কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

স্বপ্লমূল্যে গাড়ি, পিএইচপির স্বপ্নের মিশন

দৈনিক আজাদী প্রকাশিত: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৮:৫১

.tdi_2_3f6.td-a-rec-img{text-align:left}.tdi_2_3f6.td-a-rec-img img{margin:0 auto 0 0} (adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});‘খুচরা যন্ত্রাংশ মুদি দোকানে নয়, হাতের কাছে পৌঁছে দেওয়া’ কিংবা ‘পুরাতন গাড়ির চেয়ে সস্তায় নতুন গাড়ি দেওয়া’র লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্প গ্রুপ পিএইপি ফ্যামিলি। ‘আমাদের রাস্তায় আমাদের গাড়ি, থাকবে সবার বাড়ি বাড়ি’ স্বপ্ন নিয়ে সেডান কার সংযোজনের যাত্রা শুরু করেছিল তারা। বর্তমানে বছরে ১২শ ইউনিট গাড়ি সংযোজন করছে। সক্ষমতা রয়েছে ৩ হাজার ৬শ গাড়ি সংযোজনের। ইচ্ছে করলে ধারণক্ষমতা দ্বিগুণে উন্নীত করে প্রতি বছর সাত হাজারের বেশি গাড়ি সংযোজন করা যাবে। শুধু গাড়ি সংযোজন নয়, রং করা থেকে শুরু করে খুচরা যন্ত্রাংশ উৎপাদনেও দক্ষ হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। সরকারি সহায়তা পেলে স্বল্পমূল্যে ঘরে ঘরে নতুন গাড়ি পৌঁছে দেওয়ার স্বপ্ন সফল হবে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের ব্যক্তিগত গাড়ির বিশাল বাজার। এর ছোট্ট অংশেও যদি পিএইচপি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারে তাহলে কয়েক হাজার কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে। পিএইচপি ফ্যামিলি সূত্র জানিয়েছে, প্রতি বছর অন্তত ২৫ হাজার ইউনিটের মতো ব্যক্তিগত গাড়ি বিক্রি হয়। এর ৯০ শতাংশ গাড়ি পুরাতন। রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানি করে এই চাহিদার যোগান দেওয়া হয়। পুরনো গাড়ি আমদানি খাতে দেশের হাজার হাজার কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা খরচ হয়। পুরনো গাড়ির বাজারে আধিপত্য রয়েছে জাপানের টয়োটা কোম্পানির। টয়োটার গাড়ির খুচরা যন্ত্রাংশ ‘মুদি দোকানে’ পাওয়া যায়-এমন একটি কথা প্রচলিত রয়েছে। আর এই কথাটিতে মনোযোগ দিয়ে বাজারে এসেছে মালয়েশিয়ার প্রোটন ব্র্যান্ড। পিএইচপি ফ্যামিলি প্রোটন গাড়ি সংযোজন এবং বাজারজাত করছে। পিএইচপি অটোমোবাইলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আকতার পারভেজ চৌধুরী আজাদীকে বলেন, আমাদের গাড়ির পার্টস পাওয়া যাবে হাতের মুঠোয়। আমাদের কোনো গাড়ি নষ্ট হলে বা কোনো পার্টসের প্রয়োজন হলে জানালে সাথে সাথে প্রয়োজনীয় পার্টস সংশ্লিষ্ট গ্যারেজে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করছি। তিনি বলেন, এক্ষেত্রে আমরা পিভিএস বা পারফেক্ট ভেহিক্যালস সলিউশনস নামের একটি মোবাইল অ্যাপস চালু করেছি। যেখানে আপনার প্রয়োজনীয় সব পার্টসের ছবি ও মূল্য লেখা রয়েছে। আপনি ইচ্ছে করলে বিকাশ অ্যাপসের মাধ্যমে মূল্য পরিশোধ করতে পারেন। আবার ক্যাশ অন ডেলিভারি সিস্টেমে হাতে পার্টস পাওয়ার পরও মূল্য পরিশোধ করতে পারেন। আপনি যে গ্যারেজে বলবেন, সেখানেই পার্টস পৌঁছে দেব। কোনো পার্টস আমাদের কাছে তাৎক্ষণিকভাবে না থাকলে তা বিদেশ থেকে এনে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হয়। গাড়ির বিক্রয়োত্তর সেবার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা তিন বছরের ওয়ারেন্টি দিচ্ছি। এর মধ্যে গাড়ির কোনো কিছু হলে আমরা ঠিক করে দিচ্ছি। অ্যাক্সিডেন্টে গাড়ি নষ্ট হলে মেরামতের সময়কালে আপনাকে ব্যবহারের জন্য একেবারে ফ্রিতে একটি গাড়ি দিচ্ছি। আমরা গাড়ির রং এখানেই করি। এতে করে কোনো গাড়ির রং চটে গেলে বা নষ্ট হলে তা নতুনের মতো করে ঠিক করে দিতে পারি। ৫টি ফ্রি সার্ভিসিং দিচ্ছি। পুরনো গাড়ি বিক্রয় বা ‘রিসেল’ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আপনি পাঁচ-দশ বছর পর যখন গাড়ি বিক্রয় করে দিতে চাইবেন তখন তা আমাদের মাধ্যমে বিক্রি করতে পারছেন। আমরা আপনার পুরনো গাড়িটি কিছুটা কন্ডিশনে এনে আমাদের শো-রুমে রেখে বিক্রি করার ব্যবস্থা করব। নানাভাবে সেবা দিয়ে গ্রাহকদের সন্তুষ্টি এবং আস্থা অর্জনে সক্ষম হচ্ছি আমরা। আকতার পারভেজ চৌধুরী বলেন, আমাদের গাড়ি তৈরির স্বপ্ন শুরু হয় ২০১৫ সালে। বাজারজাত শুরু করেছি ২০১৭ সালে। ‘গাড়ি এখন আর বিলাসিতা নয়, প্রয়োজন’ এই ধারণাটিকে সামনে রেখে গাড়ির বাজারে আসি। একই সাথে পুরাতন গাড়ির চেয়ে সস্তায় নতুন গাড়ি দেওয়ারও স্বপ্ন দেখি। নতুন গাড়ির পার্টস নিয়ে যে সংকট তাও ঘুচিয়ে দিই। সবকিছু মিলে স্বল্পমূল্যে ভালো মানের সেডান কার মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করার চেষ্টা করছি। তিনি বলেন, আমাদের জনপ্রিয় মডেল ১৩৩২ সিসির সেডান কার প্রোটন সাগা আমদানি করে বিক্রি হয়েছে ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকায়। সেই গাড়ি দেশে সংযোজন করে গ্রাহকের হাতে পৌঁছে দিচ্ছি ১৪ লাখ ৯৯ হাজার ৮০০ টাকায়। দেশে সংযোজনের কারণে প্রতি গাড়িতে সাশ্রয় হচ্ছে প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা। রিকন্ডিশন্ড গাড়ির চেয়ে ব্র্যান্ড নিউ এই গাড়ি অনেক সস্তা। গাড়ি সংযোজন এবং বাজারজাতকরণের ব্যবসায় পিএইচপি ফ্যামিলির যাত্রা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ বছর কয়েক আগে পিএইচপি ফ্যামিলির একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে পিএইচপি গ্রুপের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সুফি মিজানুর রহমানের সাথে আলাপকালে ব্যবসা-বাণিজ্যের নানা বিষয়ে কথা বলেন তিনি। তিনি তখন মালয়েশিয়ার গাড়ি উৎপাদনকারী কোম্পানি প্রোটন হোল্ডিংস বারহাদের চেয়ারম্যান। মাহাথির মোহাম্মদ দেশে যাওয়ার কিছুদিন পর পিএইচপি ফ্যামিলিকে প্রোটন গাড়ির কারখানা দেখার আমন্ত্রণ জানানো হয়। পিএইচপি ফ্যামিলির প্রতিনিধিরা মালয়েশিয়ায় গিয়ে গাড়ি কারখানা পরিদর্শন করেন। মাহাথির মোহাম্মদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি বাংলাদেশে প্রোটনের গাড়ি কারখানা প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেন। এরই জের ধরে প্রোটনের যাত্রা। তিনি জানান, নগরীর সাগরিকা এলাকায় প্রায় সাড়ে চার লাখ বর্গফুটের অবকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে। স্থাপন করা হয় প্রোটন গাড়ি সংযোজন কারখানা। অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারসহ প্রায় তিনশ লোকের নিরন্তর চেষ্টায় সংযোজিত হয় প্রোটন ব্র্যান্ডের গাড়ি। ৮৩৩২টি পার্টস সংযোজিত করে তৈরি হয় একেকটি প্রোটন গাড়ি। বর্তমানে এই কারখানায় প্রোটন সাগা, প্রোটন প্রিভে এবং প্রোটন এক্স ৭০ এবং প্রোটন পার্সোনা এই চার মডেলের গাড়ি সংযোজন করা হচ্ছে। পিএইচপি অটোমোবাইলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, আমরা শুধু গাড়ি সংযোজনই করছি না, কিছু পার্টসও এখানে তৈরি করছি। আর গাড়ি রং করার ব্যাপারটি পুরোপুরি চট্টগ্রামের কারখানায় হচ্ছে। আন্তর্জাতিক মান রক্ষা করে গাড়ি রং করার এই প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত প্রকৌশলীদের দেশের সম্পদ হিসেবে আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, আমাদের অর্জন অনেক। যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এই অর্জনে একের পর এক পালক সংযোজিত হবে। বর্তমানে এক শিফটে কাজ করে বছরে ১২শ গাড়ি সংযোজন করা হয়। তিন শিফটে কাজ চললে অনায়াসে ৩ হাজার ৬শ গাড়ি সংযোজন করা যাবে। সেকেন্ড লেন বসানোর মতো জায়গা কারখানায় রয়েছে। সেকেন্ড লেন চালু করা হলে প্রতি বছর সাত হাজার দুইশ ইউনিট গাড়ি প্রস্তুত করতে পারব। তিনি বলেন, বর্তমানে আমরা বেশ কিছু যন্ত্রপাতি নিজেরা তৈরি করছি। সরকারের সহায়তা পেলে আরো বেশি পরিমাণে পার্টস তৈরি করতে পারলে উৎপাদন খরচ আরো কমে আসবে। আমাদের স্বপ্ন হচ্ছে, একেবারে স্বল্পমূল্যে মানুষের কাছে গাড়ি পৌঁছে দেওয়া। সেই স্বপ্ন পূরণে বেশ কয়েক ধাপ এগোতে হবে। তিনি বলেন, সংযোজন থেকে উৎপাদন পর্যন্ত যেতে পাঁচটি ধাপ রয়েছে। এর মধ্যে আমরা এখন কিছু কিছু পার্টস তৈরির মাধ্যমে গাড়ি সংযোজনের দ্বিতীয় পর্যায় পার করে তৃতীয় পর্যায়ের পথে রয়েছি। গাড়ির যন্ত্রাংশ ও সরঞ্জামের সিংহভাগ এখানে তৈরি করতে পারলে তৃতীয় পর্যায়ে উন্নীত হতে পারব। গাড়ির পুরো বডি ও চেসিস (কাঠামো) তৈরি হলে চতুর্থ এবং ইঞ্জিন তৈরি করা সম্ভব হলে পঞ্চম ধাপ পেরিয়ে উৎপাদক হিসেবে স্বীকৃতি অর্জন করতে পারব। তবে এজন্য অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে।.tdi_3_c34.td-a-rec-img{text-align:left}.tdi_3_c34.td-a-rec-img img{margin:0 auto 0 0} (adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে