কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

করোনার ঝুঁকি নিয়েই পদ্মাপাড়ি

বাংলা নিউজ ২৪ প্রকাশিত: ২৪ মে ২০২০, ১৭:৩৪

শিমুলিয়া ঘাট থেকে: সকাল ৭টা ১০ মিনিট। মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার শিমুলিয়া ঘাটে যাত্রী ও কয়েকটি গাড়ি নিয়ে পদ্মাপাড়ে অপেক্ষা। ৪ নম্বর ফেরিঘাটে রাণীক্ষেত নামের ডাম্পফেরিতে প্রায় পাঁচ শতাধিক যাত্রী উঠেছে। সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই সংক্রমণ ঝুঁকি নিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন তারা। এদের মধ্যে অনেক শিশু কিশোর রয়েছে। পদ্মাপাড়ি দিয়ে ঈদ আনন্দ উদযাপন করতে কেউ যাচ্ছেন প্রিয় মানুষদের কাছে। আবার দীর্ঘদিন আটকা পড়ে থাকা অনেকেই এই ছুটিকে কাজে লাগিয়ে যাচ্ছেন বাড়িতে। ফেরিটি কানায় কানায় পূর্ণ হওয়ার পর ঘাট থেকে ছেড়ে যায়। আর একটি যাত্রীও ফেরিতে অবস্থান করার জায়গা নেই।

অনেকেই ফেরির যন্ত্রাংশ ধরে যেতেও চেষ্টা করলো। ফেরি ছাড়ার পর যাত্রীদের মাঝে যেন স্বস্তি নামলো। কিন্তু তাদের মধ্যে করোনা ভাইরাস মোকাবিলার জন্য নেই সুরক্ষা ব্যবস্থা। ফেরিতে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে কাউকে দেখা যায়নি।  রোববার (২৪ মে) ভোর থেকে সকাল সাড়ে ১১টা পর্যন্ত শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী নৌরুটে দক্ষিণবঙ্গগামী মানুষের চাপ লক্ষ্য করা গেছে। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চাপ কমতে শুরু করায় বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে ঘাটের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।  সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ভোর থেকে সকাল ৭টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত কয়েকটি স্পিডবোট যাত্রী বহন করে। চার নম্বর ফেরি ঘাটটিতে ফেরির সঙ্গে স্পিডবোট ১০-১২ জন যাত্রী বহন করে পদ্মাপাড়ি দেয়।

তবে সকাল ৮টার পর থেকে স্পিডবোট চলাচল করতে দেখা যায়নি। ভোরে শিমুলিয়া ঘাটে ৩ শতাধিক প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাসের দীর্ঘ সারি ছিল। কয়েকটি ফেরি এসব গাড়ি লোড করার পর ঘাটের পার্কিং জোন (গাড়ির জায়গা) অনেকটা ফাঁকা হয়ে যায়। যাত্রীরা দল বেধে ফেরিঘাটগুলোতে আসে। ফেরিতে প্রবেশের জন্য জনপ্রতি ২৫ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। ঘাট কর্তৃপক্ষ জানায়, করোনার হটস্পট এলাকাগুলো থেকে হাজার হাজার মানুষ পদ্মাপাড়ি দিচ্ছে।

যার কারণে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা অনেক বেড়ে যাচ্ছে।  ঢাকার মিরপুরের দর্জি আরিফ হোসেন বাংলানিউজকে জানান, ৬০০ টাকা দিয়ে মোটরসাইকেলে করে শিমুলিয়া ঘাটে এসেছি। মালিক কিছু ভাড়ার টাকা দিয়ে বাড়িতে ঈদের জন্য পাঠিয়ে দিয়েছে। এবারের ঈদে ইনকাম নেই আমাদের মতো দর্জিদের। পরিবারের জন্যও কিছু কিনে নিয়ে যেতে পারছি না। শতভাগ চেষ্টা করেছি সংক্রমণের ঝুঁকি এড়িয়ে বাড়িতে যাওয়ার।  আসাবাবপত্রের দোকানের কর্মচারী জানান, ঢাকায় কোনো কাজ নেই এখন। জমানো টাকা শেষ হয়ে গেছে, চলার জন্য টাকাও নেই। আমাদের কেউ ত্রাণও দেয়নি।

এমন পরিস্থিতিতে ঢাকা ছেড়ে নিজ বাড়িতে যাচ্ছি। ফিরবো কবে এখনো সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়নি।  একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরিজীবী হাসান আলী জানান, এখনো বেতন ও বোনাস কিছুই পাইনি। এতদিন ধরে আশায় ছিলাম। আগামীকাল ঈদ, তাই বাড়ি চলে যাচ্ছি। সংক্রমণ ঝুঁকি অনেক বেশি ফেরিগুলোতে। কিন্তু অনেকটা নিরুপায় হয়েই যেতে হচ্ছে।  বিআইডব্লিউটিসি’র শিমুলিয়া ঘাটের সহকারী ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মোহাম্মদ ফয়সাল জানান, সকাল থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী নৌরুটে চলাচল করেছে ১৫টি ফেরি। এরমধ্যে চারটি রো-রো ফেরি ছিল। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যানবাহনের চাপ কমতে শুরু করায় দুপুর ২টার কিছু সময় আগে থেকে পাঁচটি ফেরি চলাচল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

তবে ঘাটে পারের অপেক্ষায় গাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে বাড়ানো হবে ফেরির সংখ্যা। সকাল থেকে সব ফেরিগুলো নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ঘাট চলাচল করায় যাত্রী ও যানবাহনের বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়নি। সকাল ১১টার পর থেকেই ঘাট এলাকায় যানবাহনের চাপ কমে গেছে।  তিনি জানান, ফেরিগুলোতে যাত্রীদের উপস্থিতি বেশি হওয়ায় তাদের সামাল দেওয়া যায়না। ফেরি আনলোড করার পর তাৎক্ষণিকভাবে যাত্রীরা ফেরিতে উঠে পড়ে। একাধিক চেষ্টা করেও তাদের সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মানানো যায়না। 

বেলা ১২টার দিকে শিমুলিয়া ঘাট পরিদর্শন শেষে মুন্সীগঞ্জের এসপি আব্দুল মোমেন জানান, ঘাটের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ছয় শতাধিক পুলিশ সদস্য নিয়োজিত আছে। ঘাটে যাত্রী আসা থেকে শুরু করে গন্তব্যে পৌঁছানো পর্যন্ত তদারকি করা হচ্ছে। এর ফলে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ কমে গেছে। এছাড়া যাত্রীদের সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। বাংলাদেশ সময়: ১৭২৬ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০২০ এনটি

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও