কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

মেয়ে হত্যার বিচার চেয়ে বাবা-মায়ের আকুতি

মানবজমিন প্রকাশিত: ১৬ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

আমার মেয়েকে জোরপূর্বক অপহরণ করে নিয়ে গিয়ে বিয়ে। অতঃপর মেয়ের স্বামী ও পরিবারের সদস্যরা মিলে তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালায়। আমার মেয়ের লাশও তারা দেখতে দেয়নি আমাদের স্বজনদের। পুলিশের সহায়তায় দ্রুত দাহকাজ সম্পন্ন করে আমাদেরকে দাহকাজের কাছেও ভিড়তে দেয়নি। থানায় মামলা দিতে গিয়ে উল্টো হয়রানির শিকার হয়েছি। পুলিশের হাতে পায়ে ধরেও কাজ হয়নি। পরে বাধ্য হয়ে আদালতে মামলা করেছি। এখন ওই খুনি আসামিরা প্রকাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে। মামলা তুলে নিতে আমাদের হত্যার হুমকি দিচ্ছে। আমরা প্রাণনাশের আতঙ্কে আছি। আমরা আমাদের মেয়ে হত্যার বিচার চাই। গতকাল মৌলভীবাজার প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে উপরোক্ত কথাগুলো কান্নাজড়িত কণ্ঠে সাংবাদিকদের জানান নির্মমতার শিকার মাধবী রানী বিশ্বাস (১৮) এর পিতা বড়লেখা উপজেলার আখালিমোরা গ্রামের বাসিন্দা অকিল বিশ্বাস। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অকিল বিশ্বাস বলেন, আমি অসহায় দিনমজুর। আমার ২ ছেলে ও ২ মেয়ের মধ্যে মাধবী রানী বিশ্বাস ছিল ৩য়। তাকে হারিয়ে আজ আমরা চরম অসহায়। আমি ন্যায় বিচারের আশায় আপনাদের স্মরণাপন্ন হয়েছি। তিনি বলেন, আমার মেয়ে মাধবী রানী বিশ্বাস বড়লেখা নারী শিক্ষা একাডেমি ডিগ্রি কলেজের ইন্টারমিডিয়েট (বাণিজ্য) দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিল। কলেজে আসা যাওয়ার সময় প্রায়ই উত্ত্যক্ত করত জুড়ী উপজেলার সায়পুর গ্রামের করুণা বিশ্বাসের ছেলে অরকুমার বিশ্বাস (২৫)। চলতি বছরের ৭ই মার্চ কলেজের সরস্বতী পূজা শেষে আমার মেয়ে মাধবী রানী বিশ্বাস বাড়ি ফেরার জন্য কলেজে গেটের সামনে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিল। এ সময় অরকুমার বিশ্বাস দলবল নিয়ে তাকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়। আমরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করেও আমার মেয়ের সন্ধান পাইনি। এক সময় জানতে পারি জুড়ী উপজেলার সায়পুর গ্রামের করুণা বিশ্বাসের ছেলে অরকুমার বিশ্বাস আমার মেয়ে মাধবীকে নিয়ে বাহাদুরপুর এলাকায় তার মামার বাড়িতে অবস্থান করছে। আমার মেয়ে মাধবীকে তুলে নেয়ার ২৬ দিন পর অরকুমার বিশ্বাস এফিডেভিট করে তাকে বিয়ে করে। কিন্তু তার বাবা-মা এ বিয়ে মেনে না নেয়ায় নিজ বাড়িতে তুলতে পারছিল না। পরে দুই পরিবারের এলাকার মুরব্বিদের মধ্যস্থতায় সামাজিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। সামাজিক বিয়ের পর আমার মেয়ের ওপর শারীরিক নির্যাতন শুরু করে অরকুমার ও তার পরিবার। বিয়ের ৫ মাস ৮ দিনের মধ্যে একটি বারের জন্যও আমার মেয়ে মাধবীকে আমাদের বাড়িতে যেতে দেয়নি ওরা। গত ১৮ই আগস্ট রাতে স্বামী অরকুমারসহ তার পরিবারের সদস্যরা মাধবীকে মারধর করে। একপর্যায়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার পর তারা আত্মহত্যার নাটক সাজায়। আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে এলাকায় প্রচারণা করলেও আমাদের বাড়িতে কোনো খবর দেয়া হয়নি। প্রতিবেশী মারফত খবর পেয়ে পরদিন সকালে আমি ও আমার স্ত্রী জুড়ী থানায় গেলে পুলিশ আমাদেরকে মেয়ের লাশ দেখতে না দিয়েই ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার মর্গে পাঠিয়ে দেয়। আমার মেয়ের গলায় দায়ের কোপ ও গায়ে আঘাতের চিহ্ন থাকার বিষয়টি জেনে অভিযোগ দিতে চাইলে পুলিশ উল্টো হুমকি-ধমকি দেয়। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ নিয়ে আসার পরও আমার মেয়ের স্বামীর বাড়ির লোকজন আমাদেরকে লাশ দেখতে এবং কাস্ট অনুষ্ঠানে অংশ নিতে দেয়নি। আমি গত ২৫শে আগস্ট মৌলভীবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৫নং আমলী আদালতে মেয়ের স্বামী অরকুমার বিশ্বাসকে প্রধান আসামি করে ১০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করি। আদালত ২২শে সেপ্টেম্বরের মধ্যে ওই মামলার প্রতিবেদন কোর্টে প্রেরণের নির্দেশ দিলে জুড়ী থানার ওসি মো. জাহাঙ্গির হোসেন সরদার ওই সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেছেন বলে আমাকে জানান। কিন্তু পুলিশ এখনো কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার না করায় এবং মামলা তুলে নিতে আসামিদের লাগাতার হুমকিতে আমাদের জীবন এখন অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে। আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আসামিরা আমাদের জানায়, তারা টাকা দিয়ে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাল্টে দিবে বিধায় তাদের আমরা কিছুই করতে পারবো না। মামলার প্রমাণ লোপাটের জন্য তারা আমার মেয়েকে মাটিচাপা না দিয়ে মরদেহ দাহ করে। ওই খুনিরা যেন কৌশলে পার পেয়ে না যায় এবং ন্যায় বিচার নিশ্চিত হয় সে জন্য সংশ্লিষ্ট সবার কাছে আকুত জানাচ্ছি। সংবাদ সম্মেলনে অকিল বিশ্বাসের স্ত্রী ছবিতা বিশ্বাসও উপস্থিত ছিলেন।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও