কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

ধোপাজান নদী চর রেখে গভীর নদীতে খনন

মানবজমিন প্রকাশিত: ১৪ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার সীমান্ত নদী ধোপাজান। এ নদীর ভরাট অংশ রেখে গভীর অংশে খনন কাজ শুরু করায় প্রশ্ন দেখা দিয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ নদী খনন কাজের শুরুতেই এই অনিয়মের কারণে এলাকাবাসী কাজ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। সরকারের বরাদ্দ বড় অঙ্কের টাকার নামমাত্র কাজ করে নয়ছয়ের আশঙ্কা করছেন তারা। ভারতের মেঘালয় পাহাড় থেকে নেমে এসেছে ধোপাজান নদী। বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ি ঢলের সঙ্গে নেমে আসে বালু-পাথর। বালু-পাথরের কারণে নদীর অনেক স্থানে চর পড়ে। বালু-পাথর শ্রমিকরা নদী থেকে বালু-পাথর আহরণ করায় অনেক স্থানে গভীরতার সৃষ্টি হয়েছে। সে স্থান থেকে বালু পাথর আহরণ না করায় বড় আকারের চর পড়ে। ফলে নৌ-যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। এ অবস্থায় ৫ দিন পূর্বে সদর উপজেলার কুচগাঁও এলাকা থেকে ধোপাজান চলতি নদীতে একটি ড্র্রেজার দিয়ে খনন কাজ শুরু করে অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের নিযুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স নবারুণ ট্রেডার্স। নৌ-যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে এই খননের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। জানা গেছে, অভ্যন্তরীণ নৌ-পথের ৫৩টি রুটের ক্যাপিটাল ড্রেজিং প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের ২৪টি নদী খনন প্রকল্পের আওয়তায় ১৯ কোটি ৫৭ টাকা ব্যয়ে ৯ কিলোমিটার নদী খননের কার্যাদেশ গত ৩রা জানুয়ারি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ। ৫ দিন আগে কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স নবারুণ ট্রেডার্স। চুক্তির শর্ত মোতাবেক শুষ্ক মৌসুমের শেষ পর্যায়ে এসে নদীর পানি যখন তলানিতে ঠেকে তখন ১০ ফুট গভীর ও ১২০ ফুট প্রস্থে নদী খনের কথা রয়েছে। কিন্তু কাজ শুরু হয়েছে শুষ্ক মৌসুমের আগেই। সরজমিন খনন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ৯ কিলোমিটার নদী খননের উদ্যোগ নেয়া হলেও নদীগর্ভ থেকে বালু-পাথর উত্তোলন করার কারণে নদীর অনেক স্থানেই গভীর পানি রয়েছে। আর এই গভীর এলাকায় চলছে খনন কাজ। যে স্থানে চর আছে সেখানে খনন কাজ হচ্ছে না। উরারকান্দা গ্রামের কবির হোসেন বলেন, চলতি নদী খননের উদ্যোগ নেয়া আমরা খুশি হয়েছিলাম, কিন্তু বাস্তবে দেখছি গভীর নদীতে কাজ শুরু করেছেন ঠিকাদার। এতে খনন কাজে সততা নিয়ে এলাকাবাসীর মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। আমরা চাই সরকারি বরাদ্দের টাকা যাতে যথাযথভাবে জনগণের কল্যাণে ব্যয় হয়। নৌ-যান শ্রমিকরা জানান, ধোপাজান চলতি নদীর উজানে গত দুই দশকে বালু-পাথর উত্তোলনের কারণে অনেক স্থানেই গভীরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু অনেক স্থানে আবার উপর থেকে নেমে আসা বালুতে বড় বড় চর জেগেছে। খননের সুফল পেতে হলে গভীর স্থানগুলোতে লোক দেখানো খনন কাজ না করে চর জাগা এলাকাগুলোতে খনন কাজ শুরু করা জরুরি। এতে সরকারি অর্থ ব্যয় জনসাধারণের জন্য উপকারে আসবে। সদর উপজেলার ইব্রাহিমপুর গ্রামের নৌকাচালক আকিকুর রহমান বলেন, খনন শুরুর পূর্বে চলতি নদীতে যাতায়াতকারী নৌযান শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে কোথায় কোথায় শুষ্ক মৌসুমে পানি কমে যান চলাচল ব্যাহত হয় সেটা চিহ্নিত করে সেখানে খনন করা উচিত। খনন কাজ শুরু হওয়া কুচগাঁও এলাকায় বুধবার সরেজমিন গিয়ে অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের কোনো প্রকৌশলীকে পাওয়া যায়নি। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন খনন কাজের দেখভাল করছেন। ঠিকাদারের নিযুক্ত সহকারী মনির হোসেন বলেন, কর্তৃপক্ষের দেখানো স্থানে আমরা খনন শুরু করেছি। আমাদের যেভাবে নির্দেশনা দেয়া হবে সেভাবেই খনন কাজ করা হবে। অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) নির্বাহী প্রকৌশলী আ স ম মারেকুল আরেফিন বলেন, নদীর মোহনা থেকে উজানের দিকে ৯ কিলোমিটার নদী খননের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। নদীর স্বাভাবিক গতিপথ যেদিকে আছে সেদিকেই খনন করা হবে, তবে চরগুলো খননের কোনো পরিকল্পনা আমাদের নেই। তিনি বলেন, ১২০ ফুট প্রস্থ করতে গিয়ে যদি কোনো চর পড়ে সেটা খনন করা হবে। দুই বছরের মধ্যে কাজ শেষের সময়সীমা থাকলেও চলতি শুষ্ক মৌসুমের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা জানান এই প্রকৌশলী।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও