কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

করোনায় ঘরে থাকা বিধি এবং অন্নকষ্ট

জাগো নিউজ ২৪ শহীদ ইমন প্রকাশিত: ১৯ মে ২০২০, ১০:০২

সেইদিন আর বেশি দূরে নয়, হয়তো আবার দেখা যেতে পারে যেমন নব্বইয়ের দশকে হরহামেশাই অনেক অভাবী মানুষকে দেখা যেত বাসার দরজায় কড়া নেড়ে বলত, ‘খালাম্মা দুইডা ভাত দিবেন’? শুধু সামান্য ভাতের জন্য মানুষের আর্তনাদ না দেখলে উপলব্ধি করা কঠিন। যেখানে খাবারের জন্য হাহাকার যেখানে ঘরে থাকা, চিকিৎসা অথবা রোগ থেকে দূরে থাকার নিয়মাবলি কতটা কাজ দেবে?

বর্তমানের এই দুঃসময়ে সমাজের একটা অংশ যেভাবে গরিব ও অভাবীদের দুঃখ-কষ্টের সাথী হয়েছে, এটা হয়তো এই মহামারি না আসলে আমরা বুঝতেই পারতাম না। তাছাড়া আমাদের সম্মুখসারির যোদ্ধা ডাক্তার, নার্স, মেডিকেল স্টাফ, পুলিশ, সশস্ত্রবাহিনী, প্রশাসন, সাংবাদিক ছাড়াও ভিক্ষুক নাজিম উদ্দিন, কাউন্সিলর খোরশেদ, বিদ্যানন্দের সাথে জড়িত স্বেচ্ছাসেবীরাসহ সমমনা অনেক মানুষের অবদানের ফলে হয়তো এখনও নব্বইয়ের দশকের সেই দৃশ্য দেখা যাচ্ছে না।

তবে হয়তো সেই দৃশ্য দেখতে দেরি হবে না, যদি এই মহামারির তাণ্ডব এখনই না কমে অথবা ভ্যাকসিন সব মানুষের হাতের নাগালে না আসে। অন্যদিকে আরেক শ্রেণির মানুষদের দেখা গেছে, যারা মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত অনাহারী মানুষের ত্রাণ নিয়ে দুর্নীতি তথা রিলিফদ্রব্য চুরিতে ব্যস্ত। সাধারণত খাদ্যদ্রব্য অভাবে চুরি হলেও এখানে স্বভাবের চোরদের দেখা যায়।

এরা পেটের অভাবে চাল চুরি করেনি বরং নিজেদের বিলাসিতা এবং সম্পদশালী হওয়ার জন্য বুভুক্ষ মানুষের মুখের খাবার কেড়ে নিতেও এদের বাধেনি। আবার আমাদের আরও একটা শ্রেণি আছে যারা অন্যের কষ্ট উপলব্ধি করে না অথবা করার প্রয়োজনও মনে করে না। অভাবী মানুষের কষ্টে তারা বিচলিত হয় না, অর্থাৎ অন্য মানুষ কষ্টে থাকবে, তাতে এই শ্রেণির মানুষদের কিছুই যায় আসে না।


কোভিড-১৯ মহামারিতে এই শ্রেণি আছে বহাল তবিয়তে। এদের খাবার, চিকিৎসা এবং মৌলিক সুবিধাদি সবই ঠিক আছে। সে কারণে, এরা ক্ষুধার কষ্ট যেমনি বোঝে না, তেমনি এদের কোনো দায়িত্ব আছে সেটাও মনে করে না। শুধু নিজেদের সুরক্ষা নিয়ে এরা অতি ব্যস্ত। অনেকে ভাবে রোজা রেখে ক্ষুধার কষ্ট তারাও ভালো বুঝে। সত্যিকার অর্থে রোজা রেখে ক্ষুধার কষ্ট পুরোপুরি বোঝা যায় না।

