খালাতো বোনের সঙ্গে প্রেম, বাধা দেয়ায় অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে পুড়িয়ে হত্যা
পরকীয়ায় বাধা দেয়ায় হাত-পা বেঁধে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে পুড়িয়ে হত্যা করেছেন স্বামী। পুড়িয়ে মেরেই ক্ষান্ত হননি। হত্যাকাণ্ড আড়াল করতে দুর্ঘটনা বলে ময়নাতদন্ত ছাড়াই ইসরাত জাহান ইমা নামে এ গৃহবধূর দাফন করা হয়। তবে মৃত্যুর আগে গৃহবধূর মায়ের মোবাইল ফোনে ধারণ করা ১১ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
১১ জুন বিকেলে বরিশালের হিজলা উপজেলার বড়জালিয়া ইউপির খুন্না গবিন্দপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। দগ্ধ ইমা ১৮ জুন রাজধানীর শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। নিহত ইসরাত জাহান ইমা একই উপজেলার হরিনাথপুর ইউপির মহিষখোলা গ্রামের শফিকুল ইসলাম মাসুমের মেয়ে।
এ ঘটনায় ২১ জুন থানায় একটি হত্যা মামলা করেন নিহতের বাবা। মামলায় নিহতের স্বামী খুন্না গবিন্দপুর টেকের বাজারের মুদি ব্যাবসায়ী মহসিন রেজা, ভাশুর মোস্তফা ব্যাপারী, শ্বশুর দেলোয়ার হোসেন ব্যাপারী ও প্রেমিকা শাহনাজ বেগমকে আসামি করা হয়েছে। তবে বিষয়টি টের পেয়েই আসামিরা আত্মগোপনে চলে যান। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন হিজলা থানার ওসি অসীম কুমার সিকদার।
নিহতের চাচা মাজহারুল ইসলাম জানান, আট বছর আগে মহসিন রেজার সঙ্গে ইমার বিয়ে হয়। তাদের পাঁচ বছরের একটি মেয়ে ও দেড় বছরের ছেলে রয়েছে। এছাড়া ইমা তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বাও ছিলেন।
তিনি আরো জানান, সম্প্রতি খালাতো বোন শাহনাজ বেগমের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে মহসিনের। বিষয়টি জানাজানি হলে মহসিন ও ইমার প্রায় ঝগড়া হতো। এ নিয়ে ইমাকে নির্যাতনও করা হতো। সবশেষ ১০ জুন একই বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রী বাকবিতণ্ডা হয়। খবর পেয়ে মেয়ের বাড়িতে যান ইয়াসমিন বেগম। এমনকি ওই দিন শাশুড়ির সামনেই স্ত্রীকে মারধর করেন মহসিন।
এ ঘটনার পরদিন বিকেলে নিজ বাড়ি যাওয়ার সময় ফোনে জামাইকে আসতে বলেন শাশুড়ি ইয়াসমিন। কিন্তু জামাই না আসায় রাগ করেই চলে যান তিনি। এর কিছুক্ষণ পরেই শ্বশুরকে স্ত্রীর মৃত্যুর সংবাদ জানান মহসিন। পরে দগ্ধ ইমাকে মুমূর্ষু অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন প্রতিবেশী শিপন ও রফিক নামে দুই যুবক। কিন্তু সামনে থেকেও স্ত্রীর কাছে আসেননি মহসিন। ফলে বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ শুরু হয়।