কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

মনিরুল ইসলাম রানা। ছবি: লেখক

‘স্বপ্নজাল’ যেমন দেখলাম

Monirul Islam Rana
লেখক
প্রকাশিত: ১১ এপ্রিল ২০১৮, ১৬:২৫
আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০১৮, ১৬:২৫

সুন্দরের ব্যাখ্যা কী করে করবেন, যদি সেই সুন্দর আপনার সুন্দরের উপলব্ধিকে ছাড়িয়ে যায়? ব্যাখ্যা করতে বিব্রতবোধ করতে পারেন। ‘স্বপ্নজাল’ চলচ্চিত্রটি দেখেছি এই লেখা শুরুর অন্তত কুড়ি ঘণ্টা আগে। এতক্ষণ সেই ব্যাখ্যা খুঁজছিলাম এবং যা পেলাম, ধরে নিন বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের সম্ভাবনাময় ১১ জন পরিচালকদের দিয়ে একটি ক্রিকেট টিম গঠন করা হলে। গিয়াস উদ্দিন সেলিমকে সেই টিমের ক্যাপ্টেন করা হলো। আর স্বপ্নজালকে বলব ‘ক্যাপ্টেন্স নক’।

সিনেমা দেখে এসে কে, কী লিখছে দেখতে গুগল করেছিলাম। সেখান থেকেই লেখার উৎপত্তি। আমার দেখা সময়ের চেয়ে আধুনিক বাংলা সিনেমাটি মুক্তির একদিন পর মাত্র ২০ থেকে ২২ জন দর্শকের সঙ্গে ফাঁকা হলে দেখেছি। এর চেয়ে বড় পরিতাপের বিষয় হচ্ছে, এমন একটি সিনেমা মাত্র ২০টি হল পেয়েছে। একই দিনে অন্য একটি সিনেমা ৭০টির বেশি হলে মুক্তি পেয়েছে। আশ্চর্যজনক ঘটনা বটে।

স্বপ্নজালের স্বপ্ন জালে আটকে যাচ্ছে কি? এ দেশের সিনেমা অঙ্গনের এটি আসল জালচিত্র। কে হল পাবে, কে পাবে না? দর্শক কী দেখবে আর কী দেখবে না- কারা নিয়ন্ত্রণ করছে?

এসব অবশ্যই নির্মাতাকে নিয়ন্ত্রণ করে না। তা করলে ‘সুপারহিটের’ পর যেখানে কেউ এক বছর অপেক্ষা করেতে চায় না, সেখানে পর্দায় ফিরতে নয়টি বছর অপেক্ষা? আশ্চর্য রকম ক্ষমতা আছে এ নির্মাতার। স্বপ্নজাল তারই প্রমাণ।

বিজ্ঞাপনের চমক, মনভোলানো চটক, মনোযোগ আকর্ষণের কায়দা বা চতুরি, প্রতারণাপূর্ণ কৌশল; এক কথায় যাকে গিমিক বলে এমন কিছুই নেই এই সিনেমায়। অপ্রাসঙ্গিক কোনো চর্চা নেই স্বপ্নজালে, গল্পের মতো করে গল্প এগিয়েছে। সেখানে পাবলিক কী খায়, হাউসফুল অথবা সুপারহিট ফর্মুলার লেশমাত্র নেই। স্বপ্নজাল এখানে স্বতন্ত্র, নির্মাতা ইউনিক।

সিনেমা দেখতে দেখতে আপনি কলেজের দিনে ফিরে যাবেন ল্যান্ডফোনে আড়িপাতা পরিবারের সকলের মুখ ভেসে উঠবে, যৌবনের প্রিয়মুখও মনে উঁকি দেবে, হুড়মুড়িয়ে কাঁদতে ইচ্ছা করলেও কাঁদবেন না। ইমোশনাল হবেন স্বপ্নজাল দেখে। কিন্তু ‘ইমোশনাল ফুল’ হবেন না। আইটাম সং না থাকায়, উসকানি না দেওয়ায় যদি দর্শক হলে না যায়, তবে সেই ব্যর্থতা আমাদের সামগ্রিক, নির্মাতার নয়।

স্বপ্নজাল অনবদ্য টিমওয়ার্ক। পরিমিতিকে যদি যথার্থ বলা যায়, তবে তাই। মুগ্ধ হবেন আপনি দৃশ্যায়ন দেখে। ভেবে নিতে পারেন গিয়াস উদ্দিন সেলিম একজন ম্যাজেশিয়ান। বাংলা ভাষায় তিনি এখন থেকে পৃথিবীজুড়ে ম্যাজিক দেখাবেন। স্বপ্নজাল তার আন্তর্জাতিক ম্যাজিক শো।

[প্রকাশিত লেখা ও মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব। প্রিয়.কম লেখকের মতাদর্শ ও লেখার প্রতি শ্রদ্ধাশীল। প্রকাশিত মতামতের সঙ্গে প্রিয়.কমের সম্পাদকীয় নীতির মিল না-ও থাকতে পারে।]