শুধু ক্ষুধা সম্পর্কে একটা ভালো ধারণা পাওয়া যায়। সারাদিন রোজা রাখার পর ইফতার এবং সারারাত খেয়ে সেহরি শেষে তের-চৌদ্দ ঘণ্টা পর ডাইনিং টেবিলে হরেক রকম পুষ্টিকর ইফতার সাজানো থাকলে, গরিব মানুষের ক্ষুধার কষ্ট সত্যিই উপলব্ধি করা যায় না। যারা অভাবী মানুষ বিশেষত মহামারির কারণে আয় বিমুখ হয়ে পড়েছে, তাদের ক্ষুধার কষ্ট হচ্ছে ‘এই বেলায় খাওয়া হলো, সামনের বেলায় কী খাবে জানে না’ এ রকম। একজন পূর্ণ বয়স্ক মানুষের এবং ছোট বাচ্চাদের মিনিমাম দৈনিক ক্যালরিও এরা পূরণ করতে পারছে না।

যার ফলে এদের কাছে সাধারণ ছুটি, সামাজিক দূরত্ব এবং লকডাউন কতটুকুই বা গুরুত্বপূর্ণ! সাধারণত চার সদস্যবিশিষ্ট পরিবারের উপার্জনকারীর আয় যদি ৩০ থেকে ৬০ হাজারের মধ্যে হলে সেটা নিম্ন-মধ্যবিত্ত শ্রেণি এবং অনুরূপভাবে একই পরিবারের উপার্জনকারীর আয় যদি ৬০ হাজার থেকে এক লাখের মধ্যে হলে সেটাকে মধ্যবিত্ত শ্রেণিতে ধরা হয়।

এখন মধ্যবিত্ত শ্রেণির কিছু ব্যাংক-ব্যালেন্স থাকলেও নিম্ন-মধ্যবিত্ত শ্রেণির না থাকার ফলে তারা নিম্ন আয়ের শ্রেণিতে নেমে এসেছে। অর্থাৎ এখন প্রান্তিক জনগোষ্ঠীতে নতুন করে একটা বড় অংশ যোগ হলো। যেহেতু সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীতে এই শ্রেণির তথ্য মজুত নেই, সেহেতু মহামারি এই শ্রেণিকে খুব মন্দকর একটা অবস্থার মধ্যে নিয়ে এসেছে।

আবার এরা ত্রাণ নিতেও দ্বিধায় ভোগে, লজ্জা পায় এবং ঠিক মনে করে না। বাধ্য হয়ে এই শ্রেণি ক্ষুধা মেটানোর জন্য কাজে ফিরবে, এটাই স্বাভাবিক। এটা সত্য আমাদের সেই সক্ষমতা এখনও হয়নি যে, আমরা মাসের পর মাস গরিব নিম্ন-মধ্যবিত্ত মানুষকে ত্রাণ দিয়ে বাঁচিয়ে রাখতে পারব। সরকার যথেষ্ট চেষ্টা অব্যাহত রাখছে, তারপরও সকল অসহায় মানুষকে ত্রাণ বিতরণে পুরোপুরি সফলতা অর্জন সম্ভব হয়ে ওঠেনি।

একটি দৈনিকের অ্যানালাইসিসে দেখা যায়, ঢাকা শহরের ছয় লাখ অভাবী মানুষের মধ্যে ৬০ শতাংশ মানুষ এখন পর্যন্ত সরকারি ত্রাণ পেয়েছে। গত এপ্রিল মাসে সংগৃহীত ব্র্যাক এবং পিপিআরসির করা একটি একটা সমীক্ষায় দেখা গেছে, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের ফলে সাধারণ ছুটি ও সামাজিক দূরত্বের কারণে ৭২ শতাংশ মানুষ কাজশূন্য হয়ে পড়েছেন। ৮ শতাংশ মানুষের কাজ থাকলেও বেতন পাননি। কৃষিকাজে সম্পৃক্তদের (৬৫%) তুলনায় অকৃষিখাতের দিনমজুর বেশি (৭৭%) ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।


তাছাড়া অতিদরিদ্র, মাঝারি-দরিদ্র এবং সম্ভাব্য দরিদ্রদের ৭০% আয় কমে গেছে। শহর এলাকায় ৭১% এবং গ্রাম্য এলাকায় ৫৫% অর্থনৈতিক কার্যক্রম কমে গেছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও