২৬ দিনেই পর্দা নামছে বই মেলার
করোনা পরিস্থিতির মধ্যে গত ১৮ মার্চ থেকে শুরু হওয়া বই মেলার পর্দা নামছে ২৬ দিনেই। এর আগে পহেলা বৈশাখ অর্থাৎ ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত মেলা পরিচালনার সিদ্ধান্ত থাকলেও তা দুইদিন কমিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। বই মেলার আয়োজকরা বলছেন, ১৪ এপ্রিল থেকে কঠোর লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় ১৩ এপ্রিলের মধ্যে যাতে প্রকাশকরা তাদের জিনিসপত্র এবং বই সরিয়ে নিতে পারেন তাই এমন সিদ্ধান্ত।
প্রতিবছর ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম দিন থেকে বাঙালির প্রাণের মাসব্যাপী উৎসব ‘অমর একুশে গ্রন্থ মেলা’ শুরু হলেও এবছর করোনা মহামারির কারণে প্রায় দেড় মাস পিছিয়ে গত ১৮ মার্চ শুরু হয়। গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বই মেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুরু হওয়ার পরও কয়েক দফা পরিবর্তন করা হয় মেলার সময়সূচী।
বইমেলা: স্টলের খরচ ওঠেনি, প্রত্যাশা এখন ‘বিশেষ সুবিধা’
মহামারীর মধ্যে অমর একুশে গ্রন্থ মেলার ধারাবাহিকতা রক্ষায় স্বস্তি থাকলেও হিসাবের খেরোখাতা মিলছে না প্রকাশক-বিক্রেতাদের। মেলার সাজসজ্জা ও কর্মীদের বেতন-ভাতা দিতে পুঁজিতেই হাত দিতে হচ্ছে তাদের।
মন খারাপ করা এবারের বইমেলা শেষের আগের দিন রোববার হিসাবের খাতায় স্টল ও সাজসজ্জা নির্মাণের খরচই যেন মেলাতে পারছে না অনেক প্রকাশনী। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ২৫ শতাংশও বিক্রি হয়নি বলে হতাশ প্রকাশকরা।
১২ এপ্রিল শেষ হচ্ছে অমর একুশে বইমেলা। করোনা পরিস্থিতিতে এ বছর মেলা হবে কিনা তা নিয়েই ছিল দ্বিধা। অবশেষে ১৮ মার্চ মেলা শুরু হলেও লকডাউন ও করোনা সংক্রমণের কারণে ক্রেতা আসেনি বললেই চলে। প্রতিবছরের মতো দীর্ঘলাইন তো দূরে থাক, লেখকদেরও দেখা যায়নি আড্ডা দিতে। আর তাই প্রকাশকরা বলছেন, অন্যান্য খাতের মতো প্রকাশনা শিল্পকেও টিকিয়ে রাখতে সরকারের সমর্থন জরুরি।
রবিবার বইমেলায় মাঝারি ও ছোট প্রকাশনীর কর্ণধারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেলো, তাদের অনেকের বিক্রি শূন্যের ঘরে ছিল টানা কয়েকদিন। দিনে বড়জোর পাঁচ-ছয়শ’ টাকার বই বিক্রি হয়েছে। এমন প্রকাশনীও পাওয়া গেছে যাদের এক সপ্তাহে একটি বইও বিক্রি হয়নি। বিশেষ করে ছোটদের জন্য মেলায় এবার আলাদা কোনও ব্যবস্থা না থাকায় শিশু বিষয়ক প্রকাশনীগুলোর বিক্রি ছিল একেবারেই কম।
ইকরিমিকরির প্রকাশক মাহবুবুল হক জানালেন, দিনে সর্বোচ্চ ছয়শ’ টাকার বিক্রি হয়েছে। গত পরশু বিক্রি হলো মাত্র ৭৫ টাকার। স্টলের খরচও ওঠেনি অনেক প্রকাশকের। এই ঘাটতি কীভাবে পূরণ হবে জানা নেই।
বইমেলায় ক্ষোভ ঝাড়লেন প্রকাশকরা
দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি হওয়ায় নির্ধারিত সময়ের দু'দিন আগেই ১২ এপ্রিল শেষ হচ্ছে অমর একুশে গ্রন্থমেলা। শনিবার (১০ এপ্রিল) সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদকে উদ্ধৃত করে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা ফয়সাল হাসান গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান। আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত বইমেলা চলার কথা ছিল।
সাধারণত প্রতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে বইমেলা শুরু হয়ে চলে পুরো মাস। এবার করোনাভাইরাস মহামারির কারণে শুরু থেকেই অনিশ্চয়তায় পড়ে বইমেলা। করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে এ বছর একুশে বইমেলা ভার্চুয়াল বা অনলাইনে করার কথা উঠেছিল। পরে অনিশ্চয়তার রেশ কাটিয়ে গত ১৮ মার্চ উদ্বোধন করা হয় ৩৭তম অমর একুশে বইমেলার।