কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

লকডাউনে খুলনার পথশিশুদের দুর্ভোগ

মানবজমিন প্রকাশিত: ২৬ জুলাই ২০২১, ০০:০০

মহামারি করোনাভাইরাস রোধে সরকার ঘোষিত কঠোর লকডাউনে বিপাকে পড়েছে খুলনায় বসবাসরত পথশিশুরা। সবকিছু বন্ধ থাকায় এসব শিশু খাবার সংকটে পড়েছে। শিশুদের জন্য মাঝে মধ্যে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন থেকে একবেলার জন্য খাবার প্যাকেট দিলেও বাকি সময় থাকে খাবারের অনিশ্চয়তা। রাত সাড়ে ১০টায় খুলনা বেতার কেন্দ্রের সামনে বসে আছে পথশিশু ইমরান (১২) ও সবুজ (১৩)। খালি পায়ে, চুলে ময়লা পড়ে জট বাঁধা অবস্থায়। কথা বলতেই ছেলেটি বলে, আমার বাবা নেই, মা থাকে পিরোজপুর। এখানে এখন একাই থাকে সে। তবে ঈদুল আজহার সময়ে গোশত কুড়িয়ে বিক্রি করেছি। এখানে রান্না করার মতো কেউ নেই। আর সেই টাকা দিয়ে ঈদে খরচ করেছি। আমরা দুই বন্ধু এখানে বসে আছি, যদি কেউ কোনো টাকা দেয়। অনেক সময় বড় লোকেরা নেমে খাবার প্যাকেট দিয়ে যায়। আর সেই খাবারের আশায় বসে আছি। কখনো শিববাড়ি মোড়, নিউ মার্কেট এলাকা, পাওয়ার হাউজ মোড়ে রাতের বেলা বসে থাকি। তবে দায়িত্বরত গার্ডরা এসে মাঝে মধ্যে উঠিয়ে দেয়, খারাপ ব্যবহার ও মারধর করে। রাতের বেলায় খুলনা রেল স্টেশন এলাকায় ঘুমাই।পথশিশু সবুজ বলে, আমার বাড়ি চাঁপাই নবাবগঞ্জ। মা মরে যাওয়ার পর বাবা আরেকটি বিয়ে করে। আর সেই সৎমা আমাকে বিনা কারণে মারধর করতো। সে কারণে একদিন ট্রেনে উঠে চলে আসি এই খুলনা রেল স্টেশন এলাকায়। সেই থেকে আমরা দুই বন্ধু একসঙ্গে আছি। আর কোনোদিন বাড়ি যাবো না। বাড়িতে সৎ মায়ের নির্যাতন আর ভালো লাগে না। তাছাড়া দীর্ঘ সময় ধরে লকডাউনে রেল স্টেশন বন্ধ রয়েছে। স্টেশন খোলা থাকলে কিছু উপার্জন হতো। ট্রেনের কামরা ও বগি পরিস্কার করলে পরিত্যক্ত কাগজ, প্লাস্টিক বোতল ছাড়াও বিভিন্ন সময়ে যাত্রীদের ব্যাগ নিয়ে যাওয়াসহ সুযোগ পেলে ভিক্ষা করলে কিছু টাকা উপার্জন হতো। তবে এখন সবকিছু বন্ধ থাকায় কোনো উপার্জন নেই। কোনোদিন খাবার জোটে আবার কোনোদিন জোটে না। মাঝে মধ্যে কিছু লোকজন আসেন খাবারের প্যাকেট নিয়ে। এসে কিছু ছবি তুলে চলে যায়। খুলনায় পথশিশুদের মৌলিক চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে কাজ করছেন কাম ফর রোড চাইল্ড (সি,আর,সি) নামের একটি সংগঠন। সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. রাসেল আহমেদ (রাজু) বলেন, আমাদের সংগঠনের তালিকা অনুযায়ী খুলনায় প্রায় ২৫০ জনের মতো ভবঘুরে পথশিশু আছে। এরা সাধারণত পুরাতন রেল স্টেশন, লঞ্চঘাট, বাস টার্মিনাল, রয়েলের মোড়, বড় বাজার এলাকায় থাকে। আমরা বর্তমান ৫০ জন পথশিশুর খাদ্য শিক্ষা, বস্ত্র ও স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করছি। লকডাউনের সময়ে আমাদের সংগঠনের কোনো আয় নেই। যে কারণে সংগঠনের সদস্যদের চাঁদা দিয়ে তাদেরকে যতটুকু পারি সামর্থ অনুযায়ী পথশিশুদের সামান্য মৌলিক চাহিদা পূরণ করি। তাছাড়া বর্তমানে অধিকাংশ পথশিশুর বাবা-মা নেই বা অনেকের বাবা আছে মা নেই অথবা বাবা-মা গ্রামের বাড়ি, শিশুরা এখানকার লোকাল অবিভাবকের কাছে থাকে। যে কারণে যখন যেমন চাঁদা ওঠে তেমন খাবার দেই। খুলনা ঘাট এলাকার বাসিন্দা নিয়াজ বলেন, করোনাকালীন লকডাউনে এ সব পথশিশু মারাত্মক খাবার সংকটে ভুগছে। সঠিক সময়ে খাবার খেতে না পারায় এরা মাত্রা অতিরিক্ত মাদক সেবন করছে। এক সময়ে এসব পথশিশুরা হয়ে যাচ্ছে ভবঘুরে এবং পাগল। এ ব্যাপারে খুলনা জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার বলেন, আমি এসব পথশিশুদের কল্যাণের জন্য একটি স্থায়ী সমাধানের প্রচেষ্টায় আছি। পাশাপাশি সেখানে এ সব ছিন্নমূল পথশিশুর খাদ্য, বাসস্থান, স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ বিভিন্ন কারিগরি শিক্ষার ব্যবস্থা করা হবে। তাছাড়া এই লকডাউনে যেসব ছিন্নমূল পথশিশুরা খাবার সংকটে ভুগছে তাদের একটি তালিকা করা হবে এবং তাদের খাদ্যর চাহিদা পূরণ নিশ্চিত করা হবে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে