কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

যশোর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত

মানবজমিন প্রকাশিত: ২৮ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় থাকলে মানুষ ন্যায়বিচার পায়। তারই প্রমাণ হলি আর্টিজান হামলা মামলার আজকের রায়। গতকাল দুপুরে যশোর ঈদগাহ ময়দানে যশোর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের এ কথা বলেন। তিনি বলেন, দেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতি দূর হয়েছে। বিচার ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা বেড়েছে। এখন বিচারের জন্য মানুষকে বছরের পর বছর আদালতের দরজায় ধরনা ধরতে হয় না। বিচার তার নিজস্ব গতিতে চলছে। অন্যায় করে এখন কেউ রেহাই পাবে না। হলি আর্টিজান মামলায় ৭ জঙ্গির ফাঁসির রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, যারা এ দেশে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে বিচারহীনতার সংস্কৃতি চালু করেছিল তারাই এখন বিচারের জন্য আদালতে মায়াকান্না করছে। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় থাকলে দেশে আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার বিদ্যমান থাকে। হলি আর্টিজান মামলার রায়ে আজ জনজীবনে স্বস্তি ফিরে  এসেছে।  এই রায় জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের লালন পালনকারী ও পৃষ্ঠপোষকতাকারীদের জন্য অশনি সংকেত- উল্লেখ করে তিনি বলেন, সন্ত্রাস করে এখন কেউ রেহাই পাবে না। সবাইকে বিচারের মুখোমুখি করা হবে। শেখ হাসিনার সরকারের কাছে জঙ্গিদের কোনো নিস্তার নেই। তিনি তৃণমূল পর্যায়ে দলকে আরো শক্তিশালী করার জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের অন্তর্কলহ পরিহার করে ঐক্য বিনষ্ট না করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, দল ভারি করার জন্য খারাপ, সুবিধাবাদী, চাঁদাবাজ দরকার নেই। কোনো দুর্নীতিবাজ, টেন্ডারবাজ, মাদক ব্যবসায়ীর স্থান আওয়ামী লীগে হবে না। নেত্রী শুদ্ধি অভিযান ঘর থেকে শুরু করেছেন, ঘরকে শাস্তি দিয়ে পরকে শেখাবেন-এটাই শেখ হাসিনার পলিসি। যশোর কেন্দ্রীয় ঈদগাহে সম্মেলন উপলক্ষে আয়োজিত বিশাল সমাবেশে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের শুদ্ধি অভিযানের প্রসঙ্গ তুলে আরো বলেন, বুয়েটে মেধাবী ছাত্র আবরার হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত প্রায় সকলেই ছাত্রলীগের নেতাকর্মী; তারাও রেহাই পায়নি।নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, দল ভারির জন্য আপনারা খারাপ লোক, সুবিধাবাদী লোকজনকে ভেড়াবেন না। শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগে কোনো চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ, সন্ত্রাসী, দুর্নীতিবাজ, মাদক কারবারির কোনো ঠাঁই নেই। ঢাকায় শুদ্ধি অভিযানের যে অ্যাকশন শুরু হয়েছে; খুব শিগগিরই তা জেলা-উপজেলা শহরেও শুরু হয়ে যাবে। দলের ভেতরে কোন্দল করা যাবে না মন্তব্য করে দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ঘরের ভেতরে ঘর, মশারির ভেতরে মশারি টাঙাবেন না। নেতৃত্বে যাতে মৌসুমী পাখিরা না আসতে পারে- সেদিকে নজর রাখার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, দুর্দিনে এইসব মৌসুমী নেতারা সব হিমালয় কৈলাশ পর্বতে পালিয়ে যাবে। তখন পাঁচ হাজার ওয়াটের বাল্ব জ্বালিয়েও তাদের খুঁজে পাওয়া যাবে না। তিনি বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা এখন বিশ্বের ১০ প্রভাবশালী রাষ্ট্রনায়কের একজন, দু’জন সেরা প্রধানমন্ত্রীর একজন, গত ৪৪ বছরে সবচেয়ে সৎ রাজনীতিক, দক্ষ শাসক, সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রধানমন্ত্রী। তার কর্মী হয়ে আমরা কোনো অপকর্ম করতে পারি না। কেননা, আমাদের একটা আচরণের আবরণে ১০টি উন্নয়নের কাজ ঢেকে যাবে। তিনি নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমরা উন্নয়ন করবো, আপনারা মানুষকে খুশি রাখবেন। যতই উন্নয়ন হোক, নেতাদের আচরণ যদি খারাপ হয় তাহলে উন্নয়নের মূল্য নেই।জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ এমপি, আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি, শেখ তন্ময় এমপি, এস এম কামাল, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য এমপি, কাজী নাবিল আহমেদ এমপি, শেখ আফিল উদ্দিন, মেজর জেনারেল (অব.) নাসির উদ্দিন এমপি, বাবু রণজিৎ কুমার রায় এমপি, ইসমাত আরা সাদেক এমপি প্রমুখ। এ ছাড়া জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ নেতৃবৃন্দ সম্মেলনে তাদের সাংগঠনিক বক্তব্য প্রদান করেন। সম্মেলন উদ্বোধন করেন দলের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য এডভোকেট পীযূষ কান্তি ভট্টাচার্য। সম্মেলনের অন্যতম বিশেষ অতিথি আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল আলম হানিফ এমপি বলেন, সন্ত্রাস করে বেগম জিয়াকে মুক্ত করা যাবে না। বেগম জিয়াকে আইন আদালতের মাধ্যমেই মুক্ত হতে হবে। আজ যারা বেগম জিয়াকে মুক্ত করার জন্য রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামের হুংকার দিচ্ছেন তাদেরকে উদ্দেশ্য করে বলতে চাই, এসব করে কোনো লাভ হবে না। কোনো অপপন্থায় ওই দুর্নীতিবাজ বেগম জিয়াকে কারামুক্ত করার চক্রান্ত করা হলে তা কঠোর হস্তে দমন করা হবে। তিনি যেকোনো ধরনের অপশক্তির মোকাবিলায় দলীয় কর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।সম্মেলনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য ১২ জন প্রার্থী তাদের নাম প্রস্তাব করলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সভা মুলতবি করে নেতাদের একমত হওয়ার জন্য ৩০ মিনিট সময় দেন। এই সময়ে কাউন্সিলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা একমত পোষণে ব্যর্থ হয়ে দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর দায়িত্ব প্রদান করেন। নেতৃবৃন্দ দলীয় প্রধানের সিদ্ধান্ত মেনে নেয়ার অঙ্গীকার করলে সম্মেলনের প্রধান অতিথি এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভানেত্রীর সঙ্গে কথা বলে কমিটির নেতা চূড়ান্ত করেন। মুলতবি সভা শেষে প্রধান অতিথি যশোর জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন ও সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীন চাকলাদারকে পুনরায় সাধারণ সম্পাদক করে আগামী তিন বছরের জন্য ৭১ সদস্যবিশিষ্ট জেলা কমিটি ঘোষণা করেন। কমিটিতে ৫ জন সহ-সভাপতি ও ৫ জন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, কোষাধ্যক্ষ এবং ৫ জন নির্বাহী সদস্যের নম ঘোষণা করেন ওবায়দুল কাদের। একই সঙ্গে তিনি দ্রুততম সময়ের মধ্যে কমিটির বর্তমান নেতৃবৃন্দ পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে তা কেন্দ্রে পাঠাবেন বলে উপস্থিত সকলকে অবহিত করে সম্মেলনের প্রধান অতিথি সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বিকাল পৌনে ৩টায় সম্মেলনের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

এই সম্পর্কিত

আরও