কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

পশ্চিমবঙ্গের নাটাই মমতার হাতেই

প্রিয় ডেস্ক
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশিত: ০২ মে ২০২১, ১৫:১৯
আপডেট: ০২ মে ২০২১, ১৫:১৯

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলে এখন পর্যন্ত এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল। নানান কারণে পুরো ভারতের নজর এবার পশ্চিমবঙ্গের দিকে। ২৯৪টি আসনের মধ্যে ভোট হয়েছে ২৯২ আসনে। সাত কোটি ৩২ লাখ ভোটারের মধ্যে ভোট দিয়েছেন প্রায় ৮১ শতাংশ। তাদের ভোটের ফলাফলে তৃণমূল এগিয়ে থাকায় ক্ষমতার নাটাই মমতার বন্দোপাধ্যায়ের হাতেই থাকছে।

গত এক মাস ধরে ৮ দফায় ভোটগ্রহণ চলেছে পশ্চিমবঙ্গে। রবিবার সকাল থেকে তার ফলাফল ঘোষণা শুরু হয়েছে। এনডিটিভি’র তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত পাওয়া ফলাফলে তৃণমূল কংগ্রেস ২১৫টি আসনে এগিয়ে রয়েছে। বিজেপি এগিয়ে আছে ৭৬ আসনে।

একই দিন আরও চার রাজ্যের ভোটের ফলাফলে আসাম ও কেন্দ্রশাসিত পদুচেরি ছাড়া পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু ও কেরালায় পিছিয়ে রয়েছে বিজেপি। বিধানসভার নির্বাচন সংক্রান্ত লাইভ তথ্য জেনে নিন আনন্দবাজার এবং এনডিটিভির ওয়েবসাইট থেকে।

দিদির ফেরার খবরে উচ্ছ্বাসের বাঁধ ভাঙছে কালীঘাটে, আবির, ঢাকঢোল নিয়ে উৎসবের আমেজ রাস্তায়—আনন্দবাজার (২ মে ২০২১): গণনা যত এগোচ্ছে, ততই তৃণমূলের জয়ের ছবি স্পষ্ট হচ্ছে। আর তাতেই উচ্ছ্বাসের বাঁধ ভেঙেছে কালীঘাটে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির সামনে ভিড় জমাতে শুরু করেছেন দলের কর্মী-সমর্থকরা। ভোটবাক্সে যে ফলাফল ধরা পড়েছে, তা নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করেননি তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। তবে তাতে বাঁধ মানছে না উচ্ছ্বাস। রাস্তার উপরই আবির খেলা শুরু হয়েছে। ঢাক ঢোল বাজিয়ে জয়ধ্বনি শোনা যাচ্ছে দলের নামে।

কোভিড পরিস্থিতিতে এই মুহূর্তে বিশেষ সতর্কতা জারি রয়েছে শহর কলকাতায়। তাই কালীঘাটে মমতার বাড়ির কাছাকাছি কাউকে ঘেঁষতে দেওয়া হচ্ছে না। সমর্থকদের ভিড় জমতে শুরু করলেও কালীঘাট রোডের সামনেই আটকে দেওয়া হয় সকলকে। সেখানেই ঢাকঢোল বাজিয়ে উৎসবে শামিল হন তৃমমূলের কর্মী ও সমর্থকরা। সমস্বরে ‘জয় বাংলা’, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ধ্বনি শোনা যায়।

নন্দীগ্রামে এগিয়ে গেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়—আনন্দবাজার (২ মে ২০২১): নন্দীগ্রামে এগিয়ে গেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোট গণনার শুরু থেকেই পিছিয়ে ছিলেন তিনি। এগিয়ে ছিলেন বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু ধীরে ধীরে ব্যবধান কমতে থাকে। ১১ রাউন্ডের শেষে ৩৩২৭ ভোটে এগিয়ে মমতা। নন্দীগ্রামের ফল ঘোষণায় দেরি হবে কারণ হিসেবে সার্ভার সমস্যার কথা জানিয়েছে কমিশন।

পশ্চিমবঙ্গে মোদি–অমিত ম্যাজিক টিকল না—প্রথম আলো (২ মে ২০২১): মোটামুটিভাবে অর্ধেক রাউন্ডের ভোট গণনা শেষ হয়েছে এবং সঙ্গে সঙ্গে একটি বিষয়ও পরিষ্কার হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের হিন্দু সম্প্রদায় শুধু হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপিকে ভোট দেয়নি। যে রাজ্যে মোটামুটি ৭৫ শতাংশ হিন্দুর ভোট, সেখানে হিন্দু বাঙালি যদি বিজেপিকে ঢেলে ভোট দিত, যেমনটা তারা দিয়েছিল ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে, তবে নিঃসন্দেহে বিজেপি এ পর্যায়ে অনেকটাই এগিয়ে থাকত।

২০১৪ সালের লোকসভা থেকে ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির হিন্দু ভোট ২১ শতাংশ থেকে বেড়ে ৫৭ শতাংশ হয়েছিল। এই মেরুকরণ ২০২১ সালে আরও তীব্র হবে বলে আশা করা গিয়েছিল। কিন্তু সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের রাজনীতি ব্যর্থ করে দিয়েছে বাঙালি হিন্দুরা। তবে তারা বিজেপিকে কিছু ভোট দিয়েছে বলেও মনে করেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক সঞ্জীব মুখার্জি। তিনি মনে করেন, বিজেপির মেরুকরণের রাজনীতি একেবারে ব্যর্থ হয়নি।

এই জয় আনন্দের নয়, বরং অনেক বেশি দায়িত্বের, বললেন ফিরহাদ—আনন্দবাজার (২ মে ২০২১): গণনা শেষ হতে সন্ধ্যা পেরিয়ে যেতে পারে। কিন্তু দুপুর ১২টাতেই ২০০ আসনে এগিয়ে দল। তাতেই জয় সম্পর্কে নিশ্চিত তৃণমূল। তবে দেশের করোনা যে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে, তাতে এটা উচ্ছ্বাস দেখানোর সময় নয় বলে জানিয়ে দিলেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।

তাঁর বক্তব্য, ‘‘এই জয়ে কোনও বিজয় মিছিল হবে না। এটা আনন্দ করার সময় নয়। রাজ্যে কত মানুষ মারা যাচ্ছেন। আমার নিজের অনেক আত্মীয় মারা গিয়েছেন। এমনকি যাঁরা আমাকে ভোট দিয়েছিলেন, তাঁদের অনেকেই নেই। এই অবস্থায় বিজয় মিছিল বা আনন্দ করার মতো মানসিক অবস্থা নেই আমার।’’

তিন রাজ্যে দৌড়ে পিছিয়ে বিজেপি—প্রথম আলো (২ মে ২০২১): আসাম রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত পদুচেরি ছাড়া বাকি তিন রাজ্যে পিছিয়ে রয়েছে ভারতের ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। আসামের পরে বিজেপি ভালো অবস্থানে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। তবে তামিলনাড়ু ও কেরালায় বিজেপি জয়ের দৌড়ে পিছিয়ে রয়েছে। খবর এনডিটিভির।

দুপুর পর্যন্ত পাওয়া খবরে, আসামে ১২৬টি আসনের মধ্যে বিজেপি এগিয়ে রয়েছে ৮১ আসনে। এরপর রয়েছে কংগ্রেসের অবস্থান।

পশ্চিমবঙ্গে ২৯৪ আসনের মধ্যে ২৯২টিতে আনুমানিক ফল ঘোষণা করেছে এনডিটিভি। এর মধ্যে ২০৪ আসনে এগিয়ে আছে তৃণমূল কংগ্রেস। আর বিজেপি এগিয়ে আছে ৮৫ আসনে।

তামিলনাড়ুতে বিজেপিবিরোধী দ্রাভিদা মুনেত্রা খাজাগমে (ডিএমকে) ২৩৪টি আসনের মধ্যে এগিয়ে আছে ১৩৩ আসনে। বিজেপি ও অল ইন্ডিয়া আন্না দ্রাভিদা মুনেত্রা খাজাগমের ক্ষমতাসীন জোট এআইডিএমকে এগিয়ে ১০০ আসনে।

কেরালায় সম্ভবত রেকর্ড গড়তে চলেছে বামফ্রন্ট নেতৃত্বাধীন লেফট ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (এলডিএফ)। সেখানে তারা ১৪০ আসনের মধ্যে ৮৯টিতে এগিয়ে আছে। কংগ্রেস এগিয়ে ৪৬ আসনে। আর বিজেপি মাত্র ৩ আসনে এগিয়ে রয়েছে।

এদিকে পদুচেরিতে ৩০ আসনের মধ্যে এনআরসি এগিয়ে আছে ১১ আসনে। এনআরসি জোটে রয়েছে বিজেপি।

গণনার প্রবণতায় মজবুত হচ্ছে শাসক দলের আত্মবিশ্বাস,গণনা মাঝপথে—আনন্দবাজার (২ মে ২০২১): আপাতত কিন্তু প্রবণতায় তৃণমূল এগোচ্ছে ভাল ভাবেই। ভোট শতাংশে তাদের ভাগ প্রায় পঞ্চাশ শতাংশে পৌঁছে যাচ্ছে। বিজেপি এখনও ৪০ শতাংশের নিচে। সেই অঙ্কে চূড়ান্ত মেরুকরণ হলেও তারা ১৮০ টি আসন পেরিয়ে যেতে পারে। সব আসনের ফল প্রকাশিত যদি বিপুল ভোট শতাংশ সত্ত্বেও তৃণমূল দু’শো না পেরোয়, তা হলে বলতে হবে মেরুকরণ চূড়ান্ত। অর্থাৎ, একেবারে আসন হিসেবে ভোট হয়েছে। তৃতীয় পক্ষের ভোট আরও তলানিতে। অর্থাৎ তৃণমূল যদি বিপুল ভোট শতাংশ পেয়ে জেতে, তা হলে বলতেই হবে যে সামনের দিনে সারা দেশে অনেক বেশি মাত্রায় বামপন্থী দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে তৃণমূল। সত্যিই এই নির্বাচনের ফলে হতাশ হবেন শহুরে শিক্ষিত বাম বুদ্ধিজীবীরা। বিশেষ করে এই মুহূর্তে বামপন্থীরা একটিও আসন পাবেন কি না, তা নিয়ে সন্দেহ হচ্ছে। সেটাই অবশ্য ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের চিত্র ছিল। তবে এখনও ভোট গোনা অনেক বাকি, ফলে আরও কিছুক্ষণের অপেক্ষা। একটা কথা মাথায় রাখতে হবে। এই মুহূর্তে তৃণমূলের বিপুল ভোট শতাংশের প্রবণতায় প্রশান্ত কিশোরের হিসেবও কিন্তু মিলে জেতে পারে। অর্থাৎ তৃণমূল দুশোর আশেপাশে, আর বিজেপি একশোর নিচে। আর জল যদি অন্যদিকে গড়ায় তাহলে দুপুরের দিকে আবার হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ইঙ্গিত মিলবে।