কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

ছবি সংগৃহীত

জাহাজবাড়ির জায়গায় বহুতল ভবন নির্মাণ বন্ধে জোরালো হচ্ছে সামাজিকমাধ্যমের স্বর

Nazmul Hasan Shanto
লেখক
প্রকাশিত: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫, ১৬:৫৭
আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫, ১৬:৫৭

(প্রিয়.কম) ধানমন্ডি লেকপাড় ঘেঁষে অবস্থিত কৌতুহল উদ্দীপক জাহাজবাড়ি ভাঙ্গার কাজ চলছে জোরেশোরে। সংবাদমাধ্যমগুলো জানাচ্ছে অচিরেই এই জায়গায় নির্মিত হবে বহুতল ভবন। তবে লেকের জমি দখল করে গড়ে ওঠা এই ভবনটির জায়গায় নতুন করে ভবন নির্মানের বিরুদ্ধে সরব হয়ে উঠেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক। সাংবাদিক হারুন উর রশিদ শুক্রবার রাতে এক স্টাটাসে লিখেছেন, '

...কারুর কি জানা আছে এটা লেক দখল করে একটি অবৈধ স্থাপনা? জানা না থাকলে ডেইলি স্টারের পুরনো কপি ঘেটে দেখতে পারেন। সেই রিপোর্টের পর এর আংশিক তখন ভাঙ্গা হয়। পুরোটা ভাঙ্গা হয়নি প্রয়াত শের এ খাজার প্রভাবের কারণে। আর তাঁর আধ্যাত্মিকতার নেপথ্যে কী ছিল? আমি চাই জাহাজ বাড়িটি ভাঙ্গা হোক। তারপর নতুন বহুতল স্থাপনা নির্মাণ প্রতিরোধ করতে হবে। প্রতিরোধ করতে হবে হাউজিং কোম্পানিকে। লেককে তার আসল রূপে ফিরিয়ে আনতে হবে। ধানমন্ডি লেকে নতুন কোন দখলদার চাই না।'
এই স্থানে বহুতল ভবণ নির্মানে মালিক প্রেয়াত শের এ খাজার উত্তরাধিকারীদের সঙ্গে চুক্তি করেছে শান্তা প্রপার্টিজ নামে একটি ডেভলপার কোম্পানি। সাহেদ আলম নামে এক সাংবাদিক ফেসবুকে লিখেছেন, '
কেউ কি আছেন এই বাড়িটি ভাঙ্গার বিরুদ্ধে কোর্টে পিটিশন দায়ের করবেন। আমরা এখানে বহুতল এপার্টমেন্ট জঙ্গল দেখতে চাই না। প্লিজ......।'
লতিফা রুনা নামের একজন লিখেছেন, '
দেশের এমন দৃষ্টিনন্দিত নিদর্শনগুলোকে রক্ষা করা এখন সময়ের দাবি।
' ফেসবুকে কে এম সাইফ উল্লাহ নামের একজন লিখেছেন, '
এই কি কথা??!! জাহাজ বাড়ি কার কি ক্ষতি করছে??! লেকের ক্ষতিটাইবা কিভাবে হলো বুঝলামনা!! এই বাড়িটি বরং লেকের সৌন্দর্য আর আকর্ষন বাড়িয়ে দিয়েছে শতগুন! এটি এখন এই লেকের তথা ধানমন্ডির শুধু নয়, ঢাকার অন্যতম ঐতিহ্যে রুপ নিয়েছে! আমি কম বুঝি! কেউ আমাকে বুঝায়ে বলেন, এটা ভাংলে লেকের কি উপকারটা হবে?
' মাহমুদুল হক নামের একজন লিখেছেন, '
জাহাজ বাড়ির দিকেই নজর?...হাতির ঝিলের অবৈধ বিজিএমইএ ভবনের দিকে একটু নজর দিন....'
2 প্রসঙ্গত, লাল ইটে খোদাই করা এই বাড়িটির অবস্থান ধানমন্ডি ৫/এ তে। বাড়ি নম্বর ৬০। বাড়িটির গেটে ইংরেজি অক্ষরে লেখা আছে চিশতীয়া প্যালেস। তবে অনেকের কাছেই এর পরিচিতি খিস্টিয়া প্যালেস। গঠন ও আকৃতি অনুসারে অনেকেই এই বাড়িটিকে একটি গির্জা মনে করে থাকেন। তাদের ধারণা এটা একটা গির্জা। একজন পীর এই বাড়ির মালিক। তার সঙ্গে বিভিন্ন খ্রিস্টান পাদ্রিরা প্রায়ই দেখা করতে আসতেন এই বাড়িতে। এলাকার বয়োজ্যেষ্ঠরা জানিয়েছেন, এই বাড়ির মালিকের নাম প্রয়াত শের এ খাজা। তিনি একজন আধ্যাত্মিক মানুষ ছিলেন। বাংলাদেশের সুফিবাদি মতবাদের একজন অন্যতম পুরুষ ছিলেন বলে তথ্য পাওয়া যায়।তিনি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির ভবিষ্যৎ বাণী করে আলোচিত হন। তার এসব ভবিষ্যৎ বাণীর অধিকাংশই সঠিক হয়েছে বলে প্রচলিত আছে। তবে তার সম্পর্কে তথ্য পাওয়া নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে। ধানমন্ডি এলাকাবাসীর ধারণা সাপেক্ষে বলা যায়, ১৯৯৩ সালে চিশতিয়া প্যালেসের নির্মাণ কাজ শুরু হয় এবং তা শেষ হয় ১৯৯৪ সালে। পরবর্তীতে ঢাকা সিটি কর্পোরেশন ধানমণ্ডি লেক সংলগ্ন বাড়িটির কিছু অংশ ভেঙ্গে পায়ে হাটা পথ তৈরি করে। এরপর বাড়ির মালিক জাহাজ আকৃতিতে বাড়িটির সীমানা প্রচীর তৈরি করেন। এরপরই সাধারণ মানুষের মুখে মুখে এর নাম হয়ে যায় জাহাজবাড়ি।