সালমান মুক্তাদির। ছবি: সংগৃহীত
সবাই ধর্ষণের বিরুদ্ধে হলে ধর্ষক কারা, প্রশ্ন সালমান মুক্তাদিরের
আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৯, ১৯:৩৩
(প্রিয়.কম) তরুণ ইউটিউবার সালমান মুক্তাদির একটি তিক্ত অভিজ্ঞতার ঘটনা জানিয়ে বলেছেন, দেশে ধর্ষণের ঘটনা ঘটবে, এটা অস্বাভাবিক নয়। কারণ দেশের মানুষই ধর্ষণকারীদের প্রশ্রয়দাতা।
১১ জুলাই, বৃহস্পতিবার সকালে সালমানের সঙ্গে ‘তিক্ত’ অভিজ্ঞতা ঘটে। বিষয়টি জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন তিনি।
পাঁচ মিনিট ১৯ সেকেণ্ডের ওই ভিডিওটি এরইমধ্যে আট হাজারেরও বেশি দর্শক দেখেছেন। এক হাজার ছয়শর বেশি মন্তব্য করেছেন। আর এক হাজারের বেশি মানুষ এ ভিডিওটি শেয়ার করেছেন।
সালমান জানান, সকাল আটটার দিকে দুই মেয়ে বান্ধবীকে নিয়ে গাড়িতে করে যাচ্ছিলেন নাস্তা খাওয়ার জন্য। যাওয়ার পথে তার এক বান্ধবীর দিকে তাদের গাড়ির পাশ দিয়ে যাওয়া স্কুল-কলেজের একটি বাস থেকে অশ্লীল-অশ্রাব্য সব বাক্য ছুড়েছিল।
সালমান বলেন, ‘আমরা সবাই যদি ধর্ষণের বিরুদ্ধে হই, সবার ফেসবুক পোস্ট ও স্ট্যাটাসের দিকে তাকাই, সবাই রেপকে এত ঘৃণা করে তাহলে রেপটা করতেছে কে? যার সঙ্গে কথা বলি, সবাইকেই দেখি ধর্ষণের বিরুদ্ধে। রেপের কোনো ঘটনা ঘটলে সবাই ধর্ষণের বিরুদ্ধে স্ট্যাটাস দিয়ে ফাটিয়ে দিচ্ছে। অনেকেই লিখছে, মানুষ কি আর মানুষ নাই। পুরুষ কী পশু হয়ে গেল নাকি?’
সালমান ভিডিওতে বলেন, ‘আমার কাছে বিষয়টা সাধারণ মনে হয়, বাংলাদেশের মতো একটি দেশে ধর্ষণ হবে, এটা খুবই স্বাভাবিক। বাংলাদেশে ধর্ষণ হওয়াটা খুবই সাধারণ। কেন বাংলাদেশে ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে? আমরা-আপনারা মিলে বাংলাদেশে ধর্ষকদেরকে প্রশ্রয় দিয়ে গেছি। আমি সবসময় বিতর্কিত বিষয় নিয়ে কথা বলি। এটাও তো একটা বিতর্কিত বিষয়। তাই এটা নিয়ে কথা বলা উচিত।’
‘ধর্ষণ করতেছে কারা? সবাই যদি ধর্ষকদের বিরুদ্ধে হয়? কারা করতেছে? উত্তর, আপনারা। আপনারা ধর্ষকদের প্রশ্রয় দিয়ে ধর্ষণের সংখ্যাটা বাড়াচ্ছেন। সাধারণ মানুষের কাছে ধর্ষণের বিষয়টা এখন সাধারণ হয়ে গেছে।’
সালমান তার বান্ধবীদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার কথা বলতে গিয়ে একপর্যায়ে বলেছেন, ‘এটা আমার হৃদয় ভেঙে দিয়েছে। এ ঘটনায় আমার রাগে-ক্ষোভে গা জ্বলছিল। আমি আজকে প্রমাণ পাইলাম কেন বাংলাদেশে এত ধর্ষণের ঘটনা ঘটতেছে।’
সালমান মুক্তাদির মজার মজার ভাবনা আর দারুণ সব ভিডিও তার চ্যানেলে পোস্ট করে আলোচনায় আসেন। যাতে তিনি সমাজের নানা ধরনের অসংগতি তুলে ধরতেন। কিন্তু একসময় তার বিরুদ্ধে অশ্লীল ভিডিও নির্মাণের অভিযোগ ওঠে।
চলতি বছরের শুরুর দিকে ইন্টারনেটে অশ্লীল ও আপত্তিকর কনটেন্ট আপলোডের অভিযোগে ইউটিউবার সালমান মুক্তাদিরকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাইবার ক্রাইম ইউনিট জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
এদিকে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) নিয়মিত মানবাধিকার প্রতিবেদনে শিশু ধর্ষণের যে হিসাব পাওয়া গেছে, তা রীতিমতো ভয়ংকর। আসকের হিসাবে ২০১৯ সালের প্রথম ছয় মাসে মোট ধর্ষণের ঘটনা ছিল ৬৩০টি।
এগুলোর অর্ধেকের মতো ঘটনায় ভুক্তভোগীর বয়স বলা আছে। দেখা যায়, তাদের সিংহভাগেরই বয়স ১৮ বছর বা তার নিচে। আর ধর্ষণ ও ধর্ষণচেষ্টার কারণে শিশু হত্যার ঘটনা ঘটেছে ২১টি। ধর্ষণের শিকার সবচেয়ে বেশি হয়েছে ৭ থেকে ১২ বছর বয়সী শিশুরা।
প্রিয় বিনোদন/রিমন