কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

ভূমিকম্পের নয়া ফল্ট নিয়ে সিলেটে শঙ্কা

মানবজমিন প্রকাশিত: ১০ জুন ২০২১, ০০:০০

বিপদ কাটছে না সিলেটবাসীর। বার বারই কেঁপে উঠছে সিলেট নগরী। বিশেষজ্ঞদের ধারণা- সিলেট নগরীর নিচে রয়েছে ভূমিকম্পের নয়া ফল্ট। সেটি হতে পারে ‘ডেঞ্জার জোন’ ডাউকীর শাখা ফল্ট। অথবা নিষ্ক্রিয় ফল্ট সক্রিয় হয়ে উঠতে পারে। এ কারণে স্থানীয়ভাবে ভূমিকম্পে কেঁপে উঠছে সিলেট। এ অবস্থায় ভূমিকম্পের আতঙ্ক গ্রাস করেছে সর্বত্রই। কখন কী হয় সেই আশঙ্কায় রয়েছেন কোটি মানুষ। সবচেয়ে বেশি চিন্তিত নগরের বাসিন্দারা। গত এক দশকে সিলেটে প্রতিযোগিতা করে বহুতল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এখন অট্টালিকার শহরও বলা হয় সিলেটকে। তবে, সতর্ক সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। সাফ জানিয়ে দিয়েছেন- অনুমতি এবং বিশেষজ্ঞদের মতামত ছাড়া নির্মাণ করা যাবে না বহুতল ভবন। গত ৫-৬ বছরে যেসব ভবন নির্মাণ করা হয়েছে সেগুলো নিয়ম মেনেই করা হচ্ছে। ভূমিকম্প সহনীয় ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। সিলেটের ঘন ঘন ভূমিকম্প নিয়ে চিন্তিত সংশ্লিষ্টরা। বিশেষ করে শাহ্‌জালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরাও তাৎক্ষণিক বিষয়টি নিয়ে কোনো সিদ্বান্তে পৌঁছতে পারছেন না। গতকাল বিশ্ববিদ্যালয়ে এ নিয়ে তারা বৈজ্ঞানিক সেমিনার করেছেন। এতে উপস্থিত ছিলেন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীও। ভূমিকম্প থেকে সিলেটবাসীকে স্বস্তি দিতে উত্তর খুঁজছেন মেয়র আরিফ। এখনই মিলছে না সেই উত্তর। তবে- ক্ষয়ক্ষতি এড়ানোর সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন তিনি। এতে এগিয়ে এসেছেন সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন। মেয়রের পক্ষ থেকে সিলেটের ঝুঁকিপূর্ণ প্রায় ২৪ টি মার্কেট ও স্থাপনা বন্ধ ঘোষণা করেছেন। কোনো কোনো স্থাপনাকে করেছেন পরিত্যক্ত ঘোষণা। অধিক বয়সী এ ভবনগুলোকে প্রায় ৪ বছর আগেই তালিকা করে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান। তিনি জানান- ঝুঁকিপূর্ণ রাজা ম্যানশন, সিটি সুপার মার্কেট, মিতালী ম্যানশনসহ ৬ টি মার্কেট বন্ধ রয়েছে। গত ২৯শে মে সিলেট নগরীতে পরপর ৫ বার ভূমিকম্প। এসব ভূমিকম্পে কেঁপে উঠে সিলেট নগর। এরপর ৩০শে মে ভোরে আরেক দফা ভূমিকম্প হয়। ওই সময় বিশেষজ্ঞরা ১০ দিন সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছিলেন। তাদের পরামর্শমতো ঠিক ৯ দিনের মাথায় সোমবার আরও দুই দফা ভূমিকম্প হয়েছে সিলেটে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন- প্রতি একশ’ বছর পরপর সাধারণত বড় ধরনের ভূমিকম্প হয়। ১৮৯৭ সালে সর্বশেষ বড় ধরনের ভূমিকম্প হয়েছিল সিলেটে। এরপর থেকে সিলেটে আসাম প্যাটার্নের ভবন নির্মাণ করা হয়েছিল। এরপর ভূমিকম্পের বিষয়টি ভুলে সিলেটে অট্টালিকা নির্মাণ করা হয়েছে। এ কারণে এখন সিলেটে ভূমিকম্প হলে ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা বেশি হবে। ঘন ঘন কম মাত্রার ভূমিকম্প বেশি মাত্রার ভূমিকম্পের জানান দেয় বলে জানিয়েছেন শাহ্‌জালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ও ডিন প্রফেসর ড. মোস্তাক আহমদ। তার মতে- স্থানীয়ভাবে উৎপত্তি হওয়া ফল্ট থেকে সিলেটে ভূমিকম্প হতে পারে। কারণ- এই ভূমিকম্প কেবল সিলেট নগর এবং আশপাশের এলাকায় অনুভূত। এ কারণে সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ তার। এদিকে- সিলেটে যেসব ভূমিকম্প হচ্ছে সেগুলোর উৎপত্তি নগর এবং আশপাশের এলাকায়। এর মধ্যে সিলেটের জৈন্তাপুর হচ্ছে একটি। জৈন্তাপুরে যদি ফল্ট থেকে ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয়ে থাকে তবে সেটি ডাউকীর খুব কাছাকাছি। ফলে জৈন্তাপুরে নতুন করে ফল্ট সৃষ্টি হতে পারে। ডাউকী নড়ে উঠলে শুধু সিলেট নয়, ভারত ও বাংলাদেশের একাংশে ক্ষয়ক্ষতি হবে। এছাড়া- সোমবার যে ভূমিকম্প হয় সেটির উৎপত্তিস্থল ছিল- সিলেট শহরতলীর জালালপুরের কাদিপুরে। এই ভূমিকম্পও নতুন করে সৃষ্টি হওয়া ফল্ট থেকে হতে পারে। এর বাইরে ছাতক ও জগন্নাথপুরেও ছিল ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল। গবেষণায় দেখা গেছে- যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ভূমিকম্প নিয়ে  যৌথভাবে কাজ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপিত আর্থ অবজারভেটরি। এ আর্থ অবজারভেটরির তথ্যানুসারে, বাংলাদেশে ‘বিপজ্জনক ভূ-কম্পনের’ দু’টি প্রধান উৎস আছে। এর একটি ‘ডাউকী ফল্ট’। অন্যটি  টেকনাফ-পার্বত্য পাহাড়ি অঞ্চল সাবডাকশন জোন। ৩০০ কিলোমিটার দীর্ঘ ডাউকী ফল্ট ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলং হয়ে বাংলাদেশের সিলেটের সীমান্তঘেঁষে ভুটান পর্যন্ত বিস্তৃত। ডাউকী ফল্টে ভূ-গর্ভের বিচ্যুতিতে বিপুল পরিমাণ শক্তি জমা হয়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। সিলেট আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী বলেন, সিলেটের ভুমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ডাউকী ফল্টের কাছাকাছি। নতুন করে কোনো ফল্ট সৃষ্টি হচ্ছে কি না সেটি গবেষণার বিষয় বলে জানান তিনি। শাহ্‌জালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. জহির বিন আলমের মতে- সিলেটে নিষ্ক্রিয় থাকা কোনো ফল্ট লাইন সক্রিয় হয়ে উঠেছে কি না, তা পরীক্ষা করতে হবে। যদি সক্রিয় ফল্ট থেকে থাকে তাহলে সেটি চিন্তার বিষয় বলে জানান তিনি।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত