কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

ইলেকশন না সিলেকশন

মানবজমিন প্রকাশিত: ১০ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন আগামীকাল বুধবার। সম্মেলনে নেতা নির্বাচনে ইলেকশন হবে না সিলেকশন হবে এ নিয়ে চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় রয়েছেন দলীয় নেতা-কর্মীরা। সম্মেলনকে সামনে রেখে জেলার আওয়ামী রাজনীতিতে উত্তাপ ছড়াচ্ছে। সোমবার কাউন্সিলরদের তালিকা প্রকাশ করেছে জেলা আওয়ামী লীগ। এতে মাঠ পর্যায়ের কাউন্সিলরদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হবে না বলে অভিযোগ তুলেছেন কোনো কোনো প্রার্থী। অন্যদিকে সম্মেলনের খরচ হিসেবে প্রার্থীদের মোটা অংকের টাকা অনুদান দিতে বাধ্য করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন কোন কোন প্রার্থী। কেন্দ্রীয় পর্যায়ে এসব অভিযোগ দেয়া হলে কেন্দ্রীয় নির্দেশে তা শিথিল করা হয়েছে বলেও আলোচনা বইছে। তবে শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় নেতাদের সিদ্ধান্ত মতেই কমিটি হবে বলে জানিয়েছেন দলের সিনিয়র নেতারা। এ পর্যন্ত জেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে সভাপতি পদে ৬ জন, সাধারণ সম্পাদক পদে ৬ জন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে ১৫ জন ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে ৬ জন প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।দলীয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৩ সাল থেকে হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামীগের নির্বাচন সরাসরি কাউন্সিলারদের ভোটে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। তবে সিলেটের নির্বাচনে দীর্ঘদিনের ক্ষমতাবান নেতাদের বাদ দিয়ে নতুনদের দিয়ে কমিটি গঠনের পর হবিগঞ্জে চলছে নানামুখী আলোচনা। হবিগঞ্জে আদৌ ইলেকশন হবে নাকি সিলেটের মতো সিলেকশন হবে এ নিয়ে নেতা-কর্মীদের মাঝে শুরু হয় উদ্বেগ। তবে শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত যা ই হোক নির্বাচন হবে ধারণা করে প্রার্থীরা প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে সময়মত কাউন্সিলরদের তালিকা প্রকাশ না করায় প্রচার প্রচারণায় অনেকটা ব্যাঘাত সৃষ্টি হবে বলে অভিযোগ করেছেন একাধিক প্রার্থী। গত ৯ই ডিসেম্বর জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাচনের জন্য ৩৫৯ জন কাউন্সিলরের নাম প্রকাশ করে। এর আগে ৮ই ডিসেম্বর রাতে জেলা আওয়ামী লীগের সভায় এ তালিকার অনুমোদন দেয়া হয়। এবারের কাউন্সিলে সভাপতি পদে নির্বাচন করছেন বর্তমান সভাপতি এমপি অ্যাডভোকেট মো. আবু জাহির, সাবেক সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ডা. মুশফিক হুসেন চৌধুরী, সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবুল হাসেম মোল্লা মাসুম ও অ্যাডভোকেট ফজলে আলী। সাধারণ সম্পাদক পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বর্তমান সাধারণ সম্পাদক এমপি অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ খান, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আলমগীর চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট চৌধুরী আবুবকর ছিদ্দিকী, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মোতাচ্ছিরুল ইসলাম, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সৈয়দ কামরুল হাসান ও পৌর মেয়র মিজানুর রহমান। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বর্তমান যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট লুৎফুর রহমান তালুকদার, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির হোসেন চৌধুরী অসীম, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মর্তুজ আলী, আজমিরীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান মর্তুজা হাসান, অ্যাডভোকেট সালেহ উদ্দিন আহমেদ, দপ্তর সম্পাদক আলমগীর খান সাদেক, প্রচার সম্পাদক অনুপ কুমার দেব মনা, প্রয়াত সমাজকল্যাণ মন্ত্রী এনামুল হক মোস্তফা শহীদের পুত্র নিজামুল হক মোস্তফা রানা, অ্যাডভোকেট সুমঙ্গল দাশ সুমন, অ্যাডভোকেট আতাউর রহমান, অ্যাডভোকেট আবুল আজাদ ও মাহবুবুল আলম মালু। সাংগঠনিক সম্পাদক পদে নির্বাচন করছেন বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক মশিউর রহমান শামীম, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নুর উদ্দিন বুলবুল, জেলা পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট সুলতান মাহমুদ, বানিয়াচং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল আহাদ মিয়া, অ্যাডভোকেট আব্দুল মুনতাকিম চৌধুরী খোকন ও হবিগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফয়জুল বসীর চৌধুরী সুজন। এ ব্যাপারে সভাপতি প্রার্থী বর্তমান সভাপতি এমপি অ্যাডভোকেট মো. জাহির বলেন, বিগত কাউন্সিলে সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর জেলা আওয়ামী লীগকে তৃণমূল পর্যায়ে শক্তিশালী একটি সংগঠন হিসেবে দাঁড় করিয়েছি। এখন আমরা শেখ হাসিনার নির্দেশনায় সম্মেলন করতে যাচ্ছি। দলের নেতাকর্মীদের একান্ত ইচ্ছায় আমি সভাপতি হিসেবে প্রার্থী হয়েছি। সকলের সহযোগিতা নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে সম্মেলন সম্পন্ন করতে চাই। এ ব্যাপারে সভাপতি প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ডা. মুশফিক হুসেন চৌধুরী জানান, বিগত ৫ বছরে জেলা আওয়ামী লীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিটি কোন উপজেলা পর্যায়ে সম্মেলন না হওয়ায় নেতা-কর্মীদের মাঝে হতাশা বিরাজ করছিল। গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে এবারের কাউন্সিলেও সভাপতি পদে অংশ নিচ্ছি। তবে নির্বাচনের মাত্র দুই দিন আগে কাউন্সিলারদের তালিকা প্রকাশ করায় আমরা প্রার্থীদের পক্ষে ৩৫৯ জন্য ভোটারদের কাছে যাওয়া সম্ভব হবে না। এজন্য আমরা হতাশ। এতে আমাদের প্রচার প্রচারণায় ব্যাঘাত সৃষ্টি হবে।সভাপতি প্রার্থী সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক এমপি আমাতুল কিবরিয়া চৌধুরী কেয়া জানান, আমি সোমবার বিকেল পর্যন্ত কাউন্সিলরদের তালিকা পাইনি। একজন প্রার্থী হিসেবে আমি জানি না ভোটার কারা, আমরা কার কাছে যাবো। দুদিনে তাদের সাথে যোগাযোগ করা কোনক্রমেই সম্ভব নয়। এতে নেতাকর্মীরাও  সম্মেলনের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। আমরা অন্য প্রার্থীরা যাতে ঠিকমতো ভোটারদের কাছে যেতে না পারি এজন্য জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি ইচ্ছে করে দুদিন আগে কাউন্সিলরদের তালিকা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, আমি যতটুকু জানি নির্বাচনের ব্যাপারে কেন্দ্র খোঁজখবর রাখছে। আর নেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আমার বিশ্বাস আছে। আমি মনে করি সম্মেলনের ব্যাপারে দলীয় প্রধানের তদারকি থাকবে এবং যোগ্য ব্যক্তিকেই তিনি পদ প্রদান করবেন।সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী বর্তমান সাধারণ সম্পাদক এমপি অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ খান জানান, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে। দলের ভিতরে যদি গণতন্ত্র না থাকে এটা ঠিক হবে না। তবে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বলে আমরা মেনে নিব। সিলেটের নির্বাচনের ব্যাপারে তিনি বলেন, সিলেটে কোন সময়ই ইলেকশনে নেতা নির্বাচন হয়নি। সেখানে সবসময় সিলেকশনে কমিটি হয়েছে। আর হবিগঞ্জে সবসময় ইলেকশনে নেতা নির্বাচন হয়ে আসছে। আশা করি আগামীতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও