এই প্রথমবার উনি নাকে ঘষা দেননি!
টিভি ব্যক্তিত্ব মোস্তফা কামাল সৈয়দ করোনাভাইরাসের কাছে পরাজয় মেনে নিলেন ৩১ মে দুপুরে। তার এই প্রস্থানে মিডিয়ায় নেমেছে শোকের ছায়া। বিটিভি থেকে এনটিভি, মোট পাঁচ দশকের সফল কর্মজীবন কাটিয়েছেন এই নন্দিতজন। পর্দার আড়ালের মানুষ হিসেবে তার অবদান আলাদা করে চোখে লাগার মতো। তাকে বলা হয়, টিভি মাধ্যমের সবচেয়ে আধুনিক মানুষ। যার আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে দেশের টিভি শিল্পে। সেসব ভেবেই স্মৃতিকাতর হলেন সাংবাদিক ও নির্মাতা জসীম আহমেদ। লিখেছেন, নিজের চোখে দেখা একজন মোস্তফা কামাল সৈয়দকে নিয়ে-বাংলাদেশ টেলিভিশনের তৃতীয় তলায় ডিডিজি (প্রোগ্রাম)-এর বিশাল কক্ষে তার সামনে চুপ করে বসে আছি। তার পিএস পাতা ওলটাচ্ছে আর তিনি একটার পর একটা স্বাক্ষর করছেন।
সব ফাইল গুছিয়ে পিএস চলে যাওয়ার পর তিনি আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘কি খবর জসীম সাহেব?’বললাম, জ্বি আমাকে ফোন করে দেখা করতে বললো আপনার অফিস থেকে।ডান হাত দিয়ে নাকের মাঝখানে প্রায় ৩০ সেকেন্ডের মতো ঘষে আমার চোখে চোখ রেখে তিনি বললেন, ‘ডকুটা দেখলাম। আপনারতো অ্যাবিলিটি আছে, ফাঁকি দিলেন কেন?’বললাম, সীমিত বাজেট, চেষ্টা কম করিনি। আর্মি কিছু সুবিধা দেওয়ায় কাজটা শেষ পর্যন্ত করা গেলো।
এবার একটু হাসি দিয়ে বললেন, ‘দেখেন আপনি আরও ভালো করতে পারতেন এই বিশ্বাস থেকে মামুন ভাই (আব্দুল্লাহ আল মামুন), বাচ্চু (নাসির উদ্দিন ইউসুফ), বাদল রহমান, মুরাদ (মানজারে হাসিন), টুটুলদের (সাইদুল আনাম টুটুল) মতো মেকারদের সাথে আপনাকে একটা সুযোগ দেওয়া হলো।’মন খারাপ করে আমি কিছুক্ষণ চুপ করে বসে আছি। তিনিও চুপচাপ। কিছুক্ষণ পর সাইড টেবিল থেকে একটা প্লেট সামনে এগিয়ে বললেন, ‘নেন পেয়ারা খান, কেজি পেয়ারা। আরেকটা কাজ আপনাকে দেওয়া হবে।
আশাকরি আরেকটু মনোযোগী হবেন। শোনেন, ডিজি সাহেব (সৈয়দ সালাউদ্দিন জাকি) আর জাফর সাহেব (কাজি আবু জাফর সিদ্দিকি) আপনার কাজটা পছন্দ করেছে বলে ১৫ ডিসেম্বর ৮টার সংবাদের পর অনএয়ার হবে। নাইলে আমি ঠিকই আটকে দিতাম।’বিটিভির কমিশন করা ‘স্বাধীনতা আমার স্বাধীনতা’ সিরিজে আমার বানানো ডকুমেন্টারি ‘রক্তের অক্ষরে লেখা’-এর প্রচার সিডিউল চূড়ান্ত হওয়ার আগে ডিডিজি মোস্তফা কামাল সৈয়দের সাথে আমার আলাপের অংশবিশেষ এতক্ষণ তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। সম্ভবত ৯৭ সালের ডিসেম্বর মাসের ঘটনা।পরবর্তীতে তিনি ডেকে ডেকে কতো কাজ দিয়েছেন- ফিকশন, নন ফিকশন। এবং সব কাজ জমা দেওয়ার পরই ডেকে নিয়ে নাক ঘষে একই কথা বলতেন, ‘আগের কাজটা অনেক ভালো ছিলো, এই কাজটা খারাপ হলো।