সুস্বাদু কুমড়াবড়িতে ভাগ্য বদলাচ্ছে দরিদ্ররা
সিরাজগঞ্জ জেলা সদরের পশ্চিমে তাড়াশ উপজেলার অবস্থান। চলনবিল অধ্যুষিত এ উপজেলার নওগাঁ গ্রামের ৩০-৪০টি দরিদ্র পরিবার কুমড়াবড়ি তৈরি ও তা বাজারে বিক্রি করে নিজেদের ভাগ্য বদলাচ্ছে। শীতের শুরুতে প্রতি বছরের মতো এবারও শুরু হয়েছে কুমড়াবড়ি তৈরির কাজ। নারীদের পাশাপাশি পুরুষরাও এ কাজে জড়িত। এখানকার তৈরি বড়ি এলাকার চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্রি হয়ে থাকে। বড়ি তৈরির কারিগর সুশান্ত বৈরাগী জানান, সারা বছরই এই বড়ি তৈরি করা সম্ভব। কিন্তু এটা শীতকালে বেশি তৈরি করা হয়। কারণ এটা শীতের সময় রান্না করে খেতে বেশি মজা লাগে। তাই চাহিদাও থাকে বেশি। আব্দুল আজিজ বলেন, হাট বাজারে কুমড়াবড়ি বর্তমানে খুচরা ৭০-৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আমরা আশা করছি কয়েকদিন পর দাম আরো বাড়বে। অত্যন্ত সুস্বাদু হওয়ায় এ অঞ্চলের কুমড়াবড়ি এলাকার চাহিদা মিটিয়ে দেশে বিভিন্ন প্রান্তে পাঠানো হয়। বিশেষ করে ঢাকায় এর চাহিদা রয়েছে বেশি। কুমড়াবড়ির কারিগর নওগাঁ গ্রামের ভাংশিং পাড়ার আবদুল হামিদ জানান, প্রায় ১৫ বছর যাবত এ গ্রামে কুমড়াবড়ি তৈরি হচ্ছে। এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত পরিবারগুলো আগে তেমন সচ্ছল ছিল না। এখন তারা অনেকটাই সচ্ছল। এ বড়ি তৈরিতেও আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে। আগে শীলপাটায় চাল ও ডাল ফিনিশ করা হলেও বর্তমানে এ কাজে ব্যবহার হচ্ছে অটোমেশিন। প্রদীপ কর্মকার ও হাসনা খাতুন জানান, বড়ি তৈরির জন্য আগে তারা সনাতন পদ্ধতি ব্যবহার করতেন। সে সময় আগের দিন রাতে ডাল ও চাল পানিতে ভিজিয়ে রেখে পরের দিন তা শীলপাটায় ফিনিশ করে বেটে তাতে রং, মসলা ও তেল মিশিয়ে বড়ি তৈরি করতেন। এক্ষেত্রে ডাল ও চাল ফিনিশ করতে তাদের অনেক কষ্ট হতো এবং সময় লাগতো। কিন্তু বর্তমানে এতো কষ্ট করতে হয় না। প্রযুক্তির ছোঁয়ায় অটোমেশিনের মাধ্যমে তারা ডাল ও চাল ভাঙানো বা ফিনিশের কাজ করেন। শুধু বড়ি বানাতে হয় হাতে। তাই পরিশ্রম হয় কম। কুমড়াবড়ি তৈরির ব্যবসায় নওগাঁ গ্রামের মানুষদের স্বাবলম্বী হওয়া দেখে আশেপাশের গ্রামেও দিনদিন এ ব্যবসা ছড়িয়ে পড়ছে।