কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

এমপি মোকাব্বির খানের মুখোমুখি আওয়ামী লীগ ওসমানীনগরে উত্তেজনা

মানবজমিন প্রকাশিত: ১৯ জুন ২০২১, ০০:০০

ওসমানীনগরের ইউএনও তাহমিনা আক্তার। টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ স্থাপনের স্থান নির্বাচন নিয়ে তার দিকেই অভিযোগের তীর ছুড়েছেন স্থানীয় এমপি মোকাব্বির খান। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান নাজলুকেও তুললেন কাঠগড়ায়। এতেই ওসমানীনগরে শুরু হয় বিতর্ক। দমে যাননি আওয়ামী লীগ নেতারাও। তারাও এমপি’র বিরুদ্ধে তুললেন নানা অভিযোগ। উন্নয়ন বঞ্চিত হওয়ার কারণ তুলে ধরলেন। নানা প্রকল্পে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ তুললেন। উন্নয়ন প্রশ্নে আবার একাট্টা হচ্ছে গোয়ালাবাজারবাসী। গত বৃহস্পতিবার স্থানীয় ইউনিয়ন অফিসে সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় করে আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন। এ নিয়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে ওসমানীনগরে। সিলেটে ১০টি উপজেলায় টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ স্থাপনের লক্ষ্যে জায়গা নির্ধারণের কাজ চলছে। এরমধ্যে ওসমানীনগরে টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের জন্য উপজেলার মধ্যবর্তী পয়েন্ট গোয়ালাবাজারে একটি স্থান প্রাথমিকভাবে নির্বাচন করা হয়। বিষয়টি জানার পর ক্ষুব্ধ হন সিলেট-২ আসনের সংসদ সদস্য ও গণফোরামের কেন্দ্রীয় নেতা মোকাব্বির খান। তিনি গত ৩০শে মে সিলেটের বাসায় এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে ইউএনও তাহমিনা আক্তারের ওপর ক্ষোভ ঝাড়েন। মোকাব্বির খান জানান- ওসমানীনগরে বিনামূল্যে জমি দানে আগ্রহী ব্যক্তি থাকা সত্ত্বেও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিনা আক্তারের সক্রিয় সহযোগিতায় একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট জমি অধিগ্রহণের নামে প্রায় ১০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছিল। বিষয়টি প্রমাণসহ এমপি মোকাব্বির খানের নজরে এলে তিনি যথাযথ কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করে ডিও লেটার পাঠান এবং জাতীয় সংসদে বিষয়টি উত্থাপন করেন। একইভাবে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে কারিগরি প্রশিক্ষণকেন্দ্র স্থাপনের জন্য স্থান নির্ধারণের ক্ষেত্রেও ওসমানী নগরের ইউএনও সরকারি বিধি-বিধান উপেক্ষা করে সিন্ডিকেটের স্বার্থে কাজ করে আর্থিক মুনাফা অর্জনে সচেষ্ট রয়েছেন। এ ব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্যের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হয়ে জনগণের স্বার্থকে উপেক্ষা করে নিজের এবং সিন্ডিকেটের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে আসছেন। ওই সংবাদ সম্মেলনে এমপি মোকাব্বির খান জমির একটি দলিল সাংবাদিকদের সামনে উপস্থাপন করেন। এতে প্রভাবশালী চক্রের নাম রয়েছে বলে জানিয়ে বিষয়টি উপস্থাপন করেন। এদিকে- মোকাব্বির খানের সংবাদ সম্মেলনের পর ওসমানীনগরে তোলপাড় শুরু হয়। বিষয়টি নজরে আসে আওয়ামী লীগের। গত ১লা জুন পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ। ওই সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান চৌধুরী নাজলু জানিয়েছেন- ওসমানীনগর উপজেলার ৮ ইউনিয়নের জন্য আসা এমপি মোকাব্বিরের সরকারি বরাদ্দ নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে লুটেপুটে খেয়েছেন। জোটবদ্ধ হয়ে এই লুটপাট করেছেন এমপির এপিএস কয়েছ মিয়া, বালাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা আব্দাল মিয়া ও উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক তাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান এমরান রব্বানী। তারা ৩টি ইউনিয়ন বাদ দিয়ে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পুরো টাকা উত্তোলন করে আত্মসাতের পাঁয়তারা করছেন। এমন লুটপাটের কারণে উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠন তাদের শরিক দলের এমপি মোকাব্বিরকে ইতিমধ্যে অবাঞ্ছিত, আব্দাল মিয়াকে বহিষ্কার ও এমরান রব্বানীকে বিএনপি দলীয় হাইকমান্ড থেকে শোকজ নোটিশ করেছে। এদিকে, ইউনিয়নভিত্তিক বরাদ্দ এমপির এপিএস কয়েছ তার নিজস্ব লোকজন দিয়ে প্রকল্প বানিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। অথচ চেয়ারম্যান মেম্বারদের জানানোই হয়নি। এ ছাড়াও ওসমানীনগরসহ সিলেটে ১০টি উপজেলায় টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ স্থাপনের লক্ষ্যে জায়গা নির্ধারণের জন্য পত্র আসে। এর প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দাখিল করেন ইউএনও তাহমিনা আক্তার। উপজেলা সদরে টেকনিক্যাল কলেজ হচ্ছে বিষয়টি জানতে পেরে সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বড় অঙ্কের টাকা ইনকামের মিশনে নামেন এমপি মোকাব্বিরের ব্যক্তিগত সহকারী কয়েছ মিয়ার চক্র। নেতারা বলেন- তিনি বড় অঙ্কের প্রলোভন দেখিয়ে টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ স্থাপনের জন্য জায়গা খুঁজতে থাকেন। একপর্যায়ে গোলাম কিবরিয়া নামে একজনের সঙ্গে অদৃশ্য চুক্তি হয়। এই চুক্তি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৯ কিলোমিটার দুরবর্তীস্থানে গোচারণ ভূমিতে টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ স্থাপনের দাবি তোলা হয়। এমপি মোকাব্বিরের জনসভা ও সংবর্ধনার আয়োজন করেন এপিএস কয়েছের অনুসারীদের দিয়ে। এতেই শেষ নয়, তাজপুর ও গোয়ালাবাজার ইউনিয়নে নিজের লোকদের নিয়োগ দিতে তাজপুরের সাব- রেজিস্ট্রার মো. ইউনুছকে দাঁত ভেঙে ফেলার হুমকি দেন। তার এই সংবাদ সম্মেলনে ওসমানীনগর আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল ও সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন। পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলনের পর নতুন করে ওসমানীনগরে উত্তাপ ছড়াচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার গোয়ালাবাজার ইউনিয়নের সর্বস্তরের মানুষ স্থানীয় ইউনিয়ন কার্যালয়ে সভা করে গোয়ালাবাজারে টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন। গোয়ালাবাজার ইউনিয়নবাসীর ব্যানারে আয়োজিত সভায় বক্তারা বলেন- গত কয়েক যুগ ধরে গোয়ালাবাজার পৌরসভা বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে আসলেও আজও তা উপেক্ষিত রয়েছে। সরকারি সব ধরনের অফিস আদালত গোয়ালাবাজারকে পাশ কাটিয়ে তাজপুরে করা হচ্ছে। এমন বৈষম্য আর মেনে নেয়া হবে না বলে জানান বক্তারা। ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মানিকের সভাপতিত্বে এবং বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তাজ উদ্দিন ও ছাত্রলীগ নেতা মিজানুর রহমানের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন, সাবেক চেয়ারম্যান পরী মজনু মিয়া, হারুন মিয়া, আওয়ামী লীগ নেতা আলাউর রহমান আলা, শাহ নুরুর রহমান সানুর, মিয়াফর আলী, জাবেদ আহমদ আম্বিয়া, ডিকে জয়ন্ত, মনির আলী, দিলদার আলী, ব্যবসায়ী সোনাফর আলী সুনাই, পরিমল দেব, বেলাল আহমদ, রুমেল আহমদ, মকসুদ আলী, সাংবাদিক আবদুল মতিন প্রমুখ।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত