চেয়ারম্যানের হুমকিতে মরদেহ ভাসানো হলো নদীতে!
লালমনিরহাটের আদিতমারীতে করোনা সন্দেহে মৌসুমী আক্তার (২২) নামে মৃত এক পোশাক শ্রমিকের মরদেহ তিস্তা নদী থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সোমবার (২৫ মে) বিকেলে জানাজা শেষে মরদেহ নিজ গ্রামে দাফন করে যৌথ থানা পুলিশ। মৃত পোশাক শ্রমিক মৌসুমী আক্তার পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী ইউনিয়নের গুচ্ছগ্রামের গোলাম মোস্তফার স্বামী নিগৃহীতা মেয়ে। তিনি একই উপজেলার বাউড়া ইউনিয়নের সরকারের হাট এলাকার মিজানুর রহমানের স্ত্রী।
পুলিশ ও নিহতের পরিবার জানান, বাউড়া ইউনিয়নের সরকারের হাট এলাকার আবুল কালামের ছেলে মিজানুর রহমানের সঙ্গে ৬ মাস আগে বিয়ে হয় মৌসুমীর। বিয়ের পর থেকেই স্বামীর সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটলে একাই গাজিপুরে একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন মৌসুমী।
গত বৃহস্পতিবার (২১ মে) অসুস্থতা অনুভব করলে একটি ট্রাকে চড়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন তিনি। পথে রংপুরের তাজহাট এলাকায় পৌছালে ট্রাকচালক তাকে মৃত দেখে মরদেহ ফেলে পালিয়ে যান। অজ্ঞাত মরদেহ হিসেবে তাজহাট থানা পুলিশ উদ্ধার করে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠান।
পরদিন শুক্রবার খবর পেয়ে মৃতের বাবা গোলাম মোস্তফা তাজহাট থানায় গিয়ে মেয়ের মরদেহ শনাক্ত করেন। মেয়ের মরদেহ বুঝে নিয়ে বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সাঈদ নিসাদকে মোবাইলে বিষয়টি অবগত করে নিজ এলাকায় দাফনের অনুমতি চান।
কিন্তু চেয়ারম্যান ওই মরদেহসহ পুরো বাড়ি এবং মরদেহবাহী গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন বলে অভিযোগ গোলাম মোস্তফার। অবশেষে নিরুপায় হয়ে গরিব বাবা মেয়ের মরদেহ দাফন করতে তাজহাট এলাকার একজন লাশবাহী গাড়িচালককে ৫ হাজার টাকা দেন। তারা মরদেহ দাফনের আশ্বাস দিয়ে বাবাকে বাড়ি পাঠিয়ে মরদেহটি তিস্তা নদীতে ফেলে দেন।
দুই দিন পরে স্থানীয়দের খবরে রোববার (২৪ মে) রাতে উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের গোবর্দ্ধন গ্রামে তিস্তা নদী থেকে সরকারি ব্যাগে মোড়ানো অজ্ঞাতপরিচয় মরদেহটি উদ্ধার করে আদিতমারী থানা পুলিশ।
সোমবার (২৫ মে) ঈদের নামাজ শেষে আদিতমারী থানা পুলিশ মরদেহটির জানাজা শেষে কেন্দ্রীয় কবরস্থানে দাফনের প্রস্তুতি নিতেই পরিচয় শনাক্ত করেন মৃতের বাবা গোলাম মোস্তফা। অবশেষে আদিতমারী থানা পুলিশ পাটগ্রাম থানা পুলিশের সহায়তায় নিজ গ্রামে মৃত মৌসুমীকে দাফন করে।