কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

প্রতীকী ছবি

সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে আইসিইউ, পিসিআর ল্যাবের কি অবস্থা?

প্রিয় ডেস্ক
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশিত: ১১ জুন ২০২১, ১৫:৩৫
আপডেট: ১১ জুন ২০২১, ১৫:৩৫

ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সামাজিক বিস্তার বা কমিউনিটি ট্রান্সমিশন ঘটায় রাজশাহী ও খুলনাসহ ভারত সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে করোনাভাইরাস সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে সেখানকার হাসপাতালগুলো।

খুলনা, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, কুষ্টিয়ার হাসপাতালে এখন ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি রোগী রয়েছে। প্রতিদিনই আসছে নতুন নতুন কোভিড রোগী। শয্যা সঙ্কটের কারণে কোথাও কোথাও রোগীদের রাখতে হচ্ছে মেঝেতে। রোগীর চাপে অক্সিজেনসহ চিকিৎসা সামগ্রীতেও টান পড়তে শুরু করেছে।

হাসপাতালগুলোতে পিসিআর ল্যাব ও আইসিইউ’র সর্বশেষ পরিস্থিতি

মোংলায় হাসপাতালে নেই কোনো আইসিইউ—মানবজমিন (১১ জুন ২০২১): মোংলাসহ বাগেরহাট জেলায় ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ হওয়ায় হু হু করে বেড়েই চলছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। হঠাৎ করে করোনা রোগী বৃদ্ধি পাওয়ায় সংক্রমণের ভয়ে হাসপাতালমুখো হচ্ছেন না সাধারণ রোগীরা। বাধ্য হয়ে হাসপাতালে গেলেও বেশিরভাগই প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরছেন।

মোংলায় দেশের দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সমুদ্র বন্দর হলেও হাসপাতালে নেই কোনো ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) সুবিধা। সেন্ট্রাল অক্সিজেন ব্যবস্থা না থাকায় হাসপাতালে অক্সিজেন সংকট দেখা দিয়েছে। এই অবস্থায় করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগকে। যেসব করোনা রোগীর অক্সিজেন প্রয়োজন দেখা দিচ্ছে তাদের পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে।

রাজশাহীতে আইসিইউ যেন সোনার হরিণ —কালের কণ্ঠ (১০ জুন ২০২১) : রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডগুলোতে রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলছে। একই সঙ্গে বাড়ছে আইসিইউ শয্যার চাহিদা। বর্তমানে আইসিইউতে ১৮টি শয্যার স্থলে রোগী আছে ১৭ জন। একটি শয্যা ভিআইপিদের জন্য ফাঁকা রাখা হয়েছে।

কিন্তু ১৭টি শয্যা পূরণ থাকায় সিরিয়ালে আছে আরো অন্তত অর্ধশত রোগী। শয্যা নতুন করে ফাঁকা না হওয়ায় এসব রোগীকে আইসিইউতে নেওয়া যাচ্ছে না। ফলে হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডের শয্যায় বা মেঝেতে পড়ে থেকে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে রোগীরা। তাদের শরীরে অক্সিজেন সংকট তীব্র। এ ছাড়া তারা উচ্চ রক্তচাপ, শ্বাসকষ্টসহ করোনার বিভিন্ন উপসর্গে ভুগছে। রোগীকে আইসিইউতে নিতে স্বজনরা ছোটাছুটি করছে হাসপাতালজুড়ে। যার যেমন ক্ষমতাবান লোক আছে, তাদের দিয়ে ততটা জোরালো অনুনয়-বিনয় করছে। কিন্তু শয্যা ফাঁকা না হওয়ায় আইসিইউ যেন রোগীর স্বজনদের কাছে সোনার হরিণে পরিণত হয়েছে।

মৌলভীবাজারে আইসিইউ-পিসিআর সঙ্কট—মানবজমিন (১০ জুন ২০২১): মৌলভীবাজার জেলায় হঠাৎ করে বৃদ্ধি পেয়েছে করোনা আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। এর পরও স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে চলছে মানুষ। সীমান্তবর্তী জেলা হওয়ায় করোনা সংক্রমের ঝুঁকির শীর্ষে মৌলভীবাজার। এছাড়া এখানে নেই করোনা পরীক্ষার পিসিআর ল্যাব।

আর আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য আইসিইউ সংকট রয়েছে। সরকারি হাসপাতালে ৪টি। আর প্রাইভেটে ৩টি। এই ৭টি আইসিইউ ভরসা জেলাবাসীর। করোনাভাইরাস সংক্রমণের শুরুর দিকে সংগৃহীত নমুনা পরীক্ষা নিয়ে নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হয় এ জেলার স্বাস্থ্য বিভাগকে। করোনা পরীক্ষার রিপোর্টের দীর্ঘ অপেক্ষায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় নমুনা প্রদানকারীকে। রিপোর্টের ধীরগতির কারণে আক্রান্ত ব্যক্তির অজান্তেই অন্যজনও হন সংক্রমিত।

চট্টগ্রামে রয়েছে আইসিইউ শয্যাসংকট—কালের কণ্ঠ (০৬ জুন ২০২১) : চট্টগ্রাম বিভাগের ১১ জেলার মধ্যে বাণিজ্যিক রাজধানী খ্যাত বন্দরনগরে করোনা শনাক্ত ও মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি। অন্য জেলা শহরগুলো থেকেও বিভাগীয় এই শহরের সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতালে করোনা রোগী ভর্তি হচ্ছে। রোগীর বেশির ভাগই বাসাবাড়িতে চিকিৎসা নেওয়ায় নগরের হাসপাতালগুলোতে অর্ধেকের বেশি সাধারণ শয্যা এখনো খালি। তবে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) শয্যাসংকট রয়েছে।

সাতক্ষীরা মেডিকেলে নেই ফ্লো নেজাল ক্যানুলা —দ্য ডেইলি স্টার (০৭ জুন ২০২১): সাতক্ষীরা সিভিল সার্জনের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১২০ শয্যার করোনা ইউনিট রয়েছে। পাশাপাশি রয়েছে আট শয্যার আইসিইউ ও আট শয্যার এইচডিইউ। এ ছাড়াও রয়েছে সেন্ট্রাল অক্সিজেন, প্রয়োজনীয় হাই-ফ্লো নেজাল ক্যানুলা।

একইভাবে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে রয়েছে ৪০ শয্যার করোনা ইউনিট। সেখানে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেম চালুর কাজ চলছে। ২৮টি বড় ও ৭৪টি ছোট অক্সিজেন সিলিন্ডার রয়েছে হাসপাতালটিতে। তবে সেখানে নেই কোনো হাই-ফ্লো নেজাল ক্যানুলা, নেই ভেন্টিলেশন ব্যবস্থা।

নাটোরে করোনা আক্রান্তদের জন্য নেই আইসিইউ —বাংলাদেশ প্রতিদিন (০৬ জুন ২০২১): নাটোর সরকারি বা বেসরকারি কোনো হাসপাতালেই করোনা রোগীদের চিকিৎসার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতাল নামেই আধুনিক। আধুনিক চিকিৎসার ব্যবস্থার কিছুই নেই এখানে। ৩১ আসনের করোনা ইউনিট থাকলেও সম্প্রতি রোগী বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। ফলে বাধ্য হয়ে আসন সংখ্যার অতিরিক্ত রোগীকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে।

এদিকে সরকারি বা বেসরকারি কোনো হাসপাতালেই কোভিড ডেডিকেটেড রোগীর জন্য নেই আইসিইউ বা সিসিইউ সেবা। এমনকি করোনা রোগীদের জন্য যা সবচেয়ে জরুরী সেই অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থাও নাজুক। হাইফ্লো অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা নেই কোনো হাসপাতালে। সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্ল্যান্ট নির্মাণের কথা বলা হলেও কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি এখন পর্যন্ত।

নাটোর সদর হাসপাতাল, সিংড়া উপজেলা হেল্থ কমপ্লেক্স এবং বড়াইগ্রাম উপজেলা হেলথ কমপ্লেক্সে সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাগানো হয়েছে বলে স্বাস্থ্যবিভাগ প্রচার করলেও তা আসলে সিলিন্ডারের মাধ্যমে অক্সিজেন সরবরাহ করা হচ্ছে। যার সর্বোচ্চ সক্ষমতা ১৫ লিটার। নাটোর সদর হাসপাতালে ১৬টি বড় সিলিন্ডারে (৬.৮কেজি) অক্সিজেন সরবরাহ চালু করা হয়েছে। যার মাধ্যমে বেডে অক্সিজেন সবরাহ করা যায়।

নওগাঁর ৮ উপজেলায় নেই অক্সিজেন সাপ্লাই—বাংলাদেশ প্রতিদিন (০৬ জুন ২০২১): নওগাঁ বর্তমানে করোনার হটস্পট হিসেবে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন করোনা রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় পরিস্থিতি আরো অবনতি হচ্ছে। উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ জেলা হওয়া সত্ত্বেও হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত চিকিৎসা সরঞ্জাম না থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ কোভিড রোগীদের চিকিৎসা ব্যবস্থা।

জনবল সংকটের সঙ্গে সঙ্গে নওগাঁর তিনটি উপজেলা ও সদর হাসপাতালে হাইফ্লো অক্সিজেন সাপ্লাই চালু থাকলেও বাকি ৮টি উপজেলায় অক্সিজেন সাপ্লাই নেই। আর সদর হাসপাতালে মাত্র দুটি আইসিইউ বেড আনা হলেও তা এখন পর্যন্ত কার্যকর নয়। হাসপাতালগুলোতে আইসিইউ শয্যা না থাকায় করোনায় আক্রান্ত জটিল রোগীদের রাজশাহী কিংবা বগুড়ার হাসপাতালে পাঠাতে হয়।

কিন্তু রোগী পরিবহনে ব্যবহৃত এখানকার অ্যাম্বুলেন্সগুলোয় আধুনিক সুযোগ-সুবিধা না থাকায় ওইসব জটিল রোগীকে রাজশাহী কিংবা বগুড়ার নিতে গিয়ে তাদের শারীরিক অবস্থা আরও জটিল হয়ে পড়ে। ফলে তাদের মৃত্যুহার বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়।