কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

ফেসবুকে বাংলা কনটেন্ট ফিল্টারিং চায় ঢাকা

মানবজমিন প্রকাশিত: ১২ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

ফেসবুকে উত্তেজনাকর এবং ক্ষতিকর বাংলা কন্টেন্ট বা পোস্টের নিয়ন্ত্রণ দেখতে চায় ঢাকা। বাংলাদেশ মনে করে কেবল একটি দেশের জন্য নয় বরং বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থাকা বাংলা ভাষাভাষীদের কল্যাণ তথা বৈশ্বিক শান্তির জন্য কন্টেন্ট ফিল্টারিং ও নিয়ন্ত্রণ জরুরি। রাজধানীতে গতকাল থেকে শুরু হওয়া ‘ঢাকা গ্লোবাল ডায়ালগ-২০১৯’ এর উদ্বোধনী দিনের এক সেশনে এ অভিমত ব্যক্ত করা হয়। ‘ই-রেগুলেইট: টুওয়ার্ডস এ ডিজিটাল কমিউনিটি ফর দ্য বে অব বেঙ্গল’ শীর্ষক সেশনে প্যানালিস্ট হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, ভারত এবং দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত ফেসবুকের পলিসি ডিরেক্টর আঙ্কি দাস, ইন্টারন্যাশনাল এসোসিয়েশন অব প্রাইভেসি প্রোফেশনালস দামিয়ান মাপে, ইন্টারন্যাশনাল ডিজিটাল হেলথ অ্যান্ড এআই রিসার্চ কলাভরেটিভ এর প্রজেক্ট লিড আমানদিপ গিল। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন- সহ-আয়োজক প্রতিষ্ঠান ভারতের অবজারভার ফাউন্ডেশনের চেয়ার সমির শরণ। আলোচনায় আইসিটি প্রতিমন্ত্রী পলক ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি ভোলায় ঘটে যাওয়া সংঘাতের প্রসঙ্গ টেনে ভবিষ্যতে এমন অনাকাঙ্খিত ঘটনা রোধে ফেসবুক কিভাবে সহায়তা করতে পারে তা নিয়ে জানতে চান। পরবর্তীতে উন্মুক্ত সেশনে পুলিশের আইসিটি ডিভিশনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ব্যারিস্টার হারুন-উর রশিদও ভোলার ঘটনার উদাহরণ টেনে বাংলাদেশের ফেসবুকে পোস্টের কারণে যেসব ঘটনা ঘটেছে উদ্বেগের সঙ্গে তা তুলে ধরেন। একই সঙ্গে ফেসবুক পাবলিক পলিসি ডিরিক্টরের কাছে তিনি জানতে চান এসব ক্ষতিকর বাংলা পোস্ট ঠেকাতে তা আদতে কী ভাবছেন? ফেসবুক তার ব্যবসায়িক স্বার্থের চেয়ে সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার বিষয়ে কতটা সচেতন সেটিও প্রশ্ন আসে। জবাবে ফেসবুকের প্রতিনিধি এমন ঘটনার জন্য দু:খপ্রকাশ করে বলেন, অবশ্য তারা এ নিয়ে সচেতন। বাংলা কন্টেট ফিল্ডারিংয়েও তারা যথেষ্ট মনোযোগ দিচ্ছেন। এ নিয়ে বাংলাদেশ সরকার তথা রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ফেসবুকের তরফে সব সময় ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার অঙ্গীকারও করেন তিনি। বাংলাদেশে সরকারের তরফে প্রতিমন্ত্রী বলেন, মুক্তভাবে মত প্রকাশ এবং মানুষের বাক স্বাধীনতায় বিশ্বাসী তার সরকার। কিন্তু ফেসবুক বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে কোন কন্টেন্ট বা পোস্ট দিয়ে কেউ যেন ব্যক্তি, সমাজ বা রাষ্ট্রের ক্ষতির কারণ না হয় সে ব্যপারে সরকার সতর্ক রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে ফেসবুকসহ সংশ্লিষ্টদের এ বিষয়ে সহায়তা পাওয়ার কথাও স্বীকার করেন তিনি। উল্লেখ্য, এমন এক সময় ঢাকায় ফেসবুকের পাবলিক পলিসি ডিরেক্টরের উপস্থিতিতে ওই ডায়ালগ হলো, যখন বাংলাদেশ সরকার ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিয়ন্ত্রণে কড়াকড়ির নানা বার্তা দিচ্ছে। ফেসবুক ব্যবহারকারীদের তরফেও দেশী বিদেশী সংবাদ মাধ্যমে বিভিন্নমুখি ‘যন্ত্রণা’র অভিযোগ করা হচ্ছে। ঢাকা ডায়ালগে এর কিছুটা ওঠে এসেছে। তবে বাংলাদেশ সরকারের তরফে এটি স্পষ্ট করা হয়েছে, নিরাপদে ফেসবুক বা ইন্টারনেট ব্যবহার নিশ্চিত করাই সরকারে লক্ষ্য। তৃণমূল পর্যায়ে আরও বেশী সংখ্যাক মানুষ যাতে ইতিবাচকভাবে এটি ব্যবহার করতে পারে সেটাই চায় সরকার। কিন্তু এর ক্ষতিকর দিকগুলোও নিয়ে সরকারকে সজাগ থাকতে হচ্ছে সঙ্গত কারণেই। কারণ নানা ঘটনা ঘটছে। অপরাধী- উগ্রপন্থিরা যাতে এটি ব্যবহার করে সমাজে অশান্তি সৃষ্টি না করতে পারে সে জন্য আইন শৃঙ্খলাবাহিনী সক্রিয় রয়েছে। মানুষের বাক স্বাধীনতাহরণ বা নিয়ন্ত্রণ সরকারের উদ্দেশ্য নয়।ঢাকা শহরেই পৃথিবীর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ফেসবুক ইউজার: বাংলাদেশে ফেসবুক ব্যবহারকারী সংখ্যা নিয়ে ভিন্নমত আছে। তবে আন্তর্জাতিক সব জরিপ অনেক আগেই বলেছে, পৃথিবীর যে সব শহরে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশী তার মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থান নাকী ঢাকার। যুক্তরাজ্যভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘উই আর সোশাল’ এবং কানাডাভিত্তিক ডিজিটাল সেবা প্রতিষ্ঠান হুটস্যুইট-এর যৌথ জরীপ মতে, ঢাকায় সক্রিয় ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২২ মিলিয়ন বা ২ কোটি ২০ লাখ। অভ্যন্তরীণ নানা জরিপ সূত্রে সরকারের তরফে যেটা বলা হয়, এ সংখ্যা দিনে দিনে বাড়ছে। বাংলাদেশে এখন ৩ কোটির বেশী মানুষ নিয়মিত বা অনিয়মিতভাবে ফেসবুক ব্যবহার করছেন। শুধু ফেসবুক নয়, প্রায় ৮ কোটির বেশী ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর মধ্যে অন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের সংখ্যাও বাড়ছে। তবে তার মধ্যে ক্ষতিকর কন্টেন্ট বা পোস্ট ছড়ানো অ্যাকউন্টও রয়েছে। সরকার যখন গুরুতর অভিযোগ পায় তৎক্ষনাৎ তা বন্ধে উদ্যোগী হয়।ক্ষতিকর পোস্ট ও কনটেন্ট ঠেকাতে সরকার যেভাবে কাজ করে: বাংলাদেশ সরকারের তরফে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নানাভাবে মনিটরিং করা হয়। এতদিন এভাবেই চলছিলো। কিন্তু নানা ঘটনায় সাম্প্রতিক সময়ে ফেসবুক ও ইউটিউবের মতো সামাজিক মাধ্যম মনিটরিংয়ে আরও সক্রিয় হয় সরকার। বলা যায় এতে ঘনিষ্ঠনজরদাড়ি বাড়ানো হয়েছে। সরকারের প্রতিনিধিদের দেয়া তথ্য মতে, রাষ্ট্র ইচ্ছা করলে যে কোনো ওয়েবসাইট নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা রাখে। এটা প্রতিষ্ঠিত এবং প্রমাণিত। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে ফেসবুক বা ইউটিউবের ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেয়া খানিকটা প্রক্রিয়াগত। এতে ফেসবুকের সহযোগিতা প্রয়োজন হয় আগাগোড়ায়। এতে ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হলেও সময়ক্ষেপন হয়। বাংলাদেশ সরকার চায় সত্যিকার অর্থে ক্ষতিকর কন্টেন্ট ছড়ানোর কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ এলেও তৎক্ষনাৎ ফেসবুক ব্যবস্থা নিক। এটি ধরতে বাংলাদেশের তরফে এ সংক্রান্ত প্রযুক্তিগত সক্ষমতা অর্জনেও জোর তাগিদ রয়েছে বলে জানাচ্ছেন সরকারের প্রতিনিধিরা। তারা আশা করছেন- প্রযুক্তির উৎকর্ষতার কারণে কেউ ইচ্ছা করলেই এখন আর ফেসবুক-ইউটিউবে যা খুশি প্রচার করতে পারবে না। বিশেষ করে ক্ষতিকর পোস্ট। সরকার তা আগেই আটকে দিতে পারবে। ফেসবুকের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তাদের সম্পূর্ণভাবে বাংলাদেশের বাস্তবতা বুঝা এবং দেশীয় আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে ব্যবসা পরিচালনায় অনুরোধ আগেই সরকার জানিয়েছে বলে দাবি করে দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও