কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

প্রতিহিংসার আগুনে পুড়ছে কেজাউড়া গ্রাম

মানবজমিন প্রকাশিত: ১৭ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

প্রতিহিংসার আগুনে পুড়ছে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের কেজাউড়া গ্রাম। গ্রামের দুটি পক্ষের মধ্যে খুন, লুটপাট, বিষ দিয়ে মাছ নিধনসহ কমপক্ষে ১০টি মামলা রয়েছে। গত চার বছরে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে দুই পক্ষে। এই  প্রতিহিংসার শেষ বলি সাড়ে ৫ বছরের শিশু তুহিন মিয়া। এতো নৃশংসভাবে এই শিশুটিকে হত্যা করা হয়েছে। কেজাউড়া গ্রামের বাসিন্দাদের কেউ-ই এই দ্বন্দ্ব নিয়ে কথা বলতে চান না। তবে তুহিন হত্যার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান সকলেই।কেজাউড়া গ্রামের একাধিক ব্যক্তি বলেন, গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য আনোয়ার মিয়া ও মাওলনা মছব্বির মিয়ার পক্ষের লোকজনের মধ্যে ২০১৪ সালে প্রথমে জমি-জমা নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। পরে একটি খুনের ঘটনা থেকে এই দ্বন্দ্ব ভয়াবহ আকার ধারণ করে। মছব্বির মিয়া তুহিনের বাবা আব্দুল বাছিরের চাচা। ২০১৫ সালের ৮ই অক্টোবর রাত সাড়ে ৮টায় মছব্বির মিয়ার গোষ্ঠীর অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধু নিলুফার বেগম গ্রামের পুরাতন হাটি থেকে নতুন হাটি যাওয়ার সময় একটি খালের সাঁকো’তে ওঠার মুখে খুন হন। এই খুনের মামলার আসামি করা হয় অপর পক্ষের প্রাক্তন মেম্বার আনোয়ার মিয়াসহ ১২ জনকে। গত বৃহস্পতিবার আনোয়ার মিয়াসহ ওই পক্ষের লোকজন ৬ মাস কারাভোগ করে বাড়ি ফিরেছেন। গ্রামের বয়োজ্যেষ্ঠ এক ব্যক্তি জানান, নিলুফার বেগম খুন হবার পর আনোয়ার মিয়া ও মছব্বির মিয়ার লোকজনের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও মামলা হয়েছে। দ্বন্দ্ব-সংঘাত লেগেই রয়েছে। মিথ্যা মামলাও দুই পক্ষেই একাধিক হয়েছে। এই প্রতিহিংসার শিকারই হয়েছে তুহিন। আনোয়ার মিয়ার ছেলে আতার মিয়া বলেন, গত বৃহস্পতিবার আমার বাবা আনোয়ার মিয়াসহ আমাদের লোকজন জেল খেটে বের হয়েছেন। শিশু তুহিনকে পরিকল্পিতভাবে তারা (মছব্বির মিয়ার লোকজন) হত্যা করে আমার চাচাতো ভাই সালাতুল ও মামা সোলেমানের নাম চাকুতে লিখে রেখেছে। আমাদের কেউ খুনের সঙ্গে জড়িত নই। কেউ পালাবেও না। এর আগে নিলুফার বেগমকে খুন করে তারা আমাদের নিঃস্ব করেছে। তাদের সঙ্গে আমাদের ২টি ঘর লুটের মামলা, ২টি জলমহালের মাছ লুটের মামলা এবং ৩টি ফৌজদারী মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। এখন আরেকটি নতুন সাজিয়েছে। আমরা ন্যায় বিচার চাই। মছব্বির মিয়ার চাচাতো ভাই তুহিনের চাচা সাবেক ইউপি সদস্য মুনসুর আলী বলেন, আগে আমাদের গৃহবধূ নিলুফা বেগম খুনের সময়ও তারা বলেছিল আমরা খুন করে, তাদের আসামি করেছি। পরে তদন্তে দোষী কারা বেরিয়ে এসেছে। এই ঘটনারও আমরা সুষ্ঠু তদন্ত চাই। দ্বন্দ্ব সংঘাত বড়দের মধ্যে আছে, ৫ বছরের শিশু কি দোষ করেছে। আমরা কাউকে দোষছি না। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা দোষী খুঁজে বের করবে। তারা আগেই কিভাবে বুঝে নিলো আমরা আমাদের সন্তান খুন করে তাদের কথা বললো। অপরাধী নিশ্চইয় বের হবে। তিনি জানান, আনোয়ার মিয়ার লোকজনের সঙ্গে খুনের মামলাসহ কয়েকটি ফৌজদারি মামলা রয়েছে তাদের। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সৌম্য চৌধুরী বলেন, এলাকার মানুষ স্তম্ভিত, বিমর্ষ, মানুষ রোমহর্ষক এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার চায়। এই বিষয়ে কেউ কারো পক্ষে-বিপক্ষে বলছে না। শিশুটি কারো পক্ষে-বিপক্ষে নেই। শিশু তুহিন হত্যার বিচার চায় সকলে। গত রোববার গভীর রাতে সাড়ে পাঁচ বছরের শিশু তুহিনকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। শিশুটির কান, লিঙ্গ কেটে নেয়া হয়েছে। জবাই করে হত্যা করে চাকু পেটের ভিতরে ঢুকিয়ে গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল। ছুড়ায় নাম লেখা রয়েছে সালাতুল ও সোলেমান। এই দুইজন তুহিনের বাবা আব্দুল বাছিরের গ্রাম্য প্রতিপক্ষ। এদিকে ঘটনার দিনই তুহিন হত্যায় পরিবারের লোকজন জড়িত থাকার সন্দেহে পরিবারের ৭ সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তুহিনের বাবা, চাচা, চাচাতো ভাই ৫ জনকে সুনামগঞ্জ আদালতে প্রেরণ করেছিলো। আদালতে ১৬৪ ধারা জবানবন্দিতে তুহিন হত্যার ঘটনা স্বীকার করে চাচা নাছির উদ্দিন ও চাচাতো ভাই শাহরিয়ার। তুহিনের বাবা আব্দুল বাছির সহ চাচা ২ জনকে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান জানান, তুহিনকে তার বাপ চাচা চাচাতো ভাই মিলে হত্যা করে ।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও