মুক্তিযোদ্ধার মাথা গোঁজার ঠাঁইয়ের আকুতি
১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়া সশস্ত্র যুদ্ধের মাধ্যমে রক্তস্নাত স্বাধীনতা অর্জনের সূর্যসৈনিক বীর মুক্তিযোদ্ধা বিপ্লব ঘোষ। তিনি ঝিনাইদহ পৌর এলাকার চাকলাপাড়াস্থ মৃত গৌর পদ ঘোষের বড় ছেলে। বর্তমান তিনি গৃহহীন হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। নেই কোনো মাথা গোঁজার ঘর। মুক্তিযোদ্ধা হয়েও তিনি সারাজীবন ছোট ভাই সন্তোষ কুমার ঘোষ ওরফে বাবলু ঘোষের জায়গায় বসবাস করে আসছেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করার কিছুদিন পর লেখাপড়া করার পাশাপশি তিনি সংগীত চর্চা করতেন। পরবর্তীতে কলেজে লেখাপড়া করা অবস্থায় তিনি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। তখনকার সময় পাবনা মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়ে তাকে সুস্থ করা হয়। ১৯৯০ সালে আবারো তিনি একই সমস্যায় ওই হাসপাতালে ভর্তি হয়। তখন মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট তার চিকিৎসা বাবদ ১০ হাজার টাকা আর্থিক সহযোগিতা করে। পরে কিছুটা সুস্থ হলেও দিনে দিনে তিনি মানসিক প্রতিবন্ধী হয়ে পড়েন। বর্তমানে ভারতের পশ্চিমবাংলার মোদনপুরস্থ (মানস) মানসিক হাসপাতালের এক ডাক্তারের অধীনে চিকিৎসাধীন আছে। এই বিপ্লব কুমার ঘোষের গ্রুপ কমান্ডার ছিলেন জেলার শৈলকুপা উপজেলার সাবেক সংসদ সদস্য (প্রয়াত) গোলাম মোস্তফা ও ঝিনাইদহের চাকলাপাড়ার মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান। বর্তমানে ছোট ভাই বাবলু ঘোষের সংসারে তার জীবন কাটছে। মুক্তিযোদ্ধা বিপ্লব ঘোষের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, একভাবেই আমার দিন পার হয়ে যায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে অনেক কিছু করেছেন। অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের ঘর তৈরি করে দিচ্ছেন। কিন্তু তার জন্য যেকোনো কারণেই হোক এখনো পর্যন্ত সে সুযোগ আসেনি। কোনো আর্থিক সাহায্য নয়। তিনি তার জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত নিজের মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু চাইছেন। এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সিদ্দিক আহমেদ বলেন, তিনি একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। বর্তমানে শারীরিকভাবে অসুস্থ। তিনি আবেদন করলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুযায়ী অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধারা পর্যায়ক্রমে বাসস্থান পাবে। কোনো মুক্তিযোদ্ধাই ভবিষ্যতে গৃহহীন থাকবে না।
- ট্যাগ:
- অন্যান্য সংবাদ
- শেখ হাসিনা