কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

খুলনায় ফের বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা

মানবজমিন প্রকাশিত: ২৭ নভেম্বর ২০২০, ০০:০০

চলতি মাসের প্রথম দিকে খুলনায় করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কম ছিল, তেমনি মৃত্যুও ছিল কম। মাসের শেষের দিকে এসে আস্তে আস্তে বাড়তে শুরু করেছে করোনা রোগীর সংখ্যা। শীতের প্রভাব আস্তে আস্তে বাড়তে থাকায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যাও বেড়ে যাচ্ছে। ২৫শে নভেম্বর খুলনা ডায়াবেটিস হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত সিদ্দিকা হামিদা (৩৯) নামে এক গৃহবধূ মারা যায়। সে গোপালগঞ্জ মিয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা মো. কামরুল হাসানের স্ত্রী। গত ২৪শে নভেম্বর রাতে করোনায় পজেটিভ হয়ে তিনি ভর্তি হয়েছিলেন। ১৮ই নভেম্বর থেকে গত ২৪শে নভেম্বর পর্যন্ত গত এক সপ্তাহ করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে ৪ জন। এছাড়া মুমূর্ষু অবস্থায় আইসিইউতে ভর্তি রয়েছে ২ জন। করোনা ডেডিগেটেড হাসপাতালে ভর্তি আছে ৯ জন। গত ২০২০ সালের ১০ই মার্চ থেকে এ পর্যন্ত খুলনায় করোনায় মারা যায় ১০৭ জন। এছাড়া শনাক্ত হয় ৬ হাজার ৮১৮ জন।এদিকে খুলনা সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিট প্রস্তুত রয়েছে বলে খুলনার সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদ জানান। তিনি বলেন, হঠাৎ করে গত এক সপ্তাহে আবারো করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। শীতে করোনা মোকাবিলার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙগুলোতে সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। পাশাপাশি করোনা প্রতিরোধে সচেতনতামূলক সভা অব্যহত রয়েছে।খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এনেসথেসিয়ান বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আগে করোনার অল্প সিনটম নিয়ে রোগীরা ভর্তি হতো। বর্তমানে যারাই ভর্তি হচ্ছে তাদের শারীরিক অবস্থা ভালো না। বিগত কয়েক দিনের তুলনায় আবারো করোনা রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, পাশাপাশি শনাক্তও হচ্ছে। গত ২৪শে সেপ্টেম্বর করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক ব্যক্তি মারা গেছে। এই সপ্তাহে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ৪ জন। আইসিইউতে ভর্তি রয়েছে ২ জন। তাদের শারীরিক অবস্থা ভালো নেই। বর্তমানে করোনা ডেডিগেটেড হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে ৯ জন।খুলনা সিভিল সার্জন অফিস সূত্র মতে, চলতি মাসে ১ থেকে ২৪শে নভেম্বর পর্যন্ত খুলনা জেলায় ২ হাজার ৭৮৫ করোনা পরীক্ষার মধ্যে শনাক্ত হয় ১৭৯ জন। এই সময়ের মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় ৬ জন। করোনা ডেডিগেটেড হাসপাতালে ভর্তি ছিল ২৭ জন।খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সূত্র মতে, খুলনায় গত ১০ই মার্চ থেকে এ যাবতকাল করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয় ৬ হাজার ৮১৮ জন। হাসপাতালে ভর্তি ছিল ৭৪৫ জন। এ সময়ের মধ্যে মারা যায় ১০৭ জন।এদিকে করোনা সংক্রমণ রোধে ও সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য বিধি নিশ্চিতকরণে আরো কঠোর অবস্থানে খুলনা জেলা প্রশাসন। সামপ্রতিক আক্রান্ত বেড়ে যাওয়া এবং অধিকাংশ সাধারণ মানুষের অসচেতনতার কারণে। তাছাড়া সচেতনতার পাশাপাশি মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করণে খুলনা জেলা প্রশাসন গত ২৬ দিনে মহানগর ও জেলায় নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে প্রতিদিন মামলা, আটক ও অর্থদণ্ড অব্যাহত রেখেছে। খুলনা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (মিডিয়া) দেবাশীষ বসাক বলেন, করোনা আক্রান্তের হাত থেকে রক্ষার্থে গত জুলাই মাসের শেষদিক হতে সরকারিভাবে মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। পাশাপাশি মাস্ক ব্যবহার না করলে জরিমানা, মামলা ও আটকের নির্দেশনা দেয়া হয়। তাছাড়া বর্তমান শীত মৌসুম নিয়ে করোনা অক্রান্তের হার বৃদ্ধি পেলেও অধিকাংশ সাধারণ মানুষ এখনো সচেতন নয়। যার প্রেক্ষিতে করোনা সংক্রমণের সম্ভাব্য দ্বিতীয় ওয়েভ মোকাবিলার প্রস্তুতি হিসেবে গত ২৪ ও ২৫শে নভেম্বর জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ হেলাল হোসেনের নির্দেশে মহানগরীর সোনাডাঙ্গা বাস স্ট্যান্ডে যাত্রীবাহী বাস ছাড়াও যানবহনে মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয়। পাশাপাশি নগরীর রূপসা, পিটিআই মোড়. মডার্ণ মোড়সহ নগর ও উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়। এসব অভিযানে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দেবাশীষ বসাক, দীপা রাণী সরকার এবং নূরী তাসমিন ঊর্মি। এছাড়া উপজেলা সমূহে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং সহকারী কমিশনাররা (ভূমি) নিজ নিজ অধিক্ষেত্রে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন। মোবাইল কোর্ট পরিচালনাকালে মাস্ক সঙ্গে না থাকায় এবং যথাযথভাবে মাস্ক পরিধান না করায় গত দুইদিনে ৬৯ জনকে মামলায় ৩০ হাজার ৪শ’ টাকা অর্থদণ্ড ও ৪ জনকে আটক করা হয়। ‘সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮’ এর সংশ্লিষ্ট ধারার বিধান মোতাবেক এসব জরিমানা করা হয়। সমপ্রতি করোনা ভাইরাস সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ায় গত ৮ই নভেম্বর জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভার সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে ৯ই নভেম্বর থেকে জেলা প্রশাসন কঠোর অবস্থান গ্রহণ করে। মোবাইল কোর্ট পরিচালনায় সহযোগীতা করে এপিবিএন এবং উপজেলাসমূহের স্ব-স্ব থানা পুলিশের সদস্যগণ। স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতকরণে জেলা প্রশাসনের এমন অভিযান অব্যাহত থাকবে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে