কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

মোদির ঢাকা সফর, নানা আলোচনা

মানবজমিন প্রকাশিত: ০৩ মার্চ ২০২১, ০০:০০

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রস্তাবিত বাংলাদেশ সফরের প্রস্তুতিকর্ম বেশ জোরেশোরেই এগিয়ে চলছে। এরইমধ্যে তার সফরের অ্যাডভান্স টিম ঘুরে গেছে। তারা ঢাকা এবং ঢাকার বাইরে মোদির সফরের সম্ভাব্য কর্মসূচির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ভেন্যুগুলোর যাতায়াত, প্রটোকল তথা সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়াদি খতিয়ে দেখে গেছেন। আগামী ২৬ ও ২৭শে মার্চের প্রস্তাবিত ওই সফরের আলোচ্যসূচিসহ অন্যান্য প্রস্তুতি চূড়ান্ত করতে কাল ঢাকা আসছেন দিল্লির বিদেশমন্ত্রী ড. সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্কর। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপি গতকাল গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপে বলেন, সফরটি সফল করতে সর্বোতভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ। ২৬শে মার্চ প্রধানমন্ত্রী মোদির আসার কথা। চলমান বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর যৌথ আয়োজনে অংশ নেবেন তিনি। মূলত তার সফর চূড়ান্ত করতেই দিল্লির বিদেশমন্ত্রী ঢাকা আসছেন জানিয়ে তিনি বলেন, সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বিদেশমন্ত্রীর বৈঠক হবে। মোদির সফরে ঢাকার প্রত্যাশা কি? জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ওই সফরে ট্রানজিট, কানেক্টিভিটি, বাণিজ্য, পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনাসহ দুই দেশের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা ও সমঝোতার মাধ্যমে বিদ্যমান বন্ধুত্বের নবদিগন্তের সূচনা হবে বলে ঢাকা আশা করে। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের গভীরতা নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, দুই ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী মধ্যে আলোচনার অনেক অনেক ইস্যু থাকে। যুগান্তকারী কানেক্টিভিটিসহ আলোচনার টেবিলে থাকা সব ইস্যু নিয়েই কথা হবে। একটি ট্রেন সার্ভিস চালু হবে ওই সফরে। অমীমাংসিত ইস্যুগুলো নিয়েও কথা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, কোভিডের কারণে তৈরি হওয়া ইকোনমিক ইমার্জেন্সি, কাঁচামাল আমদানি, স্থলবন্দর ব্যবস্থাপনা পানি, নদীসহ সব বিষয়ে কথা হবে। একটি কম্প্রিহেনসিভ পার্টনারশিপের প্রস্তাবও বিবেচনায় রয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, একটি দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠতা বিশেষত বাংলাদেশ-ভারত ঘনিষ্ঠতায় অন্য দেশ কী ভাববে? সেই চিন্তার অবকাশ নেই। এমন চিন্তা বা আলোচনা বহু আগেই হয়েছে এবং তা থেমে গেছে। ১০ বছর ধরে ঝুলে থাকা বহুল আলোচিত তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তির অগ্রগতি প্রশ্নে প্রতিমন্ত্রী বলেন, মোদির সফর তো বটেই সব সময়ই এটি বাংলাদেশের প্রয়োরিটি। উল্লেখ্য, ২৬শে মার্চের অনুষ্ঠানের পরদিন বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত গোপালগঞ্জ জেলায় যাবেন মোদি। সেখানে তিনি টুঙ্গিপাড়াস্থ বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধার্ঘ অর্পণ করবেন। পরে তিনি গোপালগঞ্জের ওড়াকান্দিতে মতুয়া ধর্মমতের প্রবক্তা হরিচাঁদ ঠাকুরের বাড়িতেও যাবেন। সেখান থেকে ফেরার পথে তিনি সাতক্ষীরার যশোরেশ্বরী মন্দিরে যেতে পারেন। উল্লেখ্য, মোদির বরিশালের উজিরপুরে একটি মন্দিরে যাওয়ার কথা ছিল। তার এডভান্স টিমও সেই মন্দির ঘুরে দেখেছিল। কিন্তু শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তার বরিশাল যাত্রা বাতিল হয়েছে বলে জানা গেছে। এদিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরের সঙ্গে ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিকে যুক্ত করে জার্মান সংবাদ মাধ্যম ডয়চে ভেলে একটি রিপোর্ট করেছে। সেই রিপোর্টে বলা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচন-পর্বে ঢাকা সফরে যেতে পারেন নরেন্দ্র মোদি। সেখানে মতুয়া মহাসংঘের প্রতিষ্ঠাতা হরিচাঁদ ঠাকুরের বাড়িতে যেতে পারেন তিনি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের বক্তব্য- পশ্চিমবঙ্গের ভোটের মৌসুমে মোদি ঢাকা সফরকে রাজনৈতিক ভাবেও ব্যবহার করতে চাইছেন। পশ্চিমবঙ্গের একটি অংশে বিপুল সংখ্যক মতুয়া সম্প্রদায়ের বসবাস। উত্তর ২৪ পরগনা, নদীয়ার মতো জায়গায় মতুয়া ভোট একটি বড় ফ্যাক্টর। এই পরিস্থিতিতে মতুয়ার ধর্মমতের প্রতিষ্ঠাতা হরিচাঁদ ঠাকুরের বাড়ি দেখতে চান মোদি। সেখানে গেলে পশ্চিমবঙ্গের মতুয়া সম্প্রদায়কে একটি বার্তা দিতে পারবেন তিনি। গত লোকসভা নির্বাচনে মতুয়া অধ্যুষিত বনগাঁ আসনে বিজেপি জিতেছিল। সেখানকার সাংসদ মতুয়া পরিবারের সদস্য শান্তনু ঠাকুর। কিন্তু বিধায়ক তৃণমূলের মমতা ঠাকুর। তিনিও মতুয়া পরিবারের সদস্য। লোকসভা ভোটের পরে বিজেপি এনআরসি এবং সিএএ নিয়ে যখন অগ্রসর হয়, তখন মতুয়াদের মধ্যে বিজেপিবিরোধী হাওয়া তৈরি হয়েছিল বলে মনে করা হয়। মাঝে মতুয়াদের আপত্তির কারণে বনগাঁয় বিজেপির সভাও বাতিল করতে হয়েছিল। ফলে এবারের নির্বাচনে নতুন করে মতুয়াদের মন পেতে চাইছে বিজেপি। এবং সে কারণেই মোদি হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মস্থানে যেতে চান বলে বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন। সেখানে মোদির সঙ্গে শান্তনু ঠাকুরও যেতে পারেন বলে শোনা গেছে। এ বিষয়ে শান্তনু ডয়েচে ভেলেকে বলেছেন, ‘যাওয়ার কথা আছে। তবে শেষ পর্যন্ত কী হবে জানি না।’ মোদি চাইলেও বাংলাদেশ প্রশাসন মোদিকে সেখানে নিয়ে যাবে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মভিটে অত্যন্ত জনবহুল অঞ্চল। সেখানে মোদির কনভয় আদৌ নিয়ে যাওয়া যাবে কিনা, নিরাপত্তার সমস্ত ব্যবস্থা করা যাবে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। যদিও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র ডয়েচে ভেলেকে জানিয়েছেন, গত সোমবার নয় সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল সেখানে গিয়ে এলাকা দেখে এসেছে। এ ছাড়াও বরিশালের শিকারপুরে সুগন্ধা শক্তিপীঠ দেখার ইচ্ছাও প্রকাশ করেছেন মোদি। যেতে চেয়েছেন কুষ্টিয়ার শিলাইদহে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়িতেও। ২৭শে মার্চ থেকে পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচন শুরু হচ্ছে। আট দফার ভোট শেষ হবে ২৯শে এপ্রিল। এই সময়ে মোদির ঢাকা সফর এবং হরিচাঁদ ঠাকুরের বাড়িতে যেতে চাওয়া, রবীন্দ্রনাথের কুঠিবাড়ি দেখতে চাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ রাজনৈতিক ভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি কোথায় কোথায় যেতে পারবেন, তা ৪ তারিখের পরেই জানা যাবে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত