কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

রংপুরে গৃহবধূর গোসলের ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল অতঃপর...

মানবজমিন প্রকাশিত: ১৬ জুন ২০২১, ০০:০০

রংপুরে গোসলের ভিডিও ধারণ করে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে এক গৃহবধূকে একাধিকবার ধর্ষণ ও মোটা অঙ্কের টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে বখাটে আরিফুল ইসলাম (২৫)-এর বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে নগরীর বাহার কাছনা এলাকায়। এ ঘটনায় পুলিশ মামলা না নিয়ে উল্টো স্থানীয় মাতব্বরদের মাধ্যমে মীমাংসার জন্য চাপ প্রয়োগ করছে। প্রভাবশালী আরিফুলের পরিবারের দায়ের করা মারপিটের মামলাও রেকর্ড করা হয়েছে ভুক্তভোগী পরিবারের বিরুদ্ধে। বিষয়টি জানাজানি হলে আরিফুলসহ পরিবারের লোকজন গা-ঢাকা দিয়েছে। সূত্রমতে, গত এপ্রিল মাসে রংপুর নগরীর বাহার কাছনা এলাকার এক দিনমজুরের গৃহবধূ’র (২০) গোসলের সময় টিনের বেড়ার ফাঁক দিয়ে ভিডিও ধারণ করে পার্শ্ববর্তী আব্দুর রাজ্জাকের বখাটে ছেলে আরিফুল। এরপর সেই গোসলের ভিডিও দেখিয়ে আরিফুল ওই গৃহবধূর কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল করে দেবে বলে হুমকি দেয়। নিজ সংসার বাঁচাতে ওই গৃহবধূ বিষয়টি গোপন রেখে জমি কেনার জন্য সঞ্চিত ৪০ হাজার টাকা আরিফুলকে দেয় এবং ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে না দিতে অনুরোধ করে। কিছুদিন পর আবার আরিফুল ওই গৃহবধূকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে ৬০ হাজার টাকা নেয়। গত ৯ই এপ্রিল রাতে গৃহবধূর স্বামীর অনুপস্থিতিতে আরিফুল বাড়িতে ঢুকে আরও ১০ হাজার টাকা দাবি করে এবং ওই সময় চিৎকার করলে ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেবে বলে হুমকি দেয়। ওই গৃহবধূ আরিফুলের পা ধরে অনুরোধ করে এবং তার কাছে আর কোনো টাকা নেই বলে জানায়। এ সময় আরিফুল গৃহবধূকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। পরদিন একইভাবে আরিফুল ওই গৃহবধূর বাড়িতে ঢুকে ধর্ষণ করে এবং ধর্ষণের ভিডিও ফোনে ধারণ করে। আরিফুল তার কয়েকজন বন্ধুকে ধারণ করা অর্ধনগ্ন ও ধর্ষণের ভিডিওটি সরবরাহ করলে বিষয়টি জানাজানি হয়। এরপর গৃহবধূ বিষয়টি তার পরিবারের লোকজনকে জানায়। এরইমধ্যে আরিফুলের পরিবারের লোকজন তাদের বাড়িতে বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য গৃহবধূর পরিবারকে ডাকে। ২৫শে মে রাত ১০টায় ওই গৃহবধূর স্বামী, ভাসুরসহ পরিবারের অন্যরা আরিফুলদের বাড়িতে গেলে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী বাক-বিতণ্ডা এবং মারামারির ঘটনা ঘটায়। এ ঘটনায় ওই গৃহবধূর ভাসুরের বাম হাত কেটে যায়। এ সময় স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে তাদের ভয়-ভীতি দেখায় আরিফুলের পরিবার। এ ঘটনায় পুলিশকে ম্যানেজ করে আরিফুলের পরিবার মিথ্যা হামলার নাটক সাজিয়ে উল্টো ওই গৃহবধূর পরিবারের নামে থানায় মামলা করে। কিন্তু ওই গৃহবধূর পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় একাধিকবার গেলেও গৃহবধূর অভিযোগ গ্রহণ না করে আরিফুলের পরিবারের সঙ্গে মীমাংসা করার চাপ প্রয়োগ করে থানা পুলিশ এমন অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। ২৫শে মে’র পর থেকে আরিফুলের বাড়ির সামনে থেকে ওই পরিবারের যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ করে দেয় আরিফুলের পরিবার। ফলে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে ওই ভুক্তভোগী পরিবার। পরে স্থানীয় অধিবাসীদের জোরালো প্রতিবাদে তোপের মুখে গত রোববার সন্ধ্যায় রাস্তাটি উন্মুক্ত করে দেয় আরিফুলের পরিবার। নগ্ন ভিডিও ধারণ ও জিম্মি করে ধর্ষণের ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে গা-ঢাকা দেয় আরিফুল ও পরিবারের সদস্যরা। ওই গৃহবধূর ভাসুর বলেন, আরিফুলের বাবা তাদের বাড়িতে মীমাংসার জন্য ডাকলে আমরা যাই। তাদের বাড়িতে আগে থেকে দা-ছোরা নিয়ে তারা প্রস্তুত ছিল। আমরা যাওয়ার পর আমাদের ওপর হামলা চালায় আরিফুল, আরিফুলের বাবা আব্দুর রাজ্জাক (৪৫), চাচা রেজাউল ইসলাম (৪০), ইসলামুল হক (২৫)। এতে আমার হাত কেটে যায়। এ ঘটনার পর আমরা থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ টালবাহানা শুরু করে এবং ঘটনাটি মীমাংসার জন্য বলে। এখন আরিফুলের পরিবার আমাদের নিয়মিত হুমকি দিচ্ছে। আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তারা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশসহ সবাই তাদের পক্ষে। আমরা এখন বড় অসহায়। ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ বলেন, পুলিশ, মাতব্বর সবাই বলছে মীমাংসা করে। আমরা গরিব বলে কেউ আমাদের পাশে নেই। দেশে যদি আইন থাকে তবে আমি অবশ্যই ধর্ষণের ন্যায্য বিচার পাবো। আমি আরিফুলের ফাঁসি চাই।স্থানীয় এলাকাবাসী অজিহার আলী বলেন, আমরা এলাকাবাসী ওই গৃহবধূকে নিয়ে থানায় গিয়েছিলাম মামলা করতে। ওসি বলে আরিফুল ভিডিও করেছে, ধর্ষণ করেছে, মারামারি করেছে এর প্রমাণ কি? পরে আমরা ভিডিও, আরিফুলের স্বীকারোক্তিমূলক কলরেকর্ড নিয়ে থানায় অভিযোগ করেছি। এরপর থেকে থানা পুলিশ ৩-৪ দিন ধরে ঘুরছে আর আপস করার জন্য চাপ দিচ্ছে। এ বিষয়ে আরিফুলের দাদা মাদ্রাসার দপ্তরি আফছার আলী বলেন, আমার নাতির নামে মিথ্যা মামলা দিয়েছে তারা। সে ঢাকায় চাকরির খোঁজে গিয়েছে।এ বিষয়ে হারাগাছ থানার ওসি রেজাউল করিম বলেন, বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ঘটনাটি দেখছেন। আমি এর বেশি কিছু বলতে পারবো না।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত