কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

খুলনা বিভাগে করোনা রোগীর সংখ্যা ১৫ হাজার ছাড়ালো, মৃত্যু ২৫৮

মানবজমিন খুলনা বিভাগ প্রকাশিত: ১৬ আগস্ট ২০২০, ০০:০০

করোনা রোগীর সংখ্যা খুলনা বিভাগে ছাড়িয়েছে ১৫ হাজার। পাশপাশি সুস্থ হয়েছেন ১০ হাজার ৩৭৬ জন। মৃত্যু হয়েছে ২৫৮ জনের। এ তথ্য নিশ্চিত করে বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তর। তবে করোনা রোগী আক্রান্ত, সুস্থ এবং মৃত্যুর হারের দিক থেকে বিভাগের ১০ জেলার মধ্যে প্রথম অবস্থানে খুলনা। কর্তৃপক্ষের দাবি, গত মার্চ মাস থেকে যে হারে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছিল তা অনেকখানি এখন নিয়ন্ত্রণে। প্রশাসনের কঠোর নজরদারি, চিকিৎসকদের সময়পযোগী ব্যবস্থা নেয়া এবং জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির কারণে করোনাভাইরাস খুলনা বিভাগে আগের তুলনায় অনেকখানি নিয়ন্ত্রণে।স্বাস্থ্য দপ্তরের সূত্র মতে, গত ১০ই মার্চ থেকে ১৪ই আগস্ট অবধি বিভাগের দশ জেলায় করোনা পজেটিভ রোগীর সংখ্যা সর্বমোট ১৫ হাজার ৩৮৪ জন। সুস্থ হয়েছেন ১০ হাজার ৩৭৬ এবং মারা গেছেন ২৫৮ জন। এর মধ্যে খুলনা জেলায় আক্রান্ত ৪ হাজার ৯৯২, সুস্থ ৩ হাজার ৭১৫ এবং মারা গেছেন ৭৪ জন। কুষ্টিয়া জেলায় আক্রান্ত ২ হাজার ২০৬, সুস্থ ১ হাজার ৫৭৮ এবং মারা গেছেন ৪৪ জন। যশোর জেলায় আক্রান্ত ২ হাজার ৩৯৮, সুস্থ ১ হাজার ৩৪৪ এবং মারা গেছেন ৩৩ জন। সাতক্ষীরা জেলায় আক্রান্ত ৮৪৮, সুস্থ ৬২৫ এবং মারা গেছেন ২৫ জন। ঝিনাইদহ জেলায় আক্রান্ত ১ হাজার ২৭৮, সুস্থ ৭৪৪ এবং মারা গেছেন ২১ জন। চুয়াডাঙ্গা জেলায় আক্রান্ত ৯৪২, সুস্থ ৪৮৬ এবং মারা গেছেন ১৭ জন। বাগেরহাট জেলায় আক্রান্ত ৭৭৪, সুস্থ ৫৪২ এবং মারা গেছেন ১৬ জন। নড়াইল জেলায় আক্রান্ত ৯৮৩, সুস্থ ৭৪৩ এবং মারা গেছেন ১৩ জন। মাগুরা জেলায় আক্রান্ত ৬৪০, সুস্থ ৪৩৫ এবং মারা গেছেন ৮ জন। মেহেরপুর জেলায় আক্রান্ত ৩২৩, সুস্থ ১৬৪ এবং মারা গেছেন ৭ জন।খুলনা স্বাস্থ্য বিভাগের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মো. মনজুরুল মুরশিদ জানান, খুলনাতে জনসংখ্যা বেশি হওয়ায় আক্রান্ত, সুস্থ এবং মারা মৃত্যুর হার বেশি। তেমনভাবে মেহেরপুর জেলা অনেক ছোট হওয়ায় সেখানে হার কম। তবে তুলনামূলকভাবে খুলনা বিভাগে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার আগের তুলনায় নিয়ন্ত্রণে। বর্তমান সরকারের নির্দেশনায় প্রশাসনের করোনা মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ নেয়া, চিকিৎসকদের সেবা প্রদানে আন্তরিকতা এবং সব ধরনের সাপোর্ট পাওয়া এবং সর্বপরি সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বেড়ে যাওয়ায় এটি আগের তুলনায় নিয়ন্ত্রণে। এদিকে মহানগরীসহ খুলনা জেলাতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৫ হাজার ছাড়িয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৭ জন শনাক্ত হওয়ার পর মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫০৩৯ জনে। এছাড়া সুস্থ হয়েছেন ৩ হাজার ৭শ’ ৭৪ জন। আর প্রাণ ঝরেছে ৭৫ জনের।খুলনা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার পর্যন্ত খুলনায় আক্রান্ত হয়েছে ৫ হাজার ৩৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৩ হাজার চারশ’ ৯২ এবং মহিলা ১৫শ’ জন। যার মধ্যে দাকোপে ১৩৪, বটিয়াঘাটায় ৪৫, রূপসায় ২১০, তেরখাদায় ৫৩, দিঘলিয়ায় ১০৬, ফুলতলায় ২০০, ডুমুরিয়ায় ১৫৬, পাইকগাছায় ১১৬, কয়রায় ৬৪ জন করোনায় আক্রান্ত। এছাড়া খুলনা সিটি করপোরেশন এলাকায় আক্রান্ত হয়েছে ৩ হাজার ৯০৭ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩ হাজার ৭শ’ ৭৪ জন। আর মৃত্যু হয়েছে ৭৫ জনের।এদিকে খুলনা মেডিকেল কলেজের (খুমেক) আরটি-পিসিআর ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় ৯৫ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। যার মধ্যে মহানগরীসহ খুলনা জেলাতেই ৪৭ জন। গত শুক্রবার খুমেকের পিসিআর ল্যাব থেকে এ তথ্য জানানো হয়। কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা. মেহেদী নেওয়াজ জানান, খুমেকের আরটি-পিসিআর মেশিনে শুক্রবার মোট ২৮২ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। যার মধ্যে খুলনার নমুনা ছিল ১৬০টি। এর মধ্যে মোট ৯৫ জনের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজেটিভ এসেছে। যার মধ্যে ৪৭ জন খুলনার। এছাড়াও খুমেক ল্যাবে বাগেরহাটের ৪ জন, সাতক্ষীরার ৩৬, নড়াইলের ২, যশোরের ৪, পিরোজপুর ও ঝিনাইদহের ১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।করোনা হাসপাতালে অক্সিজেন এর অভাবে এক রাতে তিন রোগীর মৃত্যু: নগরীর নূরনগর করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে অক্সিজেনের অভাবে এক রাতেই তিন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার রাতের আলাদা আলাদা সময়ে এ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। রোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিরাতে অন্তত ৪ ঘণ্টার বেশি অক্সিজেন থাকে না। এতে সার্বক্ষণিক অক্সিজেনের প্রয়োজন হওয়া রোগীরা মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করলেও হাসপাতালের পরিচালক ডা. মুুন্সি রেজা সেকেন্দার রেগুলার কাজের বাইরে চাপ নিতে নারাজ বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, যশোর সদর থানার বাসিন্দা আনোয়ারা বেগম (৬০) কে ১২ই আগস্ট রাত সাড়ে আটটায় তার সার্বক্ষণিক অক্সিজেনের প্রয়োজন হচ্ছিল। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত পৌনে ১২টায় তার মৃত্যু হয়। পরিবার সূত্রে জানা যায়, রাত ১০টার পর থেকে বেশিরভাগ রোগীর কাছেই অক্সিজেন ছিল না। যে কয়েকজনের কাছে ছিল তাদেরও কষ্ট হওয়ায় তারা কোনো অক্সিজেন পায়নি। পরে আইসিইউতে নিয়ে চেষ্টা করা হলেও তাকে বাঁচানো যায়নি।নূরনগর এলাকার বাসিন্দা হাবিবুর রহমান মনি (৫০) করোনা পজেটিভ হয়ে ১৩ই আগস্ট বৃহস্পতিবার রাত পৌণে নয়টায় ভর্তি হন করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসাধীন থাকলেও রাতে অক্সিজেন না পেয়ে শ্বাসকষ্টে ১৪ই আগস্ট রাত পৌনে ১টায় তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর আগে তাকেও আইসিইউতে নেয়া হয়েছিল।যশোরের শার্শা এলাকার বাসিন্দা আতিয়ার রহমান ১৩ই আগস্ট ভর্তি হন নূরনগর করোনা হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৪ই আগস্ট দিবাগত রাত ১টা ৪০ মিনেটে মৃত্যু হয়। আতিয়ার রহমানের পরিবারের অভিযোগ মৃত্যুর আগে ঠিকমতো অক্সিজেন পাননি আতিয়ার রহমান।খোঁজ নিয়ে জানা যায়, করোনা হাসপাতালে সারা দিনের মধ্যে ৪-৫ ঘণ্টা অক্সিজেন থাকছে না। এমনকি আইসিইউতেও অক্সিজেনের সংকট দেখা যাচ্ছে। অক্সিজেন সরবরাহের দায়িত্বে থাকা ওয়ার্ড মাস্টারের গাফিলতিতে ঠিকমতো অক্সিজেন সরবরাহ করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালের সমন্বয়কারী ডা. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, সিলিন্ডারের কিছুটা সংকট আছে কিন্তু এই তিনজন তো আইসিইউতে মারা গেছে সেখানে সেন্ট্রাল লাইন আছে। সেখানে অক্সিজেনের অভাবে মারা যাওয়ার কথা না। ওয়ার্ড মাস্টার সময়মতো অক্সিজেন রিফিল করাতে অনেক সময় না পারার কারণে কিছুটা সংকট আছে। দুই একদিনের মধ্যে ফ্লু কর্ণারের সিলিন্ডার দেয়া সম্ভব হলে সেখানে আর সংকট থাকবে না।খুমেক হাসপাতালের পরিচালক ডা. মুন্সি রেজা সেকেন্দার মোবাইলে বারবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়ে রিপ্লাই পাওয়া যায়নি।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও