করোনা চিকিৎসায় হাইকোর্টের আদেশ স্থগিতে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন
করোনাকালে রোগীদের ফিরিয়ে দেয়া, অবহেলায় মৃত্যু, আইসিইউ বণ্টন, বেসরকারি হাসপাতাল অধিগ্রহণ, অক্সিজেন সরবরাহ ও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কয়েকদফা নির্দেশনা ও অভিমত দিয়ে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করেছেন রাষ্ট্রপক্ষ। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বারজজ আদালতে এ আবেদন করা হয়েছে বলে মঙ্গলবার জানিয়েছেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা। এর আগে সোমবার (১৫ জুন) করোনাভাইরাসের এ দুর্যোগকালে অক্সিজেন সিলিন্ডারের মূল্য নির্ধারণ, বেসরকারি হাসপাতাল মনিটরিংসহ সকল রোগীর চিকিৎসা নিশ্চিত করা নিয়ে ১০ দফা নির্দেশনা দেন হাইকোর্ট।
এ-সংক্রান্ত পৃথক কয়েকটি রিট আবেদনের শুনানির পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের বেঞ্চ (ভার্চুয়াল) এসব নির্দেশনা দেন। নির্দেশনাগুলো হলো- >> স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জারিকৃত নির্দেশনাসমূহ যথাযথভাবে পালিত হচ্ছে কি না, তা আগামী ৩০ জুন স্বাস্থ্য সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের আদালতে দাখিল করতে হবে। >> উপরোক্ত নির্দেশনাসমূহ পালনে ব্যর্থ ব্যক্তি বা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত কোনো ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে কি না প্রতিবেদনে তা উল্লেখ করতে হবে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে জারিকৃত নির্দেশনা অনুসারে ৫০ শয্যার অধিক বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমূহে ১৫ জুন পর্যন্ত কতজন কোভিড এবং নন-কোভিড রোগীর চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে সে সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরকে এ নির্দেশ পালন করতে হবে। পাশাপাশি ৫০ শয্যার অধিক বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমূহের একটি তালিকা চেয়েছেন আদালত। >> বর্তমান প্রেক্ষাপটে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশনাসমূহ বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমূহ যথাযথভাবে প্রতিপালন করছে কি না, সে বিষয়ে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমূহের কর্তৃপক্ষকে ১৫ দিন পর পর একটি প্রতিবেদন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতরকে পাঠাতে হবে।
ওই সকল প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ১৫ দিন পর পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরকে এ প্রতিবেদন আদালতে পাঠাতে বলা হয়েছে। >> ঢাকা মহানগর ও জেলা, চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলাসহ বিভাগীয় শহরের বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমূহ যাতে কোভিড ও নন-কোভিড সকল রোগীকে পরিপূর্ণ চিকিৎসাসেবা প্রদান করে সে বিষয়ে সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতরকে একটি মনিটরিং সেল গঠনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। >> কোনো সরকারি বা বেসরকারি হাসপাতালে গুরুতর অসুস্থ কোনো রোগীকে চিকিৎসা সেবা প্রদানে অনীহা দেখালে এবং এতে করে ওই রোগীর মৃত্যু ঘটলে ‘তা অবহেলাজনিত মৃত্যু’ হিসেবে বিবেচিত অর্থাৎ ‘ফৌজদারি অপরাধ’ হিসেবে বিবেচিত হবে।