কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

মহামারীর ধাক্কা সামলে প্রতিটি খাত উড়ন্ত অবস্থায় : অর্থমন্ত্রী

দৈনিক আজাদী প্রকাশিত: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৯:৩৯

.tdi_2_f6f.td-a-rec-img{text-align:left}.tdi_2_f6f.td-a-rec-img img{margin:0 auto 0 0} (adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});করোনাভাইরাস মহামারীর ধাক্কা লাগলেও তা সামলে বাংলাদেশের অর্থনীতি অন্য যে কোনো দেশের চেয়ে ভালোভাবে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বলে মনে করছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। আর এজন্য মূল কৃতিত্ব তিনি দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রীকে। মুস্তফা কামালের ভাষায়, ‘অসম্ভব’ কর্মদক্ষতা নিয়ে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার পথে চলেছেন শেখ হাসিনা। বিডিনিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, মহামারী শুরুর পর প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা, এরপর শিল্পোৎপাদন চালু করা সবই ছিল ‘সময়োপযোগী’ পদক্ষেপ। পুরো দেশ এখন এর সুফল পাচ্ছে। সামষ্টিক অর্থনীতির প্রতিটি ক্ষেত্র ভালো করছে। প্রত্যেকটি খাত উড়ন্ত অবস্থায় আছে। সব সূচকই ঊর্ধ্বমুখী। কোনো দেশেই এ অবস্থা খুঁজে পাওয়া যাবে না, বলেছেন মুস্তফা কামাল। মহামারীর এই সময়ে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, ব্যাংক খাত ও পুঁজিবাজারসহ নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন অর্থমন্ত্রী। বিডিনিউজ : এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক-এডিবি বলেছে, করোনাভাইরাস মহামারীর ধাক্কা সামলে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। আর এ কারণেই চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ৬ দশমিক ৮ শতাংশ বাড়তে পারে। এর নেপথ্যের শক্তিটা কী? মুস্তফা কামাল: সমপ্রতি প্রকাশিত ‘এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুকে’ এডিবি গত দুই মাসের কার্যক্রম বা পারফরম্যান্স থেকে চলতি অর্থবছরে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৮ শতাংশ হবে বলে প্রাক্কলন করেছে। এডিবির প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, ২০২০ সালে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধিতে আছে শুধু বাংলাদেশ, চীন ও ভিয়েতনাম। ২০২০ সালে বাংলাদেশের যে অর্জন, আমি মনে করি এটিই বড়ভাবে দেখা যেতে পারে। কারণ, এটা আমাদের জন্য ঐতিহাসিক বছর। এবছর জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী। এই দেশের মানুষ যথাযথভাবে জাতির পিতাকে বিশ্ব দরবারে আরও আলোকিত করার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। কামার, কুমার, তাঁতি, জেলে, চাষি, ব্যবসায়ী, বিজ্ঞানীসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষই কাজ করছেন। এজন্য দেশের সর্বস্তরের মানুষের কাছে সরকারের পক্ষ থেকে আমি কৃতজ্ঞতা জানাই। আমাদের সৌভাগ্য যে, আমরা শেখ হাসিনার মতো একজন নেতা, একজন প্রধানমন্ত্রী পেয়েছি। যিনি সামনে দেখতে পানৃ দেশের সব মানুষকে তিনি জানেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রীর আগামী দেখার দক্ষতা রয়েছে। তিনি দেশের মানুষের নার্ভ বুঝতে পারেন। ওয়ান-টু-ওয়ান দেখতে পান। মানুষকে যতটা সম্ভব দ্রুত কাজে ফেরার সুযোগ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি অর্থনীতি সচল রাখতে করোনাভাইরাসের প্রকোপের শুরুতেই এক লাখ দশ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেন। যখন প্রধানমন্ত্রী এই প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেন, তখন আমাদের কাছে অবিশ্বাস্য মনে হয়েছিল। পুরো দেশ এখন এর সুফল পাচ্ছে। সামষ্টিক অর্থনীতির প্রতিটি ক্ষেত্র ভালো করছে। প্রত্যেকটি খাত উড়ন্ত অবস্থায় আছে। সামনের দিকে যাচ্ছে। সব সূচকই ঊর্ধ্বমুখী। কোনো দেশেই এ অবস্থা খুঁজে পাওয়া যাবে না। আমি জোর দিয়ে বলতে পারি, সবকিছু মিলিয়ে ভালোভাবেই বাংলাদেশ। সামনে আরও সুন্দর দিন অপেক্ষা করছে। বঙ্গবন্ধু যা করে যেতে পারেননি, সেগুলো করার জন্য তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিরলস পরিশ্রম করছেন। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) সোনার বাংলা নির্মাণের মাধ্যমে সুবর্ণরেখা স্পর্শ করবেন। আমাদের শক্তি হচ্ছে, এদেশের মানুষ। শেখ হাসিনা এই মানুষকে ভালোবেসে, গাইডলাইন দিয়ে একদম সামনে থেকে লিড দিয়ে সামনে নিয়ে যাচ্ছেন। এই যে, মহামারী করোনাভাইরাসের ধাক্কা সামলে আমাদের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে; অর্থনীতির সবগুলো সূচক এখন ঊর্ধ্বমুখী। কোভিড-১৯ এর আঘাতে পৃথিবীর বড় বড় দেশের অর্থনীতি যেখানে তছনছ হয়ে গেছে। আমরা সেখানে সাহসের সঙ্গে মোকাবেলা করে মাথা উঁচু করে ঘুরে দাঁড়িয়েছি। আর এটা সম্ভব হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের কারণে। বিডিনিউজ : চলতি অর্থবছরের বাজেটে আপনি জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরেছেন ৮ দশমিক ২ শতাংশ। এডিবি বলছে, ৬ দশমিক ৮ শতাংশ হবে। তাহলে কি এবার লক্ষ্য অর্জিত হবে না? মুস্তফা কামাল: এডিবি কিন্তু দুই মাসের (জুলাই-আগস্ট) পারফরমেন্স দেখে এই পূর্বাভাস দিয়েছে। এডিবি এও বলেছে যে, আমাদের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। আমরা যদি অর্থবছরের বাকি ১০ মাস ভালোভাবে চলতে পারি, তাহলে অবশ্যই বাজেটে ধরা লক্ষ্য ৮ দশমিক ২ প্রবৃদ্ধি শতাংশ অর্জন করতে পারব। এখানে একটা কথা আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই, দেশের মানুষ আত্মনিবেদিত হয়ে এবং আত্মপ্রত্যয়ী হয়ে কাজ করে যাচ্ছে। যার যতটা সুযোগ আছে, সেখান থেকেই এ দেশের অর্থনীতিকে আরও সমৃদ্ধ করছে। এতে দেশের অর্থনীতি আরও অনেক ওপরে যাবে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সারা দেশের মানুষ কাজ করে চলেছে। ফলে আমি মনে করি, জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৮ শতাংশের বেশি হবে। বিডিনিউজ: দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আশার কথা শোনাচ্ছেন আপনি। সত্যিই কি অর্থনীতিতে স্বস্তি ফিরে এসেছে? মুস্তফা কামাল: গত কয়েক বছর ধরেই আমাদের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বেশ ভালো। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে আমরা ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছি। তার আগের বছরগুলোতেও ৭ শতাংশের মতো প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। কোভিড-১৯ এর কারণে ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ জিডিপি অর্জিত হবে বলে আমাদের পরিসংখ্যান ব্যুরো প্রাথমিক তথ্য দিয়েছে। আমাদের অর্থনীতির প্রধান সূচকগুলোর দিকে তাকালেই বোঝা যাবে, দেশের অর্থনীতি কেমন চলছে। একটি বিষয় অবিশ্বাস্য রকম অবাক করে দিয়েছে আমাকে- এই মহামারীর মধ্যেও আমাদের প্রবাসী ভাই-বোনেরা রেকর্ড পরিমাণ রেমিটেন্স দেশে পাঠিয়েছেন। চলতি অর্থবছরের দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৫০ শতাংশ বেশি রেমিটেন্স দেশে পাঠিয়েছেন। সবাই যখন আশঙ্কা করেছিল, মহামারীর ধাক্কায় রেমিটেন্স একেবারে কমে যাবে। কিন্তু তা না হয়ে উল্টো বেশি বেশি রেমিটেন্স দেশে পাঠাচ্ছেন প্রবাসীরা। এতে আমরা সাহস পাচ্ছি। মহামারী মোকাবেলা করাও আমাদের সহজ হচ্ছে। এই রেমিটেন্সে দেশে লাখ লাখ পরিবার চলছে। ছোট ছোট ব্যবসা হচ্ছে। রেমিটেন্স আরও বাড়বে। কারণ সরকার এ ক্ষেত্রে প্রণোদনার মাধ্যমে পাঠানোর খরচ দিয়ে দিচ্ছে। এছাড়া রেমিট্যান্স পাঠাতে যে ফরম পূরণ করতে হয়, তা সহজ করা হয়েছে। এখানে আরেকটি কথা আমি বলতে চাই, আমি যখন পরিকল্পনামন্ত্রী ছিলাম, তখনই একটা বিষয়ে আমি স্টাডি করেছিলাম, আমি হিসাব করে দেখেছিলাম, দেশে সবমিলিয়ে ৩৪-৩৫ বিলিয়ন ডলারের মতো রেমিটেন্স দেশে আসতো। এর মধ্যে অর্ধেকেরও কম ১২ থেকে ১৪ বিলিয়ন ডলার আসতো ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে বৈধ পথে। বাকিটা আসতো হুন্ডির মাধ্যমে অবৈধ পথে। এখন ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দেওয়ার কারণে হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠানোর পরিমাণ অনেকটা কমেছে। এটাকে একেবারে শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার চেষ্টা করছি আমরা। বিডিনিউজ: অর্থনীতির আরেক গুরুত্বপূর্ণ সূচক বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভও বেশ সন্তোষজনক অবস্থায় রয়েছে। রিজার্ভ কি আরও বাড়বে বলে আপনার মনে হয়? মুস্তফা কামাল: আমাদের আরেকটি স্বস্তির বিষয় হচ্ছে রিজার্ভ। মূলত রেমিটেন্সের উপর ভর করেই বর্তমানে আমাদের রিজার্ভ ৩৯ বিলিয়ন ডলারের উপরে অবস্থান করছে। ডিসেম্বরের মধ্যেই এই রিজার্ভ ৪২ বিলিয়ন ডলারে যাবে বলে আমি আশা করছি। আর যে পরিমাণ রেমিটেন্স আসছে এবং পেট্রোলিয়ামের দাম কমার কারণে আমদানি খরচ যতটা কমছে, তাতে পরবর্তী এক বছরের মধ্যে রিজার্ভ ৫০ বিলিয়ন ডলারও ছাড়াবে বলে আমি প্রত্যাশা করছি। বিডিনিউজ: প্রধানমন্ত্রী রিজার্ভ বিনিয়োগে নিয়ে আসার কথা বলেছেন। এ বিষয়ে কী ধরনের চিন্তাভাবনা করছেন? মুস্তফা কামাল: প্রধানমন্ত্রীর কথা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিয়ে আমরা সরকারি প্রকল্পে রিজার্ভ থেকে অর্থায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও বিতরণের মতো প্রকল্পে এই অর্থ বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছি। বিদেশ থেকে বৈদেশিক মুদ্রার ঋণ নিলে ৪ থেকে ৫ শতাংশ সুদ দেওয়া লাগে। অন্যদিকে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বিদেশে বিনিয়োগ করলে এক থেকে দেড় শতাংশের বেশি সুদ পাওয়া যায় না। ফলে এই অর্থ সরকার ব্যবহার করলে রাষ্ট্রেরই লাভ। আমরা সেই কাজটি করতে যাচ্ছি। বর্তমানে রিজার্ভ দিয়ে আমাদের কাছে প্রায় এক বছরের আমদানি দায় মেটানোর ব্যবস্থা রয়েছে। এজন্য তিন মাসের আমদানির দায় মেটানোর প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রা রেখে যখন যা লাগবে, তা আমরা নিতে পারি। এতে দেশে বিনিয়োগ বাড়বে; অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।.tdi_3_044.td-a-rec-img{text-align:left}.tdi_3_044.td-a-rec-img img{margin:0 auto 0 0} (adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত