কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

আরচারিতে দশে দশ

মানবজমিন প্রকাশিত: ১০ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

আগের দিন ছয় স্বর্ণ জিতে শুটিংয়ের সাফল্য স্পর্শ করার খুব কাছে চলে গিয়েছিল আরচারি। কাল পোখারা ন্যাশনাল আরচারি গ্রাউন্ডে আরো চার সোনা জিতে হিমালয়ে উঠে গেল ডিসিপ্লিনটি। গেমসে এক ডিসিপ্লিনে বাংলাদেশের সেরা সাফল্য ছিল সাত সোনা। ১৯৯৩ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত আসরে শুটিংয়ে এসেছিল এই সাফল্য। শুটিংয়ের সাফল্য ছাড়িয়ে যাওয়ার পাশাপাশি আরচারির নৈপুণ্যেই ২০১০ সালের ১৮ সোনা জয়ের অর্জনকে স্পর্শ করে বাংলাদেশ। এসএ গেমসের আগে সোনা জয়ের আশা জানিয়ে দেশ ছেড়েছিলেন রোমান সানা ও তার সতীর্থরা। সে প্রতিজ্ঞা তারা রক্ষা করেছেন। অভাবনীয় সাফল্য এনে দিয়েছেন দেশকে। আরচারির ১০ ইভেন্টের প্রত্যেকটিতেই স্বর্ণ জিতেছে বাংলাদেশ। এমন আশা জাগানো অনেকেই অবশ্য এসএ গেমসে প্রত্যাশিত সাফল্য এনে দিতে পারেননি। শুটিংয়ে কমনওয়েলথ পর্যায়ের সাফল্যের পরও এবারের এসএ গেমসে সাফল্য আসেনি। সাঁতার বা অ্যাথলেটিকসেও তথৈবচ।। এর মাঝে একমাত্র রোমান সানা, সোহেল রানা ও ইতি খাতুনরাই দেশকে সোনার হাসিতে ভরিয়ে দিয়েছেন। তিনটি করে সোনা জিতেছেন এই তিনজন। আগের রাতে স্বর্ণ জয়ী নারী ক্রিকেট দল নিয়ে উৎসবে মেতেছিল বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশন (বিওএ) এর কর্মকর্তারা। উৎসব থেকে বাদ পরেনি সাংবাদিকসহ অন্য ফেডারেশনের খেলোয়াড় কর্মকর্তারাও। বিওএ’র দেয়া ওই পার্টিকে কেন্দ্র করেই এক টুকরো বাংলাদেশে পরিণত হয়েছিল পোখারার সেন্ট্রাল পয়েন্টের হোটেল বারাহি। সেই হোটেল থেকে পায়ে হেঁটে পাঁচ মিনিট দুরত্বে ছিল আরচারি দল। চারটি সোনো জয়ের লড়াই বাকি থাকায় পার্টিতে আসেননি আরচাররা। রাতের উৎসব থেকে বঞ্চিত হওয়া আরচারদের নিয়ে উৎসব হয়েছে গতকাল সকালে। তিন সোনা জয়ী ইতি খাতুনকে মাথায় তুলে নিয়ে নাচতে দেখা গেছে আরচারি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রাজীবউদ্দিন আহমেদ চপলকে। কাল পোখারায় ন্যাশনাল আরচারি গ্রাউন্ডে সোনালি হাসির শুরু কম্পাউন্ড এককের ফাইনালের মধ্যদিয়ে। শ্রীলঙ্কার প্রতিযোগীকে ১৪২-১৩৪ স্কোরে হারিয়ে বাংলাদেশকে দিনের প্রথম সোনার পদক এনে দেন সুমা বিশ্বাস। এরপর পুরুষ এককের ফাইনালে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর ১৩৭-১৩৬ স্কোরে ভুটানের প্রতিযোগীকে হারান সোহেল রানা। কম্পাউন্ডের সাফল্যের রেশ রিকার্ভেও ধরে রাখে বাংলাদেশ। মেয়েদের রিকার্ভ এককে ভুটানের প্রতিযোগী দেমা সোনমের বিপক্ষে ৭-৩ সেট পয়েন্টে ইতি জিতলে দিনের তৃতীয় সোনার পদক পায় বাংলাদেশ। শেষ হাসিটা হাসেন রোমান সানা। ভুটানের কিংলে শেরিংকে ৭-১ সেট পয়েন্টে হারিয়ে আরচারিতে দশম সোনা এনে দেন দেশসেরা এই আরচার। আগের দিন রিকার্ভ পুরুষ দলগত ইভেন্টে রোমান, তামিমুল ইসলাম ও মোহাম্মদ হাকিম আহমেদ রুবেল সোনার পদক জয় করেন। তারা ৫-৩ সেট পয়েন্টে শ্রীলঙ্কাকে হারান। রিকার্ভ মহিলা দলগত ইভেন্টের ফাইনালে ইতি, মেহনাজ আক্তার মনিরা ও বিউটি রায় ৬-০ সেট পয়েন্টে জিতেন। রিকার্ভ মিশ্র দলগততেও সেরা হয় বাংলাদেশ। কম্পাউন্ড পুরুষ দলগত ফাইনালে ভুটানকে ২২৫-২১৪ স্কোরে হারায় অসীম কুমার দাস, সোহেল রানা ও মোহাম্মদ আশিকুজ্জামানে গড়া বাংলাদেশ দল। কম্পাউন্ড মহিলা দলগত বিভাগে শ্রীলঙ্কাকে ২২৬-২১৫ ব্যবধানে হারিয়ে সোনা জিতে সুস্মিতা বণিক, শ্যামলী রায় ও সোমা বিশ্বাসকে নিয়ে গড়া দল। কম্পাউন্ড মিশ্র দ্বৈতে জুয়েল রানা-রোকসানা আক্তার জুটি স্বাগতিক নেপালের জুটিকে ১৪৮-১৪০ ব্যবধানে হারিয়ে ষষ্ঠবারের মতো সোনার হাসি এনে দেন দেশকে। আরচারিতে রোমান সানার এখন পর্যন্ত যা অর্জন, তাতে এসএ গেমস হয়তো তেমন বড় কিছু নয়। ২০১৭ সালে বিশকেক আন্তর্জাতিক আরচারিতে সোনা জিতেছেন। গত জুনে নেদারল্যান্ডসে হুন্দাই বিশ্ব আর্চারি চ্যাম্পিয়নশিপে ছেলেদের ব্যক্তিগত রিকার্ভে ব্রোঞ্জ জয় করেছেন। যে কোনো খেলায় বিশ্ব প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের প্রথম পদক। সে অর্জনে ২০২০ সালের টোকিও অলিম্পিকে সরাসরি খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছেন এই আরচার। সেপ্টেম্বরেও করেছেন আরেকটি বড় অর্জন। ফিলিপাইনে এশিয়া কাপ বিশ্ব র‌্যাঙ্কিং টুর্নামেন্টে রিকার্ভে পেয়েছেন সোনার পদক। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ক্রিকেট-ফুটবল বা অন্য যেকোনো খেলাকে টপকে বাংলাদেশের সেরা সাফল্য এটি। তাঁর কাছ থেকে এসএ গেমসে সোনার পদক তো দেশ আশা করতেই পারে! তবে প্রত্যাশাকে ছাড়িয়ে গেছেন ইতি খাতুন সোহেল রানারা। দলীয় ও মিক্সড ডাবলস ইভেন্টে আগের দিন স্বর্ণ জয় করেও মিডিয়ার সামনে কথা বলেননি ইতি। দুই স্বর্ণ নিয়েও কি তাহলে আক্ষেপ ছিল তার -এমন প্রশ্নটা আসতেই পারে। না কোন আক্ষেপ নয়, ইতি আসলে মেয়েদের রিকার্ভ এককের ফাইনালের আগে মিডিয়ার সামনে কথা বলে কোন চাপ নিতে চাননি। নিজেকে রাখতে চেয়েছিলেন খেলার মধ্যেই। অবশেষে কাল পোখরায় আরো একবার জাতীয় পতাকাকে উপরে টেনে তুললেন চুয়াডাঙ্গার এ তীরন্দাজ। ফাইনালে ভুটানের প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে দারুন এক জয় তুলে নিয়ে টানা তৃতীয় স্বর্ণের দেখা পান ইতি খাতুন। বলেন, আমি চেয়েছিলাম এককে স্বর্ণ জিতেই সবার সাথে কথা বলবো। দলগত স্বর্ণের চেয়ে আমার কাছে এককের সফলতাটাই বড়’। ১৪ বছর বয়সে এসএ গেমসে তিন স্বর্ণ জেতা ইতির স্বপ্ন এখন অলিম্পিকে খেলা।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও