কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

বরিশাল শেবাচিমে বিপুল পরিমাণ ওষুধ ও চিকিৎসাসামগ্রী জব্দ

মানবজমিন প্রকাশিত: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ার্ডে মজুতকৃত বিপুলপরিমাণ ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল হাসপাতালের চতুর্থ তলায় মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডের স্টোরে রোগীদের না দিয়ে মজুতকৃত ওইসব সরকারি ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী উদ্ধার করে কর্তৃপক্ষ। উদ্ধারকাজে নেতৃত্ব দেন হাসপাতালের পরিচালক ডা. বাকির হোসেন স্বয়ং। যার মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন সাইজের সিরিঞ্জ, ক্যানোলা, নরমাল স্যালাইন, এন্টিবায়োটিক ইনজেকশন। তবে এর মধ্যে মজুতকৃত ইনজেকশন ও ক্যানোলার পরিমাণ বেশি বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল পরিচালক ডা. মো. বাকির হোসেন।হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ‘রোগীদের জন্য বরাদ্দকৃত ওষুধ এবং চিকিৎসাসামগ্রী সঠিকভাবে বণ্টন হচ্ছে কিনা সে বিষয়টি’র খোঁজ খবর নিতে সকালে মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ড পরিদর্শনে যান পরিচালক।এ সময় তিনি হাসপাতালের নার্সিং ডিউটি রুমের মধ্যে থাকা স্টোর পরিদর্শনকালে বিপুল পরিমাণ ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী মজুত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হন। পরে দীর্ঘ কয়েক ঘণ্টা তল্লাশি এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরে রোগীদের ওষুধ না দিয়ে তা মজুত রাখার বিষয়টি নিশ্চিত হন। পাশাপাশি ওইসব ওষুধ উদ্ধার করেন। সরকারি ওষুধ উদ্ধার অভিযান শেষে হাসপাতাল পরিচালক ডা. মো. বাকির হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রতি তিন মাস পর পর ওয়ার্ডগুলোর স্টোর ভিজিট করার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন ঝামেলার কারণে বিগত তিন মাস ধরে স্টোরগুলো ভিজিট করা সম্ভব হয়নি।তিনি বলেন, ‘গতকাল সকালে ফিমেল (মহিলা) মেডিসিন ওয়ার্ড ভিজিট করতে গিয়ে মজুতকৃত ওষুধ এবং চিকিৎসা সামগ্রী কিছু বেশি মনে হয়েছে। এগুলোর তালিকা করে আপাতত জব্দ করা হয়েছে। জব্দকৃত ওষুধ ইন্ডেন এর তালিকার সঙ্গে মিলিয়ে দেখতে হবে। সেখানে কোনো গরমিল থেকে থাকলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।পরিচালক বলেন, ‘যেসব ওষুধ জব্দ করা হয়েছে তার পরিমাণ এখনই বলা সম্ভব নয়, তবে জব্দকৃত চিকিৎসা সামগ্রীর মধ্যে ৫০ সিসি, ৫ সিসি ও ৩ সিসি সিরিঞ্জ এবং বিভিন্ন সাইজের ক্যানোলার সংখ্যাই বেশি। যেগুলো বাক্সবন্দি করে জব্দ রাখা হয়।তিনি বলেন, ‘মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডটিতে মোট ৪টি ইউনিট রয়েছে। এখানে ওষুধ এবং চিকিৎসা সামগ্রীর চাহিদাও বেশি। কিন্তু সেখানে এত পরিমাণ চিকিৎসা সামগ্রী মজুত থাকাটা চিন্তার বিষয়। তাছাড়া আমরা প্রতি দিনের ওষুধ প্রতিদিন ইন্ডেন্ট দিয়ে থাকি। সেখানে এক সপ্তাহের ওষুধ বা চিকিৎসা সামগ্রী এক সঙ্গে ইন্ডেন্ট দেয়ার সুযোগ নেই।পরিচালক বলেন, ‘এতগুলো ওষুধ সামগ্রী মজুত রাখার বিষয়টিতে ইনচার্জ ও নার্সদের গাফিলতি পাওয়া গেছে। এতে এর পেছনে তাদের কোনো খারাপ উদ্দেশ্য ছিল বা রয়েছে কিনা সেটা তদন্ত করে দেখা হবে। তদন্তে কোন ত্রুটি পেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।এদিকে মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডের প্রধান ইনচার্জ সিনিয়র স্টাফ নার্স হোসনেআরা খানম বলেন, ‘এখানে আমাদের কোনো অনিয়ম বা খারাপ উদ্দেশ্য নেই। ওয়ার্ডটিতে আমরা মোট ৫ জন ইনচার্জ। এখানে রোগী বেশি হওয়ায় ওষুধের চাহিদাও বেশি। প্রতিদিন গড়ে ৭শ’ সিরিঞ্জ এবং দুইশ’র মতো ক্যানোলার প্রয়োজন হয়।এ কারণে প্রতিদিন ইন্ডেন্ট (চাহিদাপত্র) না করে আমরা এক মাসের জন্য ওষুধ এবং চিকিৎসা সামগ্রী ইন্ডেন্ট করে রেখেছি। গত মাসের ইন্ডেন্ট করা ওষুধই এখনো রয়ে গেছে। ফলে চলতি মাসে নতুন করে আর চাহিদাপত্র দেইনি। তাছাড়া ওয়ার্ডটিতে কাজের চাপ এতটাই বেশি যে প্রতিদিনের ইন্ডেন্ট প্রতিদিন করা সম্ভব হয় না।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ‘মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডটিতে ইতিপূর্বে হোসনেআরা খানম ছাড়াও সিনিয়র স্টাফ নার্স আসমা আক্তার, পুতুল সরকার, সামসুন্নাহার সাজু ও রহিমা বেগম ইনচার্জ পৃথক চারটি ইউনিটের দায়িত্বে ছিলেন। ইনচার্জ হিসেবে দুই বছর সময় অতিক্রম হওয়ায় চলতি মাসের প্রথম দিকে ইউনিট ১-এর ইনচার্জ পুতুল সরকার, ২ এর ইনচার্জ সামসুন্নাহার সাজু ও ৩ এর ইনচার্জ রহিমা বেগমকে সরিয়ে পর্যায়ক্রমে সিনিয়র নার্স সোনিয়া আক্তার, বিথীকা এব অরিতাকে ইনচার্জ এর দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।পূর্বের তিনজন ইনচার্জ এর দায়িত্ব নতুনদের কাছে দায়িত্ব বুঝিয়ে না দিয়েই চলে যান। ফলে ওষুধ এবং চিকিৎসা সামগ্রী বিতরণে কোনো অনিয়ম থেকে থাকলে তার দায়ভার ওই পূর্বের তিন ইনচার্জকেও নিতে হবে বলেও দাবি সাধারণ নার্সদের।এ প্রসঙ্গে হাসপাতাল পরিচালক ডা. মো. বাকির হোসেন বলেন, ‘পুরো বিষয়টিই আমরা খতিয়ে দেখছি। এখানে কারোর কোনো অনিয়ম বা অন্য কোনো উদ্দেশ্য খুঁজে পেলে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।এর আগে ২০১৭ সালের ১৩ই মে হাসপাতালে চতুর্থ শ্রেণি স্টাফ কোয়ার্টারের পুকুরে ভাসমান এবং চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী শেফালী বেগমের বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ চোরাই ওষুধ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে ফিমেল (মহিলা) মেডিসিন ওয়ার্ড থেকে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা মূল্যের মজুতকৃত চোরাই ওষুধ জব্দ করা হয়। ওই ঘটনায় ওয়ার্ডটির ইনচার্জ বিলকিস বেগম, চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারী শেফালী বেগম ও তার ছেলে আল মামুন মুছাকে আটক হয়।এদের বিরুদ্ধে ওষুধ চুরির ঘটনায় মামলা চলমান ছাড়াও নার্স বিলকিস বেগম ও চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারী শেফালী বেগম সাময়িক বরখাস্ত অবস্থায় রয়েছেন। আর চুরির ঘটনার সঙ্গে যুক্ত আল মামুন মুছা’র নতুন করে হাসপাতালে সরকারিভাবে চাকরি পেয়েছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

প্রতিদিন ৩৫০০+ সংবাদ পড়ুন প্রিয়-তে

আরও