কুইক লিঙ্ক : মুজিব বর্ষ | করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব | প্রিয় স্টোর

মুকেশ আম্বানি। ছবি: সংগৃহীত

টানা ১১ বছর বেতন বাড়েনি মুকেশ আম্বানির!

আশরাফ ইসলাম
সহ-সম্পাদক
প্রকাশিত: ২১ জুলাই ২০১৯, ১৪:১৮
আপডেট: ২১ জুলাই ২০১৯, ১৪:১৮

(প্রিয়.কম) ভারতের শীর্ষ ধনী ব্যক্তি মুকেশ আম্বানি। কিন্তু টানা ১১ বছর তার কোনো বেতন বাড়েনি। রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর মুকেশ আম্বানির বেতন এখনো আটকে রয়েছে বার্ষিক ১৫ কোটিতে। ৩১ মার্চ ২০১৯-এ শেষ হয়েছে যে অর্থ বছর সেখানে প্রতিষ্ঠানের অন্য সব পরিচালকদের বেতন উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি হয়েছে। তবে এই বেতন না বাড়ানোর সিদ্ধান্তটা অবশ্য মুকেশ আম্বানি নিজেই নিয়েছেন।

১৯ জুলাই, শুক্রবারই রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের পক্ষ থেকে ত্রৈমাসিক রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে। সেখানে সব মিলিয়ে ১০,১০৪ কোটি রুপি লাভ হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

অর্থ বছর ২০১৮-১৯ এ মুকেশ আম্বানিকে ৪.৪৫ কোটি রুপি বিভিন্ন খাত অনুযায়ী দেওয়া হয়েছে। যা ২০১৭-১৮ সালে ৪.৪৯ কোটি রুপি ছিল। ২০০৯ সালে মুকেশ আম্বানি নিজেই এই পরিমাণ অংকের রুপি স্থির করেছিলেন।

ভারতের সবচেয়ে ধনী এই মানুষটি সেই ২০০৮-০৯ আর্থিক বর্ষ থেকে নিজের বেতন সব মিলিয়ে বার্ষিক ১৫ কোটিতে আটকে রেখেছেন। ২০১৮-১৯ সালে তার প্রাপ্য ছিল ৩৮.৭৫ কোটি রুপি। কিন্তু নিজেকে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরার জন্য প্রায় ২৪ কোটি রুপি কম নিয়েছেন তিনি। এই তথ্য জানা গেছে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের (আরআইএল) বার্ষিক রিপোর্ট থেকে।

আরআইএলের বার্ষিক রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘রিলায়েন্সের চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর মুকেশ আম্বানি সবার সামনে এক উদাহরণ তুলে ধরার জন্য গত ১১ বছর ধরে নিজের বেতন বাড়াননি।’

তবে মুকেশের বেতন না বাড়লেও সংস্থার অন্য দুই পরিচালক নিখিল ও হিতল মেসওয়ানির বেতন একধাক্কায় অনেকটাই বেড়েছে। ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে দু’জনেরই বার্ষিক বেতন বেড়ে হয়েছে ২০ কোটি ৫৭ লাখ রুপি। তার আগের বছর যা ছিল ১৯ কোটি ৯৯ লাখ। রিলায়েন্সর অধীনস্থ বিভিন্ন সংস্থার শীর্ষ কর্তাদের বেতনও ভালো পরিমাণেই বেড়েছে। 

স্ত্রী নিতা আম্বানির সঙ্গে মুকেশ আম্বানি। ছবি: সংগৃহীত

নন-এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টরদের মধ্যে অন্যতম মুকেশ আম্বানির স্ত্রী নিতা আম্বানিরও কমিশন বৃদ্ধি পেয়েছে। সিটিং ফি-ছাড়া ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে নিতা কমিশন হিসেবে পেয়েছেন ১.৬৫ কোটি রুপি, যা আগের বছরের থেকে ১৫ লাখ বেশি। সিটিও ফি-ও গত বছরের ৬ লাখ রুপি থেকে বেড়ে ৭ লাখ রুপি হয়েছে। গত বছর অক্টোবর মাসে নন-এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টরদের হিসেবে সংস্থার বোর্ডে আসা স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার প্রাক্তন চেয়ারম্যান অরুন্ধতী ভট্টাচার্যকে কমিশন হিসেবে ৭৫ লাখ রুপি দেওয়া হয়েছে।

ভারতের শীর্ষ ধনী মুকেশ আম্বানি দেশটির শীর্ষ দানশীলও। তিনি গত এক বছরে মানুষের কল্যাণে ৪৩৭ কোটি রুপি দান করে ভারতের শীর্ষ দানশীলের স্বীকৃতি পেয়েছেন। সম্প্রতি প্রকাশিত ‘হুরুন ইন্ডিয়ান ফিল্যানথ্রোপি লিস্ট ২০১৮’ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। ২০০ কোটি রুপি দান করে তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে আছেন পিরামল গ্রুপের চেয়ারম্যান আজে পিরামল। তিনি শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি উন্নয়নে দান করেছেন।

চীনভিত্তিক হুরুন রিসার্চ ইনস্টিটিউট এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এ তালিকায় সেসব ভারতীয় ধনীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যারা ১ অক্টোবর ২০১৭ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ পর্যন্ত এক বছরে ১০ কোটি রুপি বা তার বেশি অর্থ দান করেছেন।

এদিকে গত মার্চে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদনে দেখা যায়, ভারতের শীর্ষ ধনী মুকেশ আম্বানী ছয় ধাপ এগিয়ে বিশ্বের ১৩তম ধনীর তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন। সাম্প্রতিক এক জরিপ অনুযায়ী, বিশ্বের ১০০ জন ধনী ব্যক্তির মধ্যে ১৩তম অবস্থানে রয়েছে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান মুকেশ আম্বানি।

বিশ্বের শীর্ষ ১০০ জন ধনী ব্যক্তির তালিকা প্রকাশ করেছে ফোর্বস ম্যাগাজিন। আগের বছরের তুলনায় সম্পদ বেড়ে ছয় ধাপ এগিয়েছেন মুকেশ আম্বানি। ২০১৮ সালে তিনি ছিলেন বিশ্বের ১৯ তম ধনী ব্যক্তি। সে সময় তার মোট সম্পত্তির পরিমাণ ছিল ৪০ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু গত বছরের তুলনায় তার সম্পত্তির পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ বিলিয়ন ডলার।

বিশ্বের সেরা ১০০ জন ধনকুবেরের তালিকায় মুকেশ আম্বানি ছাড়াও ভারতীয়দের মধ্যে রয়েছেন আজিম প্রেমজি। তার অবস্থান ৩৬তম, এইচসিএলের কর্ণধার শিব নদরের স্থান ৮২তম ও আর্সেলর মিত্তলের চেয়ারম্যান লক্ষ্মী মিত্তল রয়েছেন ৯১তম স্থানে।

প্রিয় সংবাদ/আশরাফ/রুহুল