কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

মশার দখলে রাজধানী

মানবজমিন প্রকাশিত: ০৪ মার্চ ২০২১, ০০:০০

মশায় অতিষ্ঠ রাজধানীর জনজীবন। বস্তি থেকে অভিজাত এলাকা। সর্বত্রই মশার আক্রমণ। এ যেন মশার রাজধানী। দুই সিটি করপোরেশন মশা নিয়ন্ত্রণে নানা চেষ্টা করলেও কিছুতেই নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না। বলা হচ্ছে দীর্ঘদিন একই ওষুধ ছিটানোয় মশা ওষুধ সহনশীল হয়ে পড়েছে। এতে ওষুধ পুরো কার্যকর হচ্ছে না। এছাড়া নগরীর খাল, নালা পরিষ্কার না করায় বেড়েছে প্রজনন স্থল। যেসব এলাকায় মশার প্রকোপ বেশি সেখানে মশারি, কয়েল আর স্প্রেও কোনো কাজে আসছে না। কীটতত্ত্ববিদদের তথ্য বলছে, ঢাকায় অতীতের চেয়ে মশার ঘনত্ব বেড়েছে প্রায় ৪গুণ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শুষ্ক মৌসুমে স্বাভাবিকভাবেই মশার বিস্তার ঘটে। হালকা গরমে মশার ডিম একসঙ্গে ফুটে যায়। এতে মশার সংখ্যা এমনিতেই বৃদ্ধি পেতে থাকে। এ ছাড়া দিন শেষে সন্ধ্যা নামার আগেই নালা-নর্দমা, জলাশয় ও ডোবা থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে মশা বেরিয়ে আসে। তা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে বাড়তে পারে ম্যালেরিয়া, ফাইলেরিয়া, চিকনগুনিয়ার মতো মশাবাহিত রোগ। সিটি করেপারেশন আগে থেকেই মশার প্রতি কঠোর পদক্ষেপ নিলে নগরবাসীকে এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হতো না। বিভিন্ন এলাকার মশককর্মীদের দায়িত্বে অবহেলার ফল এই শহরের মানুষ ভোগ করছে। তারা সিটি করপোরেশনের বরাদ্দ অনুযায়ী বাসাবাড়ির আঙিনা, জলাশয়, ডোবা,ও ড্রেনে ওষুধ ছিটালে মশার বিস্তার ঘটতো না। বাড়লেও নিয়ন্ত্রণে আনা যেতো। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেকোনো কীটনাশক যদি এক টানা ৫ বছর ব্যবহার করা হয়, সে ক্ষেত্রে যেকোনো প্রতিরোধ অসহনশীলতা তৈরি হয়ে যায়। এ ছাড়া মশা যেহেতেু জলাশয়ে বেশি বংশবিস্তার করে সেক্ষেত্রে সেখানে সমপরিমাণ ম্যালাথিয়ন নিয়ে মশা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না। বড় ছোট জলাশয়ে পানির ভলিউমের ভিন্নতা রয়েছে। সেখানে যে স্প্রেম্যান কাজ করছেন, তাকে স্প্রে করার আগে সব জানতে হবে। তারপর কীটনাশক স্প্রে করতে হবে। তা না হলে মশার লার্ভা নষ্ট হবে না। তারা বলছেন, মশা নিয়ন্ত্রণ করতে হলে আগে মশককর্র্মীদের ট্রেনিং দিতে হবে। কি পরিমাণ ওষুধ ফগিং করতে হবে সেই সিস্টেমটা তাদের জানাতে হবে। শুধু ডিউটি করলেই হবে না। একটি জায়গাতে কতোদিন পর পর ওষুধ দিতে হবে তা সিটি করপোরেশনের ঠিক করে দিতে হবে। সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তাসহ এলাকা ভিত্তিক কাউন্সিলরগণকে সরজমিন এসব তদারকি করতে হবে। তবেই মশা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে। কীটতত্ত্ববিদ ও গবেষক অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার মানবজনিনকে বলেন, সিটি করপোরেশন যেসব ওষুধ ছিটাচ্ছে তার মান ঠিক আছে। ওষুধ ছিটানোর পাশাপাশি সিটি করপোরেশনের ডোবা, জলাশয় পানি প্রবাহ চলমান করে দিতে হবে। নর্দমা ও ডোবার পচা পানিতে মশার বিস্তার বেশি হয়। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ড্রেনগুলোতে পানি প্রবাহ নেই, সেখানে মশা নিরপাদ স্থান হিসেবে বেছে নেয়। এবং বিস্তার বাড়তে থাকে। ফলে কয়েকদিন পরপর ড্রেনের ঢাকনা খুলে ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করতে হবে। একইসঙ্গে ডোবায় লার্ভিসাইড, অ্যাডাল্টিসাইট কিংবা গাপ্পি ফিশ ছাড়তে হবে। এ ছাড়া প্রতিটি কীটনাশকেরই একটি কার্যকাল রয়েছে। এরপর তার ব্যবহার করা ঠিক না। নতুন ওষুধ ছিটাতে হবে। ওষুধ ছিটানোর সময় এবং পরিমাণ সঠিকভাবে নির্ধারণ করা হলে মশা নিধন করা সম্ভব হবে। প্রতি এক সপ্তাহ পরপর ওষুধ ছিটাতে হবে। নগর বিশ্লেষক স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন মানবজমিনকে বলেন, ঢাকায় মশা বৃদ্ধির বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে। তবে লোকালয়ে মশা বৃদ্ধির কারণ বিভিন্ন খাল ও ড্রেনগুলো ময়লায় ভরে আছে। ড্রেনগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না। ফাঁকা স্থান দিয়ে মশা ভেতরে ঢুকে সেখানে বিস্তার ঘটায়। এ ছাড়া সরকারি-বেসরকারি সব বিল্ডিংয়ের ছাদেও অপরিচ্ছন্ন, নোংরা ও পানি জমে থাকে। সেখানে মশার উপদ্রব রয়েছে। বিভিন্ন ভবনের বেজমেন্টে মশার ব্যাপক বিস্তার দেখা যায়। নির্মাণাধীন ভবনের বেজমেন্টে পানিও জমছে। সেসব স্থানে মশার উৎপাত দেখা যায়। এখন সিটি করপোরেশনকে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। যাতে ড্রেন, ভবনের ছাদ এবং বেজমেন্টে কোনোভাবেই মশার উপদ্রব না বাড়ে।ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জোবায়দুর রহমান মানবজমিনকে বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় নিয়মিতভাবে ১০টি অঞ্চলে মশার ওষুধ ছিটানো হচ্ছে। ওষুধের মান পরীক্ষা করে এইসব ওষুধ ছিটানো হয়। এই সময়ে মশার উৎপাত কিছুটা বেশি থাকে। আমরা শিডিউল অনুযায়ী ওষুধ দেই। ড্রেনগুলোকে পরিষ্কার করছি, সেখানে লার্ভিসাইড দিচ্ছি। জলাশয়গুলোতে পরিক্ষামূলকভাবে ড্রোনের সাহায্যে কিটনাশক দেয়া হয়েছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, আগামী দুই সপ্তাহ পর হতে মশা নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত