতো এখনো কোনো টাকা দেয়নি। ফলে এটার ক্ষেত্রেও দীর্ঘসূত্রিতা আছে।তিনি বলেন, মোট কথা, এখানে প্রথমত- আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যর্থতা আছে। তারা নজরদারি করেনি। দ্বিতীয়ত, মানুষের লোভ এর জন্য দায়ী, তাদের সচেতনতার অভাব ছিল। আর এইগুলোকেও নজরদারি করা; কে ক্রিকেটে স্পন্সর করে, কে ৫০ লাখ টাকা দিয়ে একটা অনুষ্ঠান করে। এটা কেমন কি যে ৫০ লাখ টাকা দিয়ে গানের অনুষ্ঠান করে? আর যারা এগুলোর রিসিভার বা যারা কন্টাক্ট করে তাদেরও তো দেখা উচিত ছিল। এরপর ক্রিক্রেট বোর্ডকে টাকা দেয়, তারা গেঞ্জি ছাপিয়ে দেয়, এই দেয় সেই দেয়। তাদের কি দেখা উচিত ছিল না? কীভাবে টাকা এলো বা ব্যবসাটা কি? সেটা তো জানা উচিত ছিল। কেউ টাকা দিলেই নিয়ে নেবো?

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত