কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

টানা বর্ষণে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি

মানবজমিন প্রকাশিত: ২৫ অক্টোবর ২০২০, ০০:০০

নিম্নচাপের প্রভাবে গত ক’দিনে টানা বর্ষণে ডুবে গেছে বিভিন্ন জেলার ফসলি জমি। ভেসে গেছে মাছের ঘের। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে বিভিন্ন জেলার নিম্নাঞ্চলগুলো। বিস্তারিত প্রতিনিধিদের পাঠানো রিপোর্টে:উল্লাপাড়ায় ৪০ লাখ টাকার ফসলের ক্ষতিউল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি: উল্লাপাড়ার শাহজাহানপুর গ্রামের পাশে স্থায়ী জলাবদ্ধতার কারণে ভেদুরিয়া বিলে বছরে তিনবার ফসল উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে না। শুধু ইরি-বোরো মৌসুমে একবার ধান উৎপাদন করতে পারছেন বিলের জমির মালিকগণ। স্থানীয় কৃষি বিভাগের জরিপে এই বিলের মালিকেরা বছরে ৪০ লাখ টাকার ফসল প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ৫ শ’ ফুট  দীর্ঘ একটি খাল খনন করা সম্ভব হলে পানি নিষ্কাশনের মাধ্যমে বিলের জমিতে বছরে তিনবার ফসল উৎপাদন সম্ভব হতো। শাহজাহানপুর গ্রামের শহিদুল ইসলাম, বরাত আলী, ঘাটিনা গ্রামের মো. সজল, মবিল উদ্দিন, হাবিবগঞ্জ গ্রামের আব্দুল হালিমসহ অনেক কৃষক অভিযোগ করেছেন, বেশ কয়েক যুগ ধরে ভেদুরিয়া বিলে বছরের ৮ মাস পানিপূর্ণ থাকে। পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় বিলের অন্তত ৫০ জন জমির মালিক কৃষকেরা বছরে একবার ফসল উৎপাদন করতে পারছেন। শাহজাহানপুর গ্রামের দক্ষিণে করতোয়া খালের সঙ্গে একটি পানি নিষ্কাশন খাল খনন করা সম্ভব হলে বিলের জলাবদ্ধতা দূর করা যেত। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে তারা সংশ্লিষ্ট সলপ ইউনিয়ন পরিষদ ও উল্লাপাড়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে এ ব্যাপারে আবেদন নিবেদন করেও কোনো ফল পাননি। ফলে বছরে দু’টি করে ফসল উৎপাদন করার কোনো সুযোগ নেই তাদের। অভিযোগকারীরা আরো জানান, বিলের দক্ষিণ পাশে প্রস্তাবিত নিষ্কাশন খালের জমিগুলো সবই ব্যক্তি মালিকানাধীন হওয়ায় নিষ্কাশন খাল খনন দুরূহ হয়ে পড়েছে। বিলের পানি বের হওয়ার কোনো পথ না থাকায় পুরো বিলজুড়ে কচুরিপানায় পরিপূর্ণ হয়ে থাকে। ফলে ইরি-বোরো মৌসুমে চাষাবাদের সময় তাদেরকে মোটা অঙ্কের টাকা ব্যয় করে কচুরিপানা অপসারণ করতে হয়। এসব কৃষক অবিলম্বে ভেদুরিয়া বিল থেকে পার্শ্ববর্তী করতোয়া খাল পর্যন্ত একটি পানি নিষ্কাশন খাল খননের জন্য সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন জানিয়েছেন। মোড়েলগঞ্জে ভেসে গেছে সাড়ে ৩ হাজার ঘেরমোড়েলগঞ্জ (বাগেরহাট) সংবাদদাতা: একদিকে বঙ্গোপসাগরের সৃষ্ট নিম্নচাপ গত দু’দিনের টানা বর্ষণে টানা বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ উপজেলার ১৬ ইউনিয়নের সাড়ে ৩ হাজার মৎস্য ঘের ও পুকুর ভেসে গেছে। পৌরসভাসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে মৎস্য সম্পদের।প্রবল বর্ষণে মৎস্য অধ্যুষিত উপজেলা জিউধরা, বহরবুনিয়া, নিশানবাড়িয়া, পঞ্চকরণ ইউনিয়নের প্রায় শতভাগ মৎস্য ঘের তলিয়ে গেছে। ভেসে গেছে হাজার হাজার পুকুরের মাছ। মৎস্য ঘের ভেসে যাওয়ায় মালিক ও মৎস্য ব্যবসায়ীরা হতাশ হয়ে পড়েছে। ইউপি সদস্য ও মৎস্য ব্যবসায়ী মিরাজুল ইসলাম মিলন তালুকদার জানান, গেল বুলবুল ও আম্ফানের ব্যাপক ক্ষতির পর আবারো এ ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা ঘের মালিক ও মৎস্য ব্যবসায়ীদের দ্বারা অসম্ভব। এখন তাদের একমাত্র ভরসা সরকারি সহযোগিতা ও পৃষ্ঠপোষকতা।ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক মজুমদার, আব্দুর রহিম বাচ্চু, এইচএম মাহমুদ আলী, জাহাঙ্গীর আলম বাদশা ও রিপন তালুকদার জানিয়েছেন, দু’দিনের ভারি বর্ষণে মৎস্য ঘের ব্যবসায়ীদের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। ভেসে গেছে হাজার হাজার পুকুর ও ঘেরের মাছ।সাদুল্লাপুরে ফসলের ব্যাপক ক্ষতিসাদুল্লাপুর (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি: বঙ্গোপসাগরের সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাব পড়েছে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলায়। এর ফলে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি ও দমকা হাওয়া বইছে। এমন বিরূপ আবহাওয়ার কারণে কৃষকদের  রোপা আমন ধান এবং শাক-সবজিসহ বিভিন্ন ফসলাদির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শনিবার দুপুরে গাইবান্ধার কৃষকের মাঠে আমন ধান ও অন্যান্য ফসলাদির ক্ষতির চিত্র দেখা গেছে। জানা যায়, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হয়েছে নিম্নচাপ। এটির প্রভাবে সাদুল্লাপুর উপজেলার সর্বত্র শুক্রবার সকাল থেকে শুরু হয়ে শনিবার পর্যন্ত গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টির সঙ্গে অব্যাহত রয়েছে দমকা হাওয়া। হঠাৎ করে আবহাওয়ার এমন বিরূপ আচরণে কৃষকের রোপা আমন ধানের গাছগুলো হেলে পড়েছে পানির উপরে। এ ছাড়াও সম্প্রতি মাঠজুড়ে শীতকালীন শাক-সবজি বোনা হয়েছিল। নিম্নচাপের টানা বৃষ্টিপাতের কারণে সেগুলোরও ক্ষতির আশঙ্কা করছে কৃষকরা। এদিকে, কৃষিনির্ভরশীল সাদুল্লাপুর উপজেলায় গত মাসে বয়ে গেছে ভয়াবহ বন্যা। এ বন্যায় নিম্নাঞ্চলের কৃষকদের  রোপা আমন ধানসহ হাজার হাজার হেক্টর ফসলাদির ক্ষতি হয়েছে। এসময় উঁচু এলাকার আমন ধানের ক্ষেতগুলো আংশিক ক্ষতি হলেও অধিকাংশ ক্ষেতের ধান ঘরে তোলার স্বপ্ন  দেখছিলেন কৃষকরা। ইতিমধ্যে ওইসব আমন  ক্ষেতে ধান বের হতে শুরু করেছিল। এরই মধ্যে নিম্নচাপের প্রভাবে ধান গাছগুলো হেলে পড়েছে পানির উপরে। হেলে পড়া এসব ফসল ঘরে তোলা সম্ভব নয় বলে ধারণা করছে প্রান্তিক কৃষকরা। দফায় দফায় এমন দুর্যোগের কবলে কৃষকদের অপূরণীয় ক্ষতিতে দিশাহারা হয়ে পড়েছে। কীভাবে ঘুরে দাঁড়াবে এমন দুশ্চিন্তায় নির্ঘুম রাত কাটছে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের। তাহিরপুরে রবিশস্যের ক্ষতিতাহিরপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি: বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে অসময়ে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টিতে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার রবিশস্যের বীজতলার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তবে স্থানীয় কৃষি অফিস জানিয়েছে, গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি চলতি আমন ধানের ফলনের জন্য বেশ সহায়ক হবে। গত বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি আর হালকা বাতাস এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে। শনিবার সরজমিন গিয়ে দেখা গেছে, গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি আর হালকা বাতাসে ক্ষেতে পানি জমে শীতকালীন সবজি আলু, টমেটো, বাঁধাকপি, ফুলকপি, মুলাসহ বিভিন্ন প্রকার সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। উপজেলার মানিগাঁও গ্রামের হাসান মিয়া বলেন, এ অসময়ে ঘন ঘন বৃষ্টির ফলে কৃষকের শীতকালীন সবজি ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গত কিছুদিন আগে তিনি মুলা আর টমেটো রোপণ করেছিলেন তাও বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে গেছে। এদিকে গত তিনদিন ধরে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টির ফলে বিপাকে পড়েছেন নিম্নআয়ের লোকজনসহ হাওরাঞ্চলের কৃষকরা। তারা এখন হাত-পা গুটিয়ে অলস সময় পার করছেন।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে