কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

‘কী শোভা কী ছায়া গো কী স্নেহ কী মায়া গো’

দৈনিক আজাদী প্রকাশিত: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৯:৫০

.tdi_2_fe7.td-a-rec-img{text-align:left}.tdi_2_fe7.td-a-rec-img img{margin:0 auto 0 0} (adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে গত মার্চ ২০২০ থেকে বিশ্ব আজ অনেকটাই থমকে গেছে। মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যবসা বাণিজ্য, শিক্ষা-দীক্ষা, আচার-অনুষ্ঠান সামাজিকতা, রাজনীতি তথা সর্বক্ষেত্রেই একটা প্রতিবন্ধকতা তৈরী হয়েছে। সভ্য সমাজের প্রধান অনুষঙ্গ মানুষের সাথে মানুষের মেলামেশা আসা-যাওয়া বলতে গেলে বন্ধই হয়ে গেছে।এই মরণঘাতী মহামারীর কারণে এ পর্যন্ত সারা বিশ্বে কয়েক লক্ষ মানুষ এই ভাইরাসের আক্রমণে অকালে প্রাণ হারিয়েছেন। ঘরে ঘরে শোকের মাতম চলছে। অকালে হঠাৎ করে চলে যাওয়া প্রিয় মানুষগুলোর কারণে তাদের পরিবারগুলোর দিশেহারা অবস্থা। এমন এক ভাইরাস এটি যাকে আক্রমণ করবে তার সংস্পর্শে আসা মারাত্মক বিপজ্জনক। যে কারণে আক্রান্ত মানুষটি তার অন্তিম মুহূর্তে স্বজনের মুখটি পর্যন্ত শেষবারের জন্য দেখা থেকে বঞ্চিত হন। মা-বাবা, সন্তান, স্বামী-স্ত্রী, ভাই-বোন কেউ কারো সান্নিধ্যে যেতে পারছে না। কী যে হৃদয়বিদারক এই পরিস্থিতি শুধুমাত্র ভুক্তভোগীরাই অনুধাবন করতে পারে এই ভাইরাসের তীব্রতা, এর মারত্মক যন্ত্রণা। দিনে দিনে এই ভাইরাসের প্রকোপ কিছুটা সহনীয় হওয়ায় ধীরে ধীরে মানুষ নিজেকে রক্ষা করার স্বাস্থ্যবিধিগুলো মেনে জীবন-যাত্রা এখন কিছুটা স্বাভাবিকের পথে ধাবিত। বিশ্বের বেশ কয়েটি দেশ তাদের সর্বস্ব শক্তি দিয়ে টিকা আবিষ্কার এবং বাজারজাতকরণের প্রচেষ্টায় লিপ্ত। হয়ত এই কাঙ্ক্ষিত টিকায় এই ভাইরাস থেকে মানুষের একমাত্র মুক্তির পথ। জীবন থেমে থাকে না। সময়ের হাত ধরে চলতে থাকে তার আপন গতিতে। মানুষকেও তার সাথে যথাসম্ভব তাল মিলিয়ে নিজেকে চালিয়ে নিতে হয়। প্রায় দীর্ঘ ছয় মাস পর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ভ্রমণ করছি। সাধারণত এই মহাসড়কটা এমনিতেই অনেক আকর্ষণীয়। প্রকৃতির অপরূপ সজ্জার কারণে বরাবরই এই রাস্তা আমাকে আকৃষ্ট করে। মহামারী না থাকলে এই ছয় মাসে হয়ত বহুবারই এ পথে যাতায়াত করতে হত। যেহেতু দীর্ঘ বিরতির পর এই যাত্রা স্বাভাবিকভাবেই তাই হয়ত আরো মোহনীয় রূপে ধরা দিয়েছে আমার চোখে। চারপাশটা সবুজের সমারোহে সমৃদ্ধ। সারি সারি গাছগুলো যেন সবুজের রকমভেদে ছন্দে দুলছে। সবুজের মধ্যেও কত তারতম্য আছে। আছে কত প্রকারভেদ তার ধারণা এই গাছগুলিই জানান দিচ্ছে সহোৎসাহে। রং নিয়ে যারা প্রতিনিয়ত খেলে, মানে যারা আঁকিয়ে, ছবির কারিগর তাদের জন্য প্রকৃতি প্রদত্ত এটা একটা ফ্রি ওয়ার্কশপ বলা যায়। আমি সাধারণ মানুষ, অতশত বোঝার ক্ষমতা আমার নেই। আমি বুঝি এই অবারিত সবুজের দৃষ্টি মেলে দিলে আমার নয়ন জোড়া পাবে সুশীতল প্রশান্তি। শুনেছি সবুজের দিকে তাকিয়ে থাকলে নাকি চোখের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি পায়। ক্ষতি কি প্রকৃতির বিনামূল্যের এই ওষুধ অধিগ্রহণ করতে। অবারিত ধানক্ষেত সবুজে সবুজে বিলীন। সবুজ বিলে উড়ে এসে বসছে সাদা বক। লম্বা সূঁচালো ঠোঁট দিয়ে মাছ ধরায় ব্যস্ত তারা। কোনওটা আবার এক পায়ে দাঁড়িয়ে আছে শিকারীর দৃষ্টি নিয়ে। হঠাৎ করে একঝাঁক যখন ডানা মেলে উড়াল দেয় আকাশ পানে, তখন মনে হয় যেন সবুজের বুক চিরে একরাশ তুলো উড়ে হাওয়ায় ভাসছে। এরই মাঝে বর্ষার জলে টইটুম্বুর পূর্ণযৌবনা বিল-ঝিল গুলোতে ফুটে আছে সুশোভিত শাপলা। সেখানেও রঙের মেলা। কত রঙের শাপলা, গোলাপী, রাণী, লালচে, কতই না রঙের বাহার। জলের উপর শাপলার পাতাগুলো এমনভাবে বিছানো যেন মনে হয় হাতছানি দিয়ে ডাকছে আমায়। বলছে, “এসো হে পথিক, ভাদ্রের গরমে তীব্রতায় আমার দাওয়ায় বসে একটু জিরিয়ে নাও।” আহা! সৌন্দর্যের এই আমেজ চোখ বুজে অবগাহন করলাম। নদীগুলোতেও ভরা যৌবন বিরাজ করছে। কবিতার লাইনকে সাথী করে তারা তাদের বুকে শুরু করেছে বিশাল কর্মযজ্ঞ। “এখন যৌবন যার-যুদ্ধে যাওয়ার শ্রেষ্ঠ সময় তার।” সেই যুদ্ধেই অবতীর্ণ নদীবেষ্ঠিত সকলেই। পালতোলা নৌকায় বালু, লবণসহ নানা পণ্য বোঝাই। মাছ ধরা উৎকৃষ্ট সয়ম এখন। এছাড়া আর কতকিছুই না চলছে নদীকে ঘীরে। চলতে চলতে এর পর দেখা মিললো শরতের শোভা কাশফুলের। সে আর এক পর্ব। সাদা সাদা কাশফুলে ছেয়ে আছে মাইলের পর মাইল। সাদায় শুভ্রতায় মনে প্রশান্তির এক অনন্য ছোয়া যেন লাগলো। হাওয়া এসে যখন মমতার পরশ বুলিয়ে যাচ্ছিল শুভ্র কাশবনে। তখন কাশফুলগুলো ময়ূরের ছন্দে যেন নেচে উঠছিল। সবগুলো একই ছন্দে, পরম আনন্দের। কী স্নিগ্ধ, কী মধুময় সে দুলুনী তাদের। চোখ ফেরানো দায়। কাশফুলগুলোকে দেখে মনে হচ্ছে একদল বেহেস্তের হুর পৃথিবীতে নেমে এসেছে। শুভ্র পবিত্র এক আবেশে মনটা যেন শীতল হয়ে গেল। মহাসড়কের মাঝ বরাবর আইলেন্ডগুলোতেও লাগানো হয়েছে হরেকরকম বাহারী ফুলের গাছ। হলুদ, লাল, গোলাপী, কমলা কত রকমের ফুলে ফুলে শোভিত হয়ে ছেয়ে আছে পুরো অংশটা। গাড়ির গতির কারণে বাতাসে ফুলগাছ গুলো এমনভাবে দুলে উঠছিল যেন আমাদের সাদর সম্ভাষন জানানোয় তারা মত্ত। রাস্তার দুধারের শতবর্ষী পুরনো গাছগুলোর ডালপালা দুপাশ থেকে এসে মিলিত হয়ে যেন একটা ছাউনী তৈরি করেছে। দেখতে সবুজে আচ্ছাদিত কোন গুহার প্রবেশ পথ মনে হয়। প্রকৃতি কি নিখুঁত কারিগর। কোথাও কোনো অভিযোগের বিন্দুমাত্র লেশ নেই। এ সবকিছুর উপর দিয়ে বিশাল সামিয়ানা হয়ে ছড়িয়ে আছে শরতের শুভ্র নীল আকাশ। নীলকে যদিও বেদনার রং হিসাবে আখ্যায়িত করে অনেকে। কিন্তু শরতের এই আকাশের নীল রং-এ খুঁজে পাওয়া যায় প্রশান্তির এক নীড়ের ঠিকানা। থেকে থেকে ভেলার মত ভেসে আসছে শুভ্র মেঘপুঞ্জ। এই মেঘপুঞ্জের দিকে নিবিষ্ট মনে তাকিয়ে থাকলে কতকিছুর অবয়বই না খুঁজে পাওয়া যায়। যার যার নিজস্ব মনের ভাবনাগুলো দিয়ে অনেক সময় ভাস্কর্যের মত গড়ে তোলা যায় কোন আকৃতি। টুকরো টুকরো ছোট ছোট মেঘমালা কখনো এক হয়ে গড়ছে বিশাল এক মেঘমণ্ডল। আবার কখনো একখণ্ড বড় মেঘ নিজেকে ভেঙ্গে ছোট ছোট অংশ হয়ে ফুলের পাপড়ির মত ছড়িয়ে দিচ্ছে আকাশে। এ যেন ভাঙ্গা গড়ার অপরূপ এক খেলা। চলতে চলতে এক সময় পথ ফুরিয়ে আসে। পৌঁছে যাই গন্তব্যে। এর মাঝে আর অনেক প্রাকৃতিক শোভা হয়ত বর্ণনা থেকে বাদ পড়ে গেছে। সে হয়ত আমার অজ্ঞ দৃষ্টির কারণে। আর কিছু পরবর্তীর জন্য তুলে রেখেছি। সুজলা সুফলা শস্যে শ্যামলা পূণ্যভূমি আমার বাংলাদেশ। পরিশেষে বারে বারে গেয়ে যাই, ‘জন্ম আমার ধন্য হলো মা গো-এমন করে আকুল হয়ে আমায় তুমি ডাক।’ লেখক : প্রাবন্ধিক; সিনিয়র সহ সভানেত্রী, উত্তর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ.tdi_3_bcd.td-a-rec-img{text-align:left}.tdi_3_bcd.td-a-rec-img img{margin:0 auto 0 0} (adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত