এলাকাটির কেউ নমুনা পরীক্ষা, মাস্ক পরা, দূরত্ব মানার ‘ঝামেলা’ পোহান না
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার হাওরবেষ্টিত অরুয়াইল বাজারের প্রায় প্রতিটি দোকানে ১০–১২ জন করে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন। করোনাভাইরাসের সংক্রমণে পুরো বিশ্বের দিনলিপি বদলে গেলেও আড্ডারত ব্যক্তিদের দেখে মনে হলো তাঁরা নির্ভার। মুখে মাস্ক নেই, হাতে গ্লাভস নেই, সামাজিক দূরত্ব না মেনেই বসেছেন।
তাঁরা তো এভাবে সংক্রমণের ঝুঁকিতে আছেন বলতেই নিরুত্তাপ জবাব, ‘আমাদের এখানে করোনাভাইরাস নেই, এখানে কেউ আক্রান্ত হয়নি, মারাও যায়নি, আল্লাহ ভরসা।’ অরুয়াইল বাজার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও অরুয়াইল ইউনিয়ন শাখা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু তালেব প্রথম আলোকে বলেন, এখানকার কেউ টেস্টও করে না, মাস্কও পরে না, সবাই আল্লাহ ভরসা করেই চলছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) জানিয়েছেন, তাঁর জানামতে, অরুয়াইল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ছাড়া এলাকাটির কেউ করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরীক্ষার জন্য নমুনা দিতে আসেননি।সরাইল উপজেলার হাটবাজারগুলোতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশনা ও স্বাস্থ্যবিধি পালনের বিষয়টি বরাবরই উপেক্ষিত হচ্ছে। অভাব রয়েছে সচেতনতার।
সবচেয়ে বেহাল অবস্থায় রয়েছে গ্রামের হাটবাজারগুলো। ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানেও সুফল আসছে না। দুই সপ্তাহ ধরে উপজেলার গ্রামের বাজারগুলোতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের তৎপরতায়ও ভাটা পড়েছে। আজ রোববার ছিল অরুয়াইল বাজারের সাপ্তাহিক হাটের দিন। সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত অরুয়াইল বাজারে অবস্থান করে দেখা গেছে, চারদিক থেকে সড়ক ও নৌপথে বাজারে ক্রেতা–বিক্রেতা আসছে।
হাঁস–মুরগি-কবুতর, কাঁচাবাজার, মাছবাজার, ওষুধের দোকান ও কাপড়ের দোকানসহ নানা পণ্যের দোকানপাটে মানুষের জটলা দেখা গেছে। এখানে সামাজিক দূরত্ব রজায় রেখে কেউ কেনাকাটা করছে না। সামাজিক দূরত্বের বিষয়টি উপেক্ষার পাশাপাশি ক্রেতা–বিক্রেতা কারও মুখেই মাস্ক বা হাতে গ্লাভস পরতে দেখা যায়নি। প্রায় প্রতিটি চায়ের দোকানে ১০-১২ জন একত্রে বসে অকারণে আড্ডা দিচ্ছেন।