চীন-মার্কিন বাণিজ্য যুদ্ধের আগুনে ঘি ঢালছে করোনা?
করোনাভাইরাস মহামারিতে থমকে যাওয়া বিশ্বে থেমে নেই চিরবৈরী দুই পরাশক্তি চীন-যুক্তরাষ্ট্রের চিরচেনা অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ। বিশ্বের প্রধান দুই অর্থনীতির এ দুই দেশের সম্পর্ক ক্রমেই অবনতির দিকে যাচ্ছে। করোনাভাইরাস সঙ্কট বিশ্বের দুই দেশের মধ্যে একটি পূজিবাদী, বাণিজ্য এবং প্রযুক্তি যুদ্ধের গতিকে ত্বরান্বিত করছে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনবিসির সঙ্গে আলাপকালে ক্রসবর্ডার ক্যাপিটালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাইকেল হোওয়েল সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, চীন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাথমিক বাণিজ্যচুক্তি হুমকির মুখে পড়েছে। এমনকি সেখানে একটি নতুন যুদ্ধক্ষেত্র হতে পারে : মূলধন বিনিয়োগ।
তিনি বলেন, আমি মনে করি দুই দেশের মাঝে আসন্ন প্রকৃত উত্তেজনা শুধুমাত্র বাণিজ্য যুদ্ধ রূপ নেবে না বরং এটি হবে মূলধন যুদ্ধ। বর্তমানে আমরা এমন এক বিশ্বে রয়েছি যেখানে মূলধন যুদ্ধ গুরুত্বপূর্ণ। করোনাভাইরাস সঙ্কটের মাঝেও বিশ্ব বাজারে প্রচুর পরিমাণে তরল ঢালা হয়েছে।
মহামারির অর্থনৈতিক ধাক্কা সামাল দেয়ার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং সরকারগুলো বিশাল পরিমাণে উদ্দীপনামূলক প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও নিজ দেশের অর্থনীতির চাকায় গতি আনতে গত মার্চেই ২ ট্রিলিয়ন ডলারের ঐতিহাসিক করোনাভাইরাস ত্রাণ বিলের অনুমোদন দেন।
সাধারণত সঙ্কটের সময়ে সেইফ হ্যাভেন হিসাবে ভাবা হলেও করোনা প্রাদুর্ভাবের মধ্যে ডলারের চাহিদা আগের তুলনায় বেড়েছে। চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় ঘাটতি দেখা দিয়েছে ডলারের; যা অন্যান্য মুদ্রার ওপর প্রভাব ফেলেছে। এর ফলে মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ বিদ্যমান ডলার সরবরাহ ব্যবস্থায় সম্প্রসারণ ঘটিয়েছে। অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া ও ব্রাজিল-সহ অন্যান্য দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে ডলার লেনদেন করছে।
মাইকেল হোওয়েল বলেন, তিনি মনে করেন, মার্কিন মুদ্রাকে আন্তর্জাতিক পরিসরে সহজলভ্য করার ক্ষেত্রে দেশটির নীতিনির্ধারকদের তেমন অভিপ্রায় ছিল না। বিশ্বের আরও ১৪টি দেশের সঙ্গে ডলার শেয়ারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি; যা আমেরিকাকে নিয়ে ১৫ দেশের একটি ডি ফ্যাক্টো গ্রুপ তৈরি করেছে। ডলারের সহজলভ্যতার ক্ষেত্রে এই উদ্যোগ খুবই নগন্য।