করোনায় অর্থনৈতিক ঝুঁকিতে ১০ কোটি মানুষ
করোনায় বাংলাদেশের ১০ কোটি ২২ লাখ মানুষের আয় কমে গেছে৷ আর পরিবার হিসেবে আয় কমেছে শতকরা ৭৪ ভাগ পরিবারের৷ এখন প্রধান কাজ হলো আয় যাতে না কমে তার ব্যবস্থা করা৷ আর সেটা না করা গেলে দারিদ্র্য আরো বাড়বে৷
ব্র্যাক, ডেটা সেন্স এবং উন্নয়ন সমন্বয়-এর এক যৌথ সমীক্ষায় করোনাকালে বাংলাদেশের মানুষের আর্থনৈতিক অবস্থার এই চিত্র পাওয়া গেছে৷ সমীক্ষায় আইএমএফসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও জাতীয় প্রতিষ্ঠানের সমীক্ষা এবং গবেষণা ব্যবহারের পাশাপাশি একটি জরিপও করা হয়৷ গত ১৫-১৮ এপ্রিলের সময়ের মধ্যে দেশের ২৫টি জেলার ৯৬২ জনের কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট প্রশ্নমালার ভিত্তিতে তথ্য নেয়া হয়৷ আর তাদের বাছাই করা হয় দৈব চয়নের ভিত্তিতে৷
‘কোভিড-১৯ এবং জাতীয় বাজেট ২০২০-২০২১: নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য কৌশল পুনর্বিবেচনা’ শিরোনামে এই সমীক্ষায় বলা হয়েছে ১৪ লাখেরও বেশি প্রবাসী এই করোনার সময় চাকরি হারিয়েছেন৷ তাদের একটি অংশ এরইমধ্যে দেশে ফিরেছেন৷ বাকিরা ফেরার অপেক্ষায়৷
সমীক্ষায় বলা হয়েছে, করোনায় অর্থনৈতিক ও স্বাস্থ্যগত ঝুঁকিতে থাকা ১০ কোটিরও বেশি মানুষের মধ্যে পাঁচ কোটি ৩৬ লাখ মানুষ চরম দরিদ্র অবস্থার মধ্যে আছেন৷ যাদের এখন দৈনিক আয় দুই ডলারের কম৷ তাদের মধ্যে চার কোটি ৭৩ লাখ উচ্চ অর্থনৈতিক ঝুঁকি এবং তিন কোটি ৬৩ লাখ মানুষ উচ্চ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছেন৷
যেসব পরিবার থেকে সরাসরি তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে তাদের মধ্যে কমপক্ষে ৩৪.৮ শতাংশ পরিবার থেকে কমপক্ষে একজন সদস্য চাকরি হারিয়েছেন৷ গত মার্চ থেকে মে মাসে তাদের পারিবারিক উপার্জন ৭৪ ভাগ কমে গেছে৷
এই সময়ে পোশাক খাতে বড় ধাক্কা লেগেছে৷ তৈরি পোশাক খাতে রপ্তানি ২০১৯-এর এপ্রিলের তুলনায় চলতি বছরের এপ্রিলে ৮৪ শতাংশ কমেছে৷
গত মার্চের মাঝামাঝি থেকে ৭ এপ্রিলের মধ্যে এক হাজার ১১৬টি কারখানা কারখানা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে৷ ২২ লাখ শ্রমিক চাকরি হারিয়েছেন৷
সমীক্ষায় দেখা যায়, করোনাকালে অনলাইন বা ডিজিটাল শিক্ষায় অংশ নেয়া অনেক শিক্ষার্থীর পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না৷ কারণ দেশে মাত্র ৩৪ শতাংশ পরিবারের স্মার্টফোন আছে৷ টিভি দেখার সুযোগ আছে ৫৪ শতাংশ পরিবারের৷ এর বাইরের শিশুরা ডিজিটাল মাধ্যমে পরিচালিত শিক্ষা থেকে বাদ পড়ে যাচ্ছে৷