কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

'আম্পান' মোকাবিলায় প্রস্তুত ভাসানচর

বাংলা ট্রিবিউন প্রকাশিত: ১৯ মে ২০২০, ১৮:১৬

মিয়ানমারে গণহত্যার মুখে পালিয়ে এসে কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের জন্য ভাসানচরকে বসবাসের উপযোগী করে গড়ে তুলেছে বাংলাদেশ সরকার। ইতোমধ্যে বাংলাদেশের জলসীমায় ভাসতে থাকা ৩০৬ জন রোহিঙ্গাকে পুনর্বাসিত করা হয়েছে সেখানে। এছাড়াও দ্বীপটিতে অবস্থার করছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী, বেশ কিছু দিনমজুর, দোকানদার, বাতাইন্যা ও পুলিশ সদস্যসহ আরও প্রায় তিনশ' মানুষ। বসতি স্থাপন হতে না হতেই দ্বীপটিকে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের মুখে পড়তে হচ্ছে। তবে ঘূর্ণিঝড় আম্পানে দ্বীপাঞ্চলে প্রবল জলোচ্ছ্বাস হতে পারে বলে পূর্বাভাসের পর সেখানে অবস্থানরত প্রায় ছয়শ' মানুষের নিরাপত্তার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস মোকাবিলায় চার তলা বিশিষ্ট ১২৩টি সাইক্লোন শেল্টার তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে ১২০টি রোহিঙ্গাদের জন্য, একটি কর্মকর্তাদের জন্য এবং দুটি ব্যারাকের জন্য। সাইক্লোন শেল্টারগুলোতে প্রায় এক লাখ লোক আশ্রয় নিতে পারবে।উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরও জানান, সর্বমোট প্যাকেজ রয়েছে ৩০টি। প্রতিটি প্যাকেজে রয়েছে ৪৮টি ঘর। সেই হিসেবে তৈরি হয়েছে ১৪৪০টি টিনশেড পাকা ঘর। প্রতিটি পাকা ঘরে ২০টি কক্ষ রয়েছে। কক্ষের দুই পাশে আছে দুটি বাথরুম আর দুটি কিচেন। প্রতি চার সদস্য বিশিষ্ট পরিবারকে দেওয়া হবে একটি কক্ষ। প্রতি কক্ষে থাকছে দোতলা বিশিষ্ট দুটি বেড। মাটি থেকে ৪ ফুট উঁচুতে হচ্ছে এই বাসস্থান।

জেলা প্রশাসক তন্ময় দাস জানান, মেঘনা নদীর বুকে জেগে ওঠা এই চরকে ঝড় ও জলোচ্ছ্বাস থেকে নিরাপদ করার জন্য ১৪ কিলোমিটার করে দুটি বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। প্রথমে রয়েছে একটি ছোট বেড়িবাঁধ এবং তারপরে রয়েছে একটি বড় বেড়িবাঁধ। তবে এখন পর্যন্ত স্বাভাবিক জোয়ারে ছোট বেড়িবাঁধের ওপর দিয়ে পানি ঢুকতে পারেনি। ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের জন্য সব ধরনের নাগরিক সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে। তাদের খাবার-দাবারের ব্যবস্থা সরকারিভাবে করা হচ্ছে।জেলা প্রশাসক আরও জানান, সুপার সাইক্লোন আম্পান মোকাবিলায় উপকূলীয় উপজেলা হাতিয়া, সুবর্ণচর, কোম্পানীগঞ্জ ও কবিরহাটের ৩২৩টি আশ্রয়কেন্দ্র, ছয় হাজার সাতশ স্বেচ্ছাসেবক, তিন শতাধিক রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির কর্মী ও শুকনো খাবার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এসব উপজেলায় সতর্কীকরণ মাইকিং করা হচ্ছে। এছাড়াও জরুরি অবস্থা মোকাবিলায় উপকূলীয় এলাকার স্কুল কাম সাইক্লোন শেল্টারগুলোর চাবি প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডকে উপকূলীয় অঞ্চলের বেড়িবাঁধগুলো দেখাশুনা করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। উপকূলীয় এলাকার করোনা আক্রান্ত রোগী এবং লকডাউন বাড়ির লোকজনকে নিকটবর্তী আইসোলেশন কেন্দ্রে প্রেরণ এবং আশ্রয়ন কেন্দ্রে তাদের জন্য বিশেষ কক্ষে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আবহাওয়ার অবস্থা অবনতি হলে এলাকার লোকজন ও গবাদিপশুকে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসা হবে।ভাসানচরে বসতির প্রসঙ্গে জেলা পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন জানান, বঙ্গোপসাগরে বোটে ভাসমান অবস্থায় সম্প্রতি রোহিঙ্গাদের দুটি দলকে উদ্ধার করে নৌবাহিনী। এরপর তাদের হাতিয়ার ভাসানচরে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। ৩ মে প্রথম ধাপে ১৯ জন নারী, পাঁছ জন শিশু, চার জন পুরুষ ও একজন দালালসহ ২৯ রোহিঙ্গা এবং ৮ মে দ্বিতীয় ধাপে ৯২ জন পুরুষ, ১৫৭ জন নারী ও ২৮ জন শিশুসহ ২৭৭ সদস্যের আরও একটি দলকে আশ্রয় দেওয়া হয়। ভাসানচরে সব মিলিয়ে রোহিঙ্গাদের ৯৭ জন পুরুষ, ১৭৬ জন নারী ও ৩৩ জন শিশু। তাদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছে ৫১ সদস্যের পুলিশ সদস্য। বসতি স্থাপনের সঙ্গে সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ভাসানচরে একটি পূর্ণাঙ্গ থানা স্থাপনের প্রস্তাবনাটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের বিবেচনাধীন রয়েছে বলেও জানান তিনি।

ভাসানচর প্রস্তাবিত থানার পরিদর্শক মো. আবু হুসাইন জানান, এখন পর্যন্ত সুপার সাইক্লোন আম্পানের কোনও আলামত লক্ষ্য করা যায়নি। তবে সাগর কিছুটা উত্তাল রয়েছে।

এদিকে, সুপার সাইক্লোন আম্পান মোকাবিলায় দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার ৮০ হাজার লোকের ধারণক্ষমতা সম্পন্ন ১৮৫ টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। করোনা বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়ে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করার জন্য স্বেচ্ছাসেকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এবং প্রত্যেকটি সাইক্লোন শেল্টার স্যানিটাইজেশনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও সরকারি ভবন প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও