কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

'মহামারিতে বেশিরভাগ মৃত্যু ভাইরাস থেকে নয়, অন্য কারণে‌ ঘটবে'

ঢাকা টাইমস প্রকাশিত: ০৩ জুন ২০২০, ০৮:৪৬

একটি বড় গাছের কোটরে খেলতে ভালোবাসতো দুই বছর বয়সী এমিলি ওয়ামোনো। এমিলিরা যে গ্রামটিতে থাকতো সেটির নাম মেলিয়ানডো, গিনির এক জঙ্গলের একেবারে ভেতরে এই গ্রাম। কিন্তু গাছের এই কোটরটির খোঁজ পেয়ে গিয়েছিল অন্য কিছু প্রাণী। কিছু বাদুড়। খেলতে যাওয়া শিশুরা মাঝে-মধ্যে এই বাদুড়গুলো ধরে নিয়ে আসতো। এরপর এগুলো রান্না করে তারা খেত। এরপর একদিন এমিলি অসুস্থ হয়ে পড়ল। ২০১৩ সালের ২৪ শে ডিসেম্বর এক ভয়ঙ্কর এবং রহস্যজনক অসুখে এমিলি মারা গেল। এরপর এই রোগে আক্রান্ত হলো তার মা, বোন এবং দাদী। তাদেরও মৃত্যু ঘটলো একই রোগে। তাদের শেষকৃত্যানুষ্ঠানের পর এই রহস্যজনক অসুখ যেন আরও বেশি করে ছড়িয়ে পড়তে লাগলো।


২০১৪ সালের ২৩শে মার্চ নাগাদ সেখানে অন্তত ৪৯টি এ ধরনের অসুস্থতা এবং ২৯ জনের মৃত্যু ঘটলো। বিজ্ঞানীরা পরে নিশ্চিত করেছিলেন যে এটি ছিল ইবোলা ভাইরাসের সংক্রমণ। এর পরের সাড়ে তিন বছর ধরে সারা পৃথিবী আতঙ্কের সঙ্গে দেখেছে কীভাবে এই ভাইরাসের আক্রমণে অন্তত ১১,৩২৫ জনের মৃত্যু ঘটেছিল। কিন্তু প্রাণঘাতী ইবোলা ভাইরাসের বিস্তারের পাশাপাশি কিন্ত ঘটে চলেছিল আরেক ট্রাজেডি। এই রোগের বিস্তার স্থানীয় স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থার ওপর মারাত্মক চাপ তৈরি করেছিল। অনেক স্বাস্থ্যকর্মী মারা গিয়েছিল। বড় বড় হাসপাতালগুলো বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। যেগুলো খোলা ছিল সেগুলো ইবোলা নিয়ে এত ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল যে অন্য রোগীদের চিকিৎসা দেওয়ার সুযোগ তাদের ছিল না। ইবোলা ভাইরাসের বিস্তার সবচেয়ে বেশি ঘটেছিল সিয়েরালিওন, লাইবেরিয়া এবং গিনিতে।



সেখানে লোকজন যতটা সম্ভব স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থাকে এড়িয়ে চলছিল। তারা আতঙ্কে ছিল এই রহস্যজনক নতুন অসুখ নিয়ে। কিন্তু একই সঙ্গে তারা ভয় পাচ্ছিল ডাক্তারদের। সাদা ‍অ্যাপ্রোন পরা ডাক্তাররা যেন হঠাৎ জীবন রক্ষাকারীর পরিবর্তে যমদূতের প্রতীক হয়ে উঠেছিল। স্বাস্থ্যকর্মীদের যেন হঠাৎ সবাই সামাজিকভাবে এড়িয়ে চলতে শুরু করলো। ২০১৭ সালে এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, এর ফলে ইবোলা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের সময় আফ্রিকার এই দেশগুলোতে স্বাস্থ্যসেবা নিতে আগ্রহী মানুষের সংখ্যা নাটকীয়ভাবে কমে গিয়েছিল। সন্তান জন্ম দেয়ার সময় চিকিৎসা সেবা চেয়েছেন এমন গর্ভবতী নারীর সংখ্যা কমে যায় ৮০ শতাংশ। টিকা নেয়ার হারও কমে যায় মারাত্মকভাবে। ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া শিশুদের সংখ্যা কমে যায় ৪০ শতাংশ। ইবোলা ভাইরাসের বিস্তার শেষ পর্যন্ত ঠেকিয়ে দেয়া গেলো সম্মিলিত এবং ব্যাপক আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও প্রচেষ্টার মাধ্যমে।



কিন্তু অন্যদিকে দেখা গেল, ইবোলা ভাইরাস ঠেকাতে যা যা করা হয়েছিল, তার ফলে অনেক বেশি মানুষের মৃত্যু ঘটেছিল। অর্থাৎ, ইবোলা ভাইরাসে প্রত্যক্ষ মৃত্যুর সংখ্যাকে ছাড়িয়ে গিয়েছিল পরোক্ষ মৃত্যুর ঘটনা। ২০২০ সালে বিশ্ব যেন এরকম এক দৃশ্যপটের মুখোমুখি হওয়ার ঝুঁকিতে। শত্রু যখন কেবল ভাইরাস নয় কোভিড-১৯ মহামারীর শুরুতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তাদের জনগণকে আশ্বস্ত করতে নানা ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছিল। হাসপাতালের বেড এবং ভেন্টিলেটর অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কেবল কোভিড-১৯ রোগীদের জন্য সংরক্ষিত রাখা হচ্ছিল। যে সমস্ত ঔষধ তখনও পর্যন্ত কোভিড-১৯ এর চিকিৎসায় কার্যকরী বলে প্রমাণিত হয়নি সেগুলো মজুদ করছিল।


ডাক্তারদের বেশি সংখ্যায় মোতায়েন করা হচ্ছিল হাসপাতালের রেস্পিরেটরি ওয়ার্ডে। কিন্তু যখন সংক্রমণের হার ক্রমশ বাড়তে লাগলো, তখন সব দেশই কম-বেশি পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খেতে শুরু করলো। তখন জরুরি নয় এমন ধরনের চিকিৎসা বিলম্বিত করছিল অনেক দেশ। যেমন যৌন স্বাস্থ্য সম্পর্কিত অপারেশন, ধূমপান নিরোধ কর্মসূচি, মানসিক স্বাস্থ্য চিকিৎসা, দাঁতের চিকিৎসা, টিকাদান, ক্যান্সারের রুটিন চেকআপ এগুলো বন্ধ করে দেয়া হচ্ছিল। কিন্তু দেখা গেল, এসব চিকিৎসা সেবাও আসলে খুবই জরুরী। ফলে একটি মাত্র রোগকে মোকাবেলায় এই তীব্র মনোযোগের পরিণামে ভয়ংকর কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আমরা এখন দেখতে পাচ্ছি।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও