ধর্ষণের মামলা করে বিপাকে কলেজছাত্রী
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতার ভাগিনার বিরুদ্ধে আদালতে ধর্ষণের মামলা করে বিপাকে পড়েছেন রামগঞ্জ উপজেলার চাঙ্গিরগাঁও গ্রামের কলেজছাত্রী ও তার পরিবার। ধর্ষক ফিরোজ আলম প্রভাবশালী হওয়ায় ধর্ষিতার পরিবারকে বারবার হুমকি দেয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করা হয়েছে। ফলে মামলাটি নোয়াখালীর পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)কে তদন্তের জন্য দায়িত্ব দিয়েছে লক্ষ্মীপুর ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। ওই কলেজছাত্রী জানান, তিনি এক সন্তানের জননী। স্বামী প্রবাসে থাকেন। লক্ষ্মীপুর দত্তপাড়া কলেজে পড়াকালীন অবস্থায় রামগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আ.ক.ম রুহুল আমিনের ভাগিনা ফিরোজ আলমের সাথে পরিচয় হয়। পরিচয়ের সূত্র ধরে ফিরোজ আলম জানান তার মামা সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানেরর মাধ্যমে সরকারি চাকরি পাওয়া সম্ভব। তবে সরকারি চাকরি পেতে হলে অনেক টাকার প্রয়োজন। পরে তিনি তিন ধাপে ফিরোজ আলমের হাতে ৩ লাখ টাকা তুলে দেন সরকারি চাকরি পাওয়ার আশায়। ২০১৮ সালের মে মাসে ওই কলেজছাত্রীর ইমো আইডি হ্যাক হলে তিনি ফিরোজ আলমের শরণাপন্ন হন। পরে রামগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়। ফিরোজ কৌশলে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে তাকে চাকরির কথা বলে লক্ষ্মীপুরের মোবারক কলোনির এক বন্ধুর বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা চালিয়ে আপত্তিকর ভিডিও চিত্র মোবাইলে ধারণ করে ফিরোজ আলম। পরে সে ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে বিভিন্ন সময় কলেজছাত্রীর কাছ থেকে ফিরোজ আলম আরো প্রায় ৪ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেয়। উপায়ন্তর না দেখে পুরো ঘটনাটি ওই কলেজছাত্রী তার পরিবারকে জানান। গত ১৯শে নভেম্বর সকালে ওই কলেজছাত্রী তার বাবার বাড়িতে থাকা অবস্থায় ফিরোজ আলম ফোন দিয়ে জানায়, যদি তাকে আরো ৫০ হাজার টাকা দেয়া হয় তাহলে পূর্বে ধারণকৃত ভিডিও সে ওই কলেজছাত্রীকে ফেরত দিবে। এসময় ওই কলেজছাত্রী তার মা বোনের বাড়িতে বেড়াতে গেছে জানিয়ে পরদিন আসতে বললে ফিরোজ জানায়, আমি তোমাদের বাড়ির কাছাকাছি চলে আসছি, টাকা দিয়েই চলে যাবো। কিছুক্ষণ পর ফিরোজ ঘরে ঢুকে জোরপূর্বক ওই কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ করে। এসময় সুমীর আত্মচিৎকারে স্থানীয় লোকজন ছুটে এসে ফিরোজকে দিগম্বর অবস্থায় আটক করে। ফিরোজ আলমকে আটকের পর তার মামা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ.ক.ম রুহুল আমীনের অনুসারী কয়েকজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী এলাকাবাসীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ফিরোজকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। ২৪শে নভেম্বর নিকটাত্মীয়দের সহযোগিতায় ওই কলেজছাত্রী বাদী হয়ে লক্ষ্মীপুর আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করে। আদালত কাগজপত্র পর্যালোচনা করে পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) নোয়াখালীকে তদন্ত করার নির্দেশ দিলে ফিরোজ আলম আত্মগোপনে চলে যায়। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ফিরোজ আলম জানান, সুমীকে ধর্ষণের মতো কোন ঘটনা ঘটেনি। সুমীর বিরুদ্ধে একাধিক ছেলের সাথে সম্পর্কসহ বিভিন্ন অভিযোগ থাকায় আমি তার থেকে দূরে সরে এসেছি। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আ.ক.ম রুহুল আমিন জানান, আমি বিষয়টি জানি না। যদি কেউ এ ধরনের কাজ করে থাকে সেটা একান্তই তার ব্যাপার।
- ট্যাগ:
- বাংলাদেশ
- বিপাকে
- ধর্ষণ মামলা
- লক্ষ্মীপুর