করোনাভাইরাস: মোবাইল হতে পারে ‘ট্রোজান হর্স’
ট্রোজান হর্স বা ট্রয়ের ঘোড়া’র গল্পটা জানা আছে আশা করি। ট্রয়দের সঙ্গে যু্দ্ধে সুবিধা করতে না পারে গ্রিকরা একটা বিশাল কাঠের ঘোড়া তৈরি করে ট্রয় নগরীর ফটকের সামনে রেখে চলে যায়। ট্রয়রা সেটাকে উপহার মনে করে শহরে নিয়ে আসে। অথচ সেই বিশাল কাঠের ঘোড়ার ভেতর ছিল গ্রিক যোদ্ধারা। তারা রাতের আঁধারে ঘোড়া থেকে বের হয়ে খুলে দেয় নগরীর দরজা। বাইরে ঘাপটি মেরে থাকা গ্রিক সৈন্যরা ভেতরে ঢুকে অতর্কিত আক্রমণ চালায়।সেরকমই মোবাইল ফোনটিও হতে পারে করোনাভাইরাসের জন্য ‘ট্রয়ের ঘোড়া’।
যেখানে সে ঘাপটি মেরে বসে আছে। সুযোগ বুঝে ঢুকে যাবে শরীরের ভেতর। আর এই কারণেই বিশেষজ্ঞরা মোবাইল ফোন সবসময় জীবাণুমুক্ত করার পরামর্শ দিচ্ছেন। অস্ট্রেলিয়ার বিশেষজ্ঞরা পর্যবেক্ষণমূলক গবেষণায় দেখতে পেয়েছেন মোবাইলের স্ক্রিন এবং অন্যান্য সকল ‘টাচস্ক্রিন’যুক্ত যন্ত্রে করোনাভাইরাস থাকতে পারে। অস্ট্রেলিয়ার ‘বন্ড ইউনিভার্সিটি’র সহযোগী অধ্যাপক লতি তাজৌরি এই গবেষণার জন্য ২৪টি দেশের মোট ৫৬টি গবেষণা নিয়ে কাজ করেছেন এবং দেখেছেন মোবাইল অসংখ্য ধরনের ভাইরাস ও ব্যাক্টেরিয়ার আড্ডাখানা।তাজৌরি বলেন, “আমাদের পরামর্শ হল প্রতিদিন আপনার মোবাইল জীবাণুমুক্ত করুন। এজন্য ব্যবহার করতে পারেন ৭০ শতাংশ ‘আইসোপ্রোপাইল’ দ্রবণ, অতিবেগুনি রশ্মি কিংবা সাবান পানিতে ভেজানো কাপড় দিয়ে মুছে নিতে পারেন।”তাজৌরি আরও বলেন, “গবেষণার মাধ্যমে মোবাইলে ‘গোল্ডেন স্ট্যাফ’, ‘ই-কোলি’ ইত্যাদি জীবাণুর মাত্রা সবচাইতে বেশি দেখা গেছে। জীবাণুর জন্য মোবাইলগুলো যেন পাঁচ তারকা হোটেল, যেখানে প্রতি মুহূর্তের জন্য আছে স্পা আর বুফে খাবার। মোবাইলে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের প্রযুক্তিনির্ভর ব্যবস্থা থাকে।
যন্ত্রটি দিনের বেশিরভাগ সময় আমাদের হাতে কিংবা পকেটে থাকে। ফলে সেখানেও জীবাণু পায় অনুকূল পরিবেশ।” “মোবাইলে কথা বলার সময় আমরা তাতে ‘ড্রপলেট’ রেখে দেই যা অসংখ্য ভাইরাস ও ব্যাক্টেরিয়াতে ঠাঁসা থাকে। এমনকি খাওয়া সময় মোবাইল আশপাশেই থাকে, ফলে নিজের খাবার দিয়ে জীবাণুকে পুষ্টিও যোগাই আমরাই। আর আমার বিশ্বাস কেউই তাদের মোবাইল পর্যাপ্ত পরিমাণে জীবাণুমুক্ত করে না।” বলেন তাজৌরি।ভ্রমণের সময় সঙ্গে যে মোবাইল থাকে তাতে কী জীবাণু আছে তা কোনো সীমান্তেই পরীক্ষা করা হয় না